ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

তামিমসহ নিহত ৩

প্রকাশিত: ০৬:০০, ২৮ আগস্ট ২০১৬

তামিমসহ নিহত ৩

আরাফাত মুন্না/মোঃ খলিলুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ থেকে ॥ নারায়ণগঞ্জ শহরের পাইকপাড়ায় জঙ্গী আস্তানায় অভিযানে ‘নতুন জেএমবি’র শীর্ষনেতা তামিম আহমেদ চৌধুরীসহ তিনজন নিহত হয়েছে। কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশী তামিম (৩০) গুলশান হামলার মূল পরিকল্পনাকারী বলে পুলিশ দাবি করে আসছে। তাকে ধরিয়ে দিতে ২০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা ছিল পুলিশের পক্ষ থেকে। ২০১৩ সালে কানাডা থেকে আসার পর তামিম বাংলাদেশেই ছিল বলে গোয়েন্দারা ধারণা করছিলেন। তার নির্দেশনায়ই গত ১ জুলাই জঙ্গীরা গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তরাঁয় হামলা চালায় বলে গোয়েন্দাদের দাবি। শনিবার ভোরে নারায়ণগঞ্জ শহরের পাইকপাড়ায় বড় কবরস্থানের পাশের একটি তিনতলা ভবন ঘিরে অভিযানে নামে ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের একটি দল। অপারেশন হিট স্ট্রং টোয়েন্টি সেভেন নামের ওই অভিযানে পরে র‌্যাব ও পুলিশের অন্যান্য ইউনিট এসে যোগ দেয়। সকাল সাড়ে নয়টা থেকে মূল অভিযান শুরু করে পুলিশের বিশেষায়িত বাহিনী সোয়াত। ১ ঘণ্টার এ অভিযানে তামিম চৌধুরীসহ তিন জঙ্গী নিহত হয়। নিহত তিন জনের একজন তামিম বলে পুলিশ প্রথমেই নিশ্চিত করলেও অন্য দুই জনের পরিচয় সম্পর্কে দিনের বেলায় কিছুই জানাতে পারেনি তারা। তবে রাতে পুলিশ জানায়, বাকি দুই জনের এক জন যশোরের ফজলে রাব্বি ও অন্যজন ধানম-ির তৌসিফ। গুলশান হামলার পর বিভিন্ন স্থানে জঙ্গী আস্তানার সন্ধানে অভিযান চালাচ্ছিল পুলিশ। এর মধ্যে ঢাকার কল্যাণপুরে একটি আস্তানায় অভিযানে ৯ জঙ্গী নিহত হয়। পাইকপাড়ায় অভিযানের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশ মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হক ঘটনাস্থলে আসেন। ঘটনাস্থল থেকে ৪টি তাজা গ্রেনেড, একটি একে ২২ রাইফেল এবং একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারের পর ৪টি গ্রেনেড ঘটনাস্থলেই নিষ্ক্রিয় করা হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাড়ির মালিক নুরুউদ্দিন দেওয়ান, তার স্ত্রী ও তিন ছেলেসহ ১০ জনকে আটক করেছে। দুপুরের পর সিআইডির ক্রাইমসিন ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ ও নিহত জঙ্গীদের আঙ্গুলের ছাপ ও ডিএনএর নমুনা সংগ্রহ করে। সন্ধায় নিহত তিন জঙ্গীর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হলেও, আজ রবিবার এই তিন জঙ্গীর ময়নাতদন্ত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে হবে বলে জানান নারায়ণগঞ্জের সিভিল সার্জন। এদিকে জঙ্গী আস্তানায় অভিযানকালে বিদ্যুত, গ্যাস ও ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেয়া হয়। ওই এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ছাড়া জনসাধারণের চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, ভোর থেকে শহরের পাইকপাড়া বড় কবরস্থান এলাকার জাপান ফেরত প্রবাসী নুরুউদ্দিন দেওয়ানের তিন তলা ভবনটি ঘিরে ফেলা হয়। ওই বাড়ির তিন তলার একটি ফ্ল্যাটে জঙ্গী আস্তানা গেড়েছেÑ এমন সংবাদের ভিত্তিতে ওই বাড়িটি ঘিরে ফেলে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটসহ পুলিশের অন্য টিমের সদস্যরা। আশপাশের বিভিন্ন ভবনের ছাদেও অবস্থান নেয় পুলিশ। বন্ধ করে দেয়া হয় আশপাশের দোকানপাট। পাইকপাড়া