ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সিঙ্গাপুরে আরও ৪১ জন জিকা আক্রান্ত শনাক্ত ॥ বেশিরভাগই নির্মাণ শ্রমিক

প্রকাশিত: ১৯:৪৩, ২৯ আগস্ট ২০১৬

সিঙ্গাপুরে আরও ৪১ জন জিকা আক্রান্ত শনাক্ত ॥ বেশিরভাগই নির্মাণ শ্রমিক

অনলাইন ডেস্ক॥ সিঙ্গাপুরে নতুন করে ৪১ জন জিকা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন। তবে সিঙ্গাপুরে আগে শনাক্ত হওয়া জিকা ভাইরাস আক্রান্তের সঙ্গে নতুন আক্রান্তদের একটি বিষয়ে পার্থক্য রয়েছে। গত মে মাসে সিঙ্গাপুরে যে জিকা আক্রান্ত ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়েছিল তিনি আক্রান্ত হওয়ার আগে ব্রাজিল ভ্রমণ করে এসেছিলেন। তবে নতুন করে আক্রান্তরা সিঙ্গাপুরের ভেতরেই মশার কামড়ে জিকা ভাইরাস আক্রান্ত হয়েছেন। সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি খবরটি নিশ্চিত করেছে। আক্রান্তদের বেশিরভাগই বিদেশি নির্মাণ শ্রমিক বলেও নিশ্চিত করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃপক্ষ। উল্লেখ্য, এডিস প্রজাতির মশা থেকে জিকা ভাইরাস মানুষের দেহে ছড়িয়ে থাকে। জ্বর, জয়েন্ট পেইনসহ ছোটখাটো কিছু শারীরিক অসুস্থতা দেখা দেয় এ ভাইরাসের কারণে। আবার তা এক সপ্তাহের কম সময়ের মধ্যে সেরেও যায়। তবে বিপত্তি তৈরি হয় গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে। গত বছর ব্রাজিলে মাইক্রোসেফালি বা অস্বাভাবিক আকৃতির মাথা নিয়ে শত শত শিশুর জন্ম হয়। মশাবাহিত ভাইরাস জিকাকে এ ধরণের শিশু জন্মানোর কারণ বলে সে সময়ই সন্দেহ করা হচ্ছিল। এ নিয়ে বিশেষজ্ঞরা নানা গবেষণা শুরু করেন। গত এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি) এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে,জিকা ভাইরাস থেকে যে মাইক্রোসেফালি হতে পারে সে ব্যাপারে তারা নিশ্চিত। এর আগে যৌন মিলনের মাধ্যমে জিকা ভাইরাস ছড়ানোর কথাও নিশ্চিত করেছিলেন তারা। শেষ পর্যন্ত জিকা ভাইরাস কেবল লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে থেমে থাকেনি, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জিকা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হচ্ছে। গত মে মাসে প্রথমবারের মতো সিঙ্গাপুরে জিকা আক্রান্ত এক ব্যক্তি শনাক্ত হন। পরে জানা যায় ওই ব্যক্তি আক্রান্ত হওয়ার কিছুদিন আগে জিকাকবলিত ব্রাজিল সফর করেছেন। তবে রবিবার (২৮ আগস্ট) সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, নতুন করে ৪১ জন জিকা আক্রান্ত ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়েছে। তারা সিঙ্গাপুরের ভেতরেই মশার কামড় জিকা আক্রান্ত হয়েছেন। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে ৩৬ জন বিদেশি নির্মাণ শ্রমিক বলে জানানো হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘নতুন আক্রান্তরা শনাক্ত হওয়ার পর আক্রান্ত নির্মাণ শ্রমিকরা যেখানে কাজ করছিলেন সে কাজ আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। তাদের থাকার জায়গা সন্তোষজনক ছিল না এবং তা মশা জন্মানোর উপযোগী।’ আরও জিকা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেয়নি সিঙ্গাপুর কর্তৃপক্ষ। উল্লেখ্য, জিকা ভাইরাস সর্বপ্রথম ১৯৪৭ সালে উগান্ডায় রেসাস ম্যাকাক নামের বানরের দেহে পাওয়া যায়। পরবর্তীতে ১৯৫২ সালে উগান্ডা ও তানজানিয়াতে মানবদেহে প্রথমবারের মতো ভাইরাসটি শনাক্ত করা হয়। এডিস প্রজাতির মশা থেকে জিকা ভাইরাস মানুষের দেহে ছড়িয়ে থাকে। সর্বশেষ ২০১৫ সালে ব্রাজিলসহ ল্যাটিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশে ব্যাপক আকারে জিকা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। সূত্র: বিবিসি
×