ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চবির সীমানা প্রাচীর নির্মাণে বাধা দিতে তৎপর ষড়যন্ত্রকারীরা

প্রকাশিত: ০৪:৪১, ২৮ আগস্ট ২০১৬

চবির সীমানা প্রাচীর নির্মাণে বাধা দিতে তৎপর ষড়যন্ত্রকারীরা

মোয়াজ্জেমুল হক, চট্টগ্রাম অফিস ॥ অব্যাহতভাবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপুল পরিমাণ ভূমি বেহাত হয়ে যাওয়ার পর প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করতে গিয়ে চবি কর্তৃপক্ষ নানা ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছে। এ ষড়যন্ত্রের সঙ্গে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ধান্ধাবাজ কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সীমানা প্রাচীন সংলগ্ন জমির লোকজন। এ চক্রটি অতীতে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের জমির জাল দলিল বানিয়ে বেহাত করে তা বহিরাগতদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। যা নিয়ে আদালতে বিভিন্ন মামলা মোকদ্দমা রয়েছে। এমতাবস্থায় বর্তমান ভিসি ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী ক্ষমতা গ্রহণ করার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকানাধীন জমি বেহাত রোধকল্পে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করেন। প্রতিষ্ঠার প্রায় পঞ্চাশ বছর পর এ উদ্যোগ সকলের কাছে প্রশংসনীয় হলেও ধান্ধাবাজদের কাছে এটা বজ্রাঘাত সমতুল্য হয়েছে। প্রসঙ্গত, ১৯৬৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকালে এর মালিকানায় ছিল ১ হাজার ৭৫৩ একর জমি। গত পঞ্চাশ বছরে বিভিন্নভাবে বেহাত হয়ে গেছে প্রায় ৫শ একর। যার বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ১২শ কোটি টাকা। এ বেহাত বাণিজ্যের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট শাখার কর্মকর্তা কর্মচারীরাও জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। এদের মধ্যে কয়েকজনকে সাময়িক বরখাস্তও করা হয়েছে। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রায় দশ কোটি টাকা ব্যয়ে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজ শুরু করে। এতে শুরু হয়ে যায় ধান্ধাবাজদের নানাভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির তৎপরতা। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, সরকারী সম্পদ রক্ষার্থে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন সাপেক্ষে এ সীমানা প্রাচীরের কাজ শুরু হয়েছে। সীমানা প্রাচীর নির্মাণ হলেও স্থানীয় বাসিন্দাদের চলাচলের পথ কখনও রুদ্ধ হবে না। অনুসন্ধানে জানা গেছে, বহিরাগতদের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কিছু দুর্নীতিবাজ ও লোভী কর্মকর্তা-কর্মচারী এমনকি শিক্ষকদের কেউ কেউ এ অপকর্মে জড়িত। একজন সাবেক উপাচার্যের অধীনেও বেদখল হয়েছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি। এ ব্যাপারে ভিসি ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী জনকণ্ঠকে জানান, বি,এস জরিপ অনুযায়ী জেলা প্রশাসন যে সীমানা নির্ধারণ করে দিয়েছে সে অনুযায়ী সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হচ্ছে। আর যেসব জমি নিয়ে ভুল বি,এস রয়েছে তা সংশোধনের জন্য মামলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের চীফ ইঞ্জিনিয়ার মোঃ আবু সাঈদ হোসেন জানান, দশ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় ১৩শ কিলোমিটার দীর্ঘ ৬ ফুট উচ্চতার এ সীমানা প্রাচীর নির্মাণ হবে। এটা কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। এটা রাষ্ট্রীয় তথা জনগণের সম্পত্তি। এ সম্পত্তি কোন অবস্থাতেই বেহাত হতে দেয়া যায় না। বিগত পাঁচ দশকে এ ব্যাপারে চরম অবহেলা থাকায় জমি বেহাতকারীরা সুযোগ পেয়েছে। আর এ সুযোগের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট শাখাসহ সাধারণ বিভাগের কর্মকর্তা কর্মাচরী এবং কোন কোন শিক্ষকও বটে।
×