বড় কবরস্থান এলাকার জনসাধারণের যান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মূল অভিযান শুরু করে সোয়াত। পাল্টা জবাবে জঙ্গীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড ও গুলি ছুড়ে। শুরু হয় প্রচ- গোলাগুলি। গোলাগুলির বিকট শব্দে এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। অভিযান শেষে বেলা ১১টার দিকে পুলিশের মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হক ঘটনাস্থলে জানান, গোলাগুলিতে গুলশান ও শোলাকিয়া হামলার ঘটনার মাস্টারমাইন্ড তামিম চৌধুরীসহ ৩ জন নিহত হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ৪টি তাজা গ্রেনেড, একটি একে ২২ রাইফেল এবং একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে। পাইকপাড়ার এই অভিযানের বিষয়ে রাত সাড়ে ১২টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোন মামলা দায়ের করা হয়নি। তবে নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মোঃ ফারুক হোসেন জানান, মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে, রাতেই এক বা একাধিক মামলা দায়ের করা হতে পারে। ত্রিশাল থেকে গ্রেফতার জঙ্গীর তথ্যে অভিযান ॥ ময়মনসিংহের ত্রিশাল থেকে গ্রেফতারকৃত এক জেএমবি সদস্যের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে গুলশান হামলার মাস্টারমাইন্ড জঙ্গী তামিম আহমেদ চৌধুরীর সন্ধান পায় পুলিশ। এরপর পুলিশ নিশ্চিত হয়ে শনিবার সকালে নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ায় তামিম চৌধুরীর বাসায় অভিযান চালায়। কাউন্টার টেররিজম এ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) এক কর্মকর্তা এই তথ্য জানান। ওই কর্মকর্তা জানান, গত সপ্তাহে ময়মনসিংহের ত্রিশাল থেকে এক জেএমবি সদস্যকে গ্রেফতার করে ময়মনসিংহ ডিবি পুলিশ। এরপর সিটিটিসি’র কর্মকর্তারা জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ায় অভিযান চালানো হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই কর্মকর্তা আরও বলেন, গ্রেফতার হওয়া জেএমবি সদস্যের তথ্য যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। নিজস্ব গোয়েন্দা ব্যবহার করা হয়েছে। তামিম চৌধুরীর ছবি বাড়িওয়ালাকে দেখানো হয়। তারপর নিশ্চিত হয়ে ওই অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ব্যবহার হয় স্নাইপার রাইফেল ॥ অভিযান পরিচালনার সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারা জানান, গোয়েন্দা তথ্য পাওয়ার পর নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ার কবরস্থানের তিনতলা বাড়িটিতে ‘অপারেশন হিট স্ট্রং টোয়েন্টি সেভেন’ পরিচালনার ছক তৈরি করা হয়। জঙ্গীরা যেন পালাতে না পারে, সেজন্য আগে থেকেই ঘটনাস্থলের চারপাশ ঘিরে রাখেন কাউন্টার টেররিজম ইউনিটসহ পুলিশের অন্য টিমের সদস্যরা। আইজিপির নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের আত্মসমর্পণের সুযোগ দেয়া হলেও তারা সেই সুযোগ নেয়নি। উপরন্তু তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে একের পর এক গ্রেনেড ছুড়ে মারে। একই সঙ্গে একে ২২ রাইফেল দিয়ে গুলি করতে থাকে। এরপর পুলিশও পরিকল্পনা অনুযায়ী অভিযান শুরু করে। অভিযানে থাকা সোয়াত টিমের সদস্যরা অন্যান্য অস্ত্রের সঙ্গে স্নাইপার রাইফেলও ব্যবহার করেন। অভিযানে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, স্নাইপার রাইফেল দিয়ে টেলিস্কোপের সাহায্যে নির্ভুলভাবে নির্দিষ্ট দূরত্ব থেকে টার্গেটকৃত ব্যক্তিকে গুলি