স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ফ্লোরিডায় প্রথম টি২০তে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ১ রানে হারল ভারত। ক্রিকেট ‘টাই’ কিংবা ‘ক্লোজ ম্যাচ’ কম দেখেনি, কিন্তু এমন ম্যাচও তো আর আসেনি! ২৪৫ রান অতিক্রম করতে গিয়ে ২৪৪Ñএ থেম যাওয়া। শেষ বলে জয়ের জন্য প্রয়োজন ২ রান, কিন্তু আউট মহেন্দ্র সিং ধোনি! যে আফসোস গোপন করতে পারেননি ভারতকে দু-দুটি বিশ্বকাপ জেতানো সেনাপতি। ৪০ ওভারের ম্যাচে রান হয়েছে ৪৮৯, সেঞ্চুরি দুটি, ছক্কার ফুলঝুরি, আরও কত রেকর্ড। মার্কিন মুলুকে রাডারহিলের ছোট্ট স্টেডিয়ামটি শনিবার যেন ক্রিকেটীয় রোমাঞ্চের পসরা সাজিয়েছিল। হেরেছে ভারত, ডিজে-ডোয়াইন ব্রাভোর জাদুকরী ডেলিভারিতে জিতেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, আসলে জিতেছে তো ক্রিকেটই। দূর দর্শনের সৌজন্যে দুর্দান্ত এক টি২০ ম্যাচ দেখেছে ক্রিকেট বিশ্ব।
দুই ওপেনার জনসন চার্লস (৩৩ বলে ৭৯) ও এভিন লুইসের (৪৯ বলে ১০০) তা-বে ৬ উইকেটে ২৪৫ রানের পাহাড় গড়ে টি২০’র বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জবাবে রোহিত শর্মা (২৮ বলে ৬২), লোকেশ রাহুল (৫১ বলে ১১০) আর ধোনির (২৫ বলে ৪৩) ম্যারাথন ব্যাটিংয়ে জিততে জিততেও ভারতের এই নাটকীয় হারÑ ৪ উইকেটে ২৪৪ রানে থেমে যাওয়া! দুর্দান্ত এই ম্যাচে নতুন করে লেখা হয়েছে টি২০’র অনেক বিশ্ব রেকর্ড। ৪০ ওভারে ৪৮৯Ñ যেকোন ধরনের টি২০তে দু’দল মিলিয়ে সর্বোচ্চ রানের নতুন রেকর্ড এটিই। ২০১০ আইপিএলে চেন্নাই-রাজস্থান ম্যাচে রান উঠেছিল ৪৬৯। আন্তর্জাতিক টি২০তে ৪৬৭Ñ দক্ষিণ আফ্রিকা ‘বনাম’ ওয়েস্ট ইন্ডিজ, গত বছর জোহানেসবার্গে।
ফ্লোরিডায় দু’দলের ব্যাটসম্যানরা ছক্কা হাঁকিয়েছেন ৩২। এটিও নতুন রেকর্ড। আগেরটি ছিল ৩০ ছক্কার, ২০১৪ সালে আয়ারল্যান্ড-হল্যান্ড ম্যাচে। পরশু ২১ ছক্কা হয়েছে কেবল ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসেই, এটিও নতুন রেকর্ড। এতদিন যেটি ছিল হল্যান্ডের দখলে (১৯), ২০১৪Ñএর ওই ম্যাচে। আন্তর্জাতিক টি২০তে একই ম্যাচে দু’দলের দুই ব্যাটসম্যানের সেঞ্চুরিও এর আগে কখনও দেখেনি। ২৪৪Ñ পরে ব্যাট করে দলীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড এটিই। জিতলেও হতো নতুন রেকর্ড। টি২০তে সবচেয়ে বেশি রান অতিক্রম করে জয়ের রেকর্ডটা ওয়েস্ট ইন্ডিজের, ২৩৬/৬ (১৯.২ ওভারে), জোহানেসবার্গে, ২০১৫ সালে।
এত কাছে গিয়েও ইতিহাস গড়া জয় না পাওয়ার হতাশা ধোনির কণ্ঠে। ব্রাভোর শেষ বলে আউট হওয়া ভারত অধিনায়ক বলেন, ‘পুরো ম্যাচটাই ছিল অবিশ্বাস্য। ব্যাটিং ইউনিটের কাছ থেকে এর বেশি আশা করতে পারি না। শেষ বল পর্যন্ত অপেক্ষার ভাবনাটা ঠিকই ছিল। কিন্তু আমি সেটি কাজে লাগাতে পারিনি।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমরা বেশিরভাগ কাজ ঠিকঠাক করেছি। পার্টনারশিপের সময় আস্কিং রেট ছিল ১২’র কাছাকাছি। রাহুল পুরো সময় আউটস্ট্যান্ডিং খেলেছে। অন্যরাও। না হলে ২৫০ এর কাছাকাছি পৌঁছানো যেত না।’
আর ব্রাভোর ওই ডেলিভারি? যাতে ক্যাপ্টেন কুলের ক্যাচটা গিয়ে জমা পড়ল মারলন স্যামুয়েলসের হাতেÑ ‘জানতাম ধোনি ম্যাচটা বের করে নিতে পারে। আমার তাই লক্ষ্য ছিল ইয়র্কার অথবা সেøায়ার। মিড উইকেটে ও যাতে বড় শট খেলতে না পারে। বোলিং মার্কে দৌড় শুরুর পর ধোনিকে যখন সরে যেতে দেখলাম তখন সেøায়ার দেয়াটাই ঠিক করলাম, আর সেটাই কাজে লেগে গেল!’ বলেন ব্রাভো।
শীর্ষ সংবাদ: