ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

‘পোস্টমাস্টার’ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের প্রিমিয়ার

প্রকাশিত: ০৪:২১, ২৮ আগস্ট ২০১৬

‘পোস্টমাস্টার’ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের প্রিমিয়ার

সংস্কৃতি ডেস্ক ॥ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোটগল্প পোস্টমাস্টার অবলম্বনে সম্প্রতি নির্মিত হয়েছে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘পোস্টমাস্টার’। শনিবার বগুড়া জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে সন্ধ্যায় ‘পোস্টমাস্টার’ চলচ্চিত্রের প্রিমিয়ার শো অনুষ্ঠিত হয়। সাহিত্যনির্ভর গল্পসমৃদ্ধ ‘পোস্টমাস্টার’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন- রিয়া, বিধান কৃষ্ণ রায়, সাদেকুর রহমান সুজন, মন্দ্রিতা, খন্দকার এনামুল হক, হিয়া প্রমুখ। প্রিমিয়ার শোতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আনওয়ার হোসেনসহ আরও অনেকে। তারুণ্যের রবীন্দ্রনাথ স্লোগানে ‘পোস্টমাস্টার’ চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেছেন তরুণ নির্মাতা সুপিন বর্মন। পোস্টমাস্টার ছোটগল্পটিকে ঠিক রেখে এর চিত্রনাট্য, সংলাপ ও চরিত্র সংযোজনের কাজটিও করেছেন পরিচালক নিজেই। বগুড়া জেলার বিভিন্ন লোকেশনে এটি চিত্রায়িত হয়। পরিচালক সূত্রে জানা যায় আগামী ২৫ বৈশাখ চলচ্চিত্রটি একটি চ্যানেলে প্রচার হবে। এরই মধ্যে চলচ্চিত্রটি দেশে এবং দেশের বাইরে বিভিন্ন উৎসবে জমা পড়েছে। তরুণ পোস্টমাস্টার ও কাজের মেয়ে রতনের একটি আবেগী গল্প নিয়েই এগিয়ে যায় ‘পোস্টমাস্টার’ চলচ্চিত্রের কাহিনী। চলচ্চিত্রের গল্পে দেখা যায় কলকাতার শহুরে পরিবেশে বেড়ে ওঠা তরুণ পোস্টমাস্টার দায়িত্ব নিয়ে চলে আসে উলিপুর নামক এক প্রত্যন্ত গ্রামের পোস্ট অফিসে। অফিসের পিয়ন রমাকান্তের আন্তরিকতা আর কাজের মেয়ে অনাথ বালিকা রতনের মায়াভরা মুখের অভিব্যক্তি মাস্টারকে এ নির্জীব পরিবেশে বসবাস করার সাহস যোগায়। রতনের ভাষা দক্ষতা আর চঞ্চলতায় ধীরে ধীরে রতন আর পোস্টমাস্টারের ভিতরে গড়ে ওঠে ভাব। মাস্টার ফিরে পায় তার শৈশবকে। কাজের ফাঁকে ফাঁকে দু’জন চষে বেড়ায় গ্রামের সবুজ মেঠোপথ আর শ্যামল মাঠ। নতুন বাবুর ¯েœহাশীষ পেয়ে রতন ভুলে যায় তার দুঃখকে। সজীবতা ফিরে পায় জীবনে। নতুন বাবু রতনকে পড়াতে শেখায়। রতন আনন্দে সে শিক্ষা গ্রহণ করে। একদিন বৃষ্টির জলে ভিজে নতুন বাবুর গায়ে জ্বর আসে। রতন রাত জেগে মাথায় জলপট্টি দিয়ে মাতৃত্বের ¯েœহে সুস্থ করে তোলে নতুন বাবুকে। নতুন বাবু সিদ্ধান্ত নেয় বাবা মা পরিবার ছেড়ে এ গ্রামে থাকা তাঁর পক্ষে আর সম্ভব নয় তাই বদলির জন্য আবেদন করে সে। বদলির আবেদন মঞ্জুর হয়। রতন জানতে পারে নতুন বাবু আর থাকবে না। কোমল মনে আবারও কষ্টের ছেদ পড়ে যায় রতনের। রতনের সুখের অতীত স্মৃতি রাতটাকে করে দেয় আরও অন্ধকার আরও ভয়ংকর। পরের দিন সকালে নতুন বাবু সবকিছু গুছিয়ে নিয়ে চলে যেতে থাকে নিজ শহরে। বিদায় ক্ষণে নতুন বাবুর চোখ ছলছল করে। রতনের মায়াবী নিষ্পাপ চাহনি দাগ কাটে মনে। তবুও চলে যেতে হয় এটাই নিয়ম। রতন নতুন বাবুর চলে যাওয়ার পথে নির্বাক তাকিয়ে রয়, কষ্টের সে চাহনি শূন্য আকাশকে করে অর্থময়। রতন আর নতুন বাবুর আবেগী মানবিক সহজ সরল ভালবাসার এক সাহসী অভিব্যক্তি ‘পোস্টমাস্টার’ চলচ্চিত্র যা দর্শকের মনে অন্যভাবে দাগ কাটে।
×