করা সম্ভব হয়। এই রাইফেল দিয়ে দ্রুত শক্তিশালী বুলেট ছোড়া যায়। ছবিও তোলা যায় স্নাইপার রাইফেলের টেলিস্কোপ দিয়ে। গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তরাঁয়ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা স্নাইপার রাইফেল ব্যবহার করেছিলেন। যে কারণে নারী ও শিশুসহ বেশ কয়েকজনকে জীবিত ও অক্ষত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছিল। কয়েক রকমের স্নাইপার রাইফেল রয়েছে। তবে ঠিক কোন ধরনের স্নাইপার রাইফেল পাইকপাড়ায় ব্যবহার করা হয়েছে, সেটা জানাননি সংশ্লিষ্টরা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য ॥ অভিযানের পর দুপুরে নারায়ণগঞ্জে এসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বেশ কিছুদিন যাবত তামিম চৌধুরীকে খুঁজছিল। নারায়ণগঞ্জে তার অবস্থান চিহ্নিত করার পর আইনশৃৃঙ্খলা বাহিনী তাকে ঘেরাও করে আত্মসমর্পণ করতে বলে। পরবর্তীতে সোয়াত টিম আসে এবং সকালে অভিযান শুরু হয়। তিনি বলেন, জঙ্গীরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর গ্রেনেড ও গুলি চালায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে তিন জঙ্গী নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে তামিম চৌধুরী, যে গুলশান হামলার মাস্টারমাইন্ড। আমরা নিশ্চিত সেই তামিম চৌধুরী নিহতদের মধ্যে রয়েছে। আমরা মনে করি তামিম চৌধুরী অধ্যায় এখানেই শেষ। বাকি জঙ্গী পলাতক রয়েছে, তাদেরও আমরা শীঘ্রই ধরতে পারব বলে আশা করি। আইজিপির বক্তব্য ॥ ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে পুলিশ মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হক সাংবাদিকদের বলেন, গুলশান ও শোলাকিয়া হত্যাকা-ের ঘটনার মাস্টারমাইন্ড তামিম চৌধুরী; সে নব্য জেএমবির নেতা। পুলিশ সদর দফতর তাকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। পুলিশ সদর দফতরের ইন্টেলিজেন্সের কাছে খবর আছে নারায়ণগঞ্জে অবস্থান করছে তামিম চৌধুরী। ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিট ও সোয়াত টিম অভিযান শুরু করে। আইজিপি বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ ও র‌্যাব তাদের সহযোগিতা করে। মূল অভিযান চলে এক ঘণ্টা। অভিযান শেষে ওই ফ্ল্যাটে ঢুকে দেখা যায়, তিন জঙ্গী নিহত হয়েছে। নিহতদের একজনের চেহারার সঙ্গে পুলিশের কাছে থাকা তামিম চৌধুরীর ছবির হুবহু মিল রয়েছে। নিহত এক জঙ্গীর শরীরে একে ২২ রাইফেল ঝোলানো অবস্থায় ছিল। আরেক জঙ্গীর সঙ্গে একটি পিস্তল ছিল এবং ফ্ল্যাটের ভেতর ২-৩টি তাজা গ্রেনেড পড়া ছিল। আইজিপি আরও বলেন, পুলিশ জঙ্গীদের আত্মসমর্পণের সুযোগ দিয়েছিল। কিন্তু তারা পুলিশের আহ্বানে সাড়া না দিয়ে পুলিশের ওপর ৪-৫টি গ্রেনেড নিক্ষেপ করে এবং একে ২২ রাইফেলের গুলি ছুড়ে। পুলিশ জঙ্গীদের আস্তানার আশপাশের ভবন থেকে স্নাইপার রাইফেল দিয়ে গুলি ছুড়ে। এ অভিযানের নাম আমরা দিয়েছি ‘হিট স্ট্রং টোয়েন্টি সেভেন’। কোন জঙ্গী পালিয়ে গেছে কিনা, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা আগে নিশ্চিত হয়েছি, সেখানে কোন নারী ও শিশু আছে কিনা? নারী ও শিশু নেইÑ এটা নিশ্চিত হওয়ার পর অভিযান চালানো হয়। গুলশান, কল্যাণপুরের ঘটনার পর ওষুধ ব্যবসায়ী পরিচয়ে তারা বাড়িভাড়া নেয়। অভিযানে কোন আহত নেই। তিনজনই নিহত বলে জানান আইজিপি। ময়না তদন্ত হবে ঢামেকে ॥ পাইকপাড়া বড় কবরস্থান এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ অভিযানে নিহত ৩ জঙ্গীর লাশের ময়নাতদন্ত করা হবে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। নারায়ণগঞ্জের সিভিল সার্জন আশুতোষ দাস শনিবার রাত ১০টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, তামিমসহ নিহত তিন জঙ্গীর লাশের ময়নাতদন্ত করার জন্য প্রথমে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে আনা হলেও পরে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হয়। সিভিল সার্জন আশুতোষ দাস আরো জানান, নিহত ৩ জঙ্গীর লাশের ময়নাতদন্তের জন্য ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করা হলেও ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ ও সংরক্ষণাগার না থাকায় এখানে করা সম্ভব হচ্ছে না। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। যেহেতু জঙ্গীরা আলোচিত এবং এখানে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জড়িত। আর আমাদের এখানে আধুনিক যন্ত্রপাতির বিষয়টি জড়িত। তাই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর আগে সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে তাদের লাশ পাইকপাড়ার ওই বাড়ি থেকে বের করে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। এদিকে, তামিমসহ নিহত তিন জঙ্গীর লাশ শনিবার রাত পৌনে ১১টায় পুলিশি পাহারায় একটি লাশবাহী এ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এসে পৌঁছায়। আজ রবিবার তাদের ময়নাতদন্ত হবে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ বলেন, নিহত তিন জঙ্গীর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য তিন সদসস্যের একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। ওই বোর্ডের প্রধান আমি নিজে। আমরা প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিয়েছি। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ জন আটক ॥ নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ার একটি জঙ্গী আস্তানায় অপারেশন হিট স্ট্রং টোয়েন্টি সেভেন অভিযানে তামিম চৌধুরীসহ তিন জঙ্গী নিহত হওয়ার পর ওই আস্তানার তথ্য সংগ্রহে নামে পুলিশ। এরই মধ্যে বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়াসহ ওই বাড়ির ১০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) ফারুক হোসেন। শনিবার বিকেলে তাদের আটক করে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয় বলে তিনি জানান। ফারুক হোসেন জানিয়েছেন, আটককৃতদের মধ্যে বাড়ির মালিক নুরুউদ্দীন দেওয়ানসহ তার পরিবারের ৫ সদস্য এবং বাকিরা ওই বাড়ির ভাড়াটিয়া। তিনি জানান, তাদের জিজ্ঞাসাবাদে কোন তথ্য পাওয়া গেলে পরে তা গণমাধ্যমকে জানানো হবে। রাতে পরিচয় মিলেছে আরও দুই জঙ্গীর ॥ নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ায় জঙ্গী আস্তানায় পুলিশি অভিযানে জেএমবি নেতা তামিম আহমেদ চৌধুরীর সঙ্গে নিহত আরেকজনের পরিচয় জানা গেছে। নিহত ফজলে রাব্বি যশোরের একটি পলিটেকনিকের ছাত্র বলে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন। তিনি শনিবার রাতে সাংবাদিকদের বলেন, রাব্বীর কাছে একটি জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে, যা থেকে তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। যশোরের একটি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষের ছেলে রাব্বি গত এপ্রিলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। নিহত অপরজন ঢাকার ধানম-ির তৌসিফ বলে তথ্য এসেছে জানিয়ে মনিরুল বলেন, তার পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে।
×