ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

নওগাঁয় প্রেমের বলি স্কুলছাত্র ॥ ঘাতক নানাসহ আটক ৪

প্রকাশিত: ০৪:১৮, ২৮ আগস্ট ২০১৬

নওগাঁয় প্রেমের বলি স্কুলছাত্র ॥ ঘাতক নানাসহ আটক ৪

নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ, ২৭ আগস্ট ॥ বদলগাছী উপজেলার বালুভরা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর ছাত্র আহসান হাবিব বিদ্যুত প্রতিবেশী খালা ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী ফাতেমার সঙ্গে প্রেম করতে গিয়ে নির্মমভাবে প্রাণ হারাল। রাতে ফাঁকা বাড়িতে খালার ঘরে আপত্তিকর অবস্থায় পেয়ে খালার বাবা প্রতিবেশী নানা আলম তার লোকজন নিয়ে বিদ্যুতকে জবাই করে হত্যা করেছে। হত্যার পর লাশ বাড়ির অদূরে একটি ধানক্ষেতে ফেলে রাখে। ঘটনার পর আটক আলম পুলিশের কাছে এ লোমহর্ষক ঘটনার বর্ণনা দিয়েছে। ঘটনার সত্যতা সে আদালতে স্বীকার করতে চাইলে শনিবার তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে থানার অফিসার ইনচার্জ জালাল উদ্দিন নিশ্চিত করেছেন। প্রেমিকার পিতাসহ খুনের সঙ্গে জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে নওগাঁর পুলিশ সুপার মোঃ মোজাম্মেল হক বিপিএম, পিপিএম এক সংবাদ সম্মেলনে লোমহর্ষক এ হত্যাকা-ের বিবরণ দেন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কোলা ইউনিয়নের কয়াভবানীপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেনের পুত্র আহসান হাবিব বিদ্যুত গত ৩-৪ বছর ধরে চকাবির গ্রামে তার নানা বাবুল আক্তারের বাড়ি থেকে পড়ালেখা করে আসছে। এর ফাঁকে বিদ্যুতের নানার প্রতিবেশী ভাই আলমের একমাত্র কন্যা ফাতেমার সঙ্গে বিদ্যুতের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ফাতেমা নবম শ্রেণীর ছাত্রী এবং সম্পর্কে বিদ্যুতের খালা। এভাবে তরুণ-তরুণী খালা-ভাগ্নের প্রেমের গোপন সম্পর্ক গভীরভাবে চলতে থাকে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর ফাতেমার নানা মারা গেলে তার মা নানার বাড়িতে যায় এবং তার বাবা বাড়ির বাইরে ছিল। বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগ নেয় ফাতেমা। রাত আটটার দিকে ফাতেমা বিদ্যুতের কাছে ফোন দিয়ে প্রায় ১৫ মিনিটের মতো কথা বলে। পুনরায় রাত সাড়ে আটটায় ফোন করে বিদ্যুতকে তার বাসায় ডেকে নেয়। তারা নিরিবিলি সময় কাটানোর জন্য একসঙ্গে মিলিত হয় ফাতেমার ঘরে। রাত ৯টার দিকে ফাতেমার বাবা বাড়িতে এসে বুঝতে পারে মেয়ে তার প্রেমিককে নিয়ে ঘরে অবস্থান করছে। এ সময় জোরপূর্বক মেয়ে ফাতেমাকে তার নানার বাড়িতে রেখে আলম তার নিকটতম সহযোগী একই গ্রামের বুলু, তছলিম ও আমজাদকে সঙ্গে নিয়ে ফাতেমার ঘরের খাটের নিচে লুকিয়ে থাকা বিদ্যুতকে বের করে মাঠের মধ্যে নিয়ে যায়। সেখানে বুলু পা এবং তছলিম ও আমজাদ দুই হাত ও মাথা ধরে রাখে। আলম নিজেই বিদ্যুতের গলায় ছুরি দিয়ে জবাই করে। জবাই শেষে যথারীতি শ্বশুরবাড়ি চলে যায় আলম। পরদিন ঘটনাটি শোনার পরই ফাতেমা নিশ্চিত হয়েছে যে তার পিতাই প্রেমিক বিদ্যুতকে খুন করেছে। সে তার বাবার বিচার দাবি করেছে। জবানবন্দীতে অকপটে ফাতেমার বাবা আলম হত্যাকা-ের কথা স্বীকার করে লোমহর্ষক এ খুনের বর্ণনা দিয়েছে।
×