ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অসম থেকে বাংলাদেশ হয়ে তেলের ট্যাঙ্কার যাবে ত্রিপুরায়

প্রকাশিত: ০৪:১১, ২৮ আগস্ট ২০১৬

অসম থেকে বাংলাদেশ হয়ে তেলের ট্যাঙ্কার যাবে ত্রিপুরায়

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ জ্বালানি সঙ্কট দূর করতে ত্রিপুরায় ৬৪৩ কোটি রুপী বিনিয়োগ করবে ভারতের তেল কোম্পানি ইন্ডিয়াল অয়েল কর্পোরেশন। বাংলাদেশী মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৭০০ কোটি টাকা। তবে এর জন্য দেশটি বাংলাদেশকে ব্যবহার করবে। অসম থেকে বাংলাদেশ হয়ে তেলের ট্যাঙ্কার যাবে ত্রিপুরায়। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল বিভাগের কোম্পানি ইন্ডিয়ান অয়েল-এওডি আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ২০টি ট্যাঙ্কারের চালান নেয়া শুরু করবে। খবর শিলং টাইমসের। প্রসঙ্গত, প্রবল বর্ষণ এবং জাতীয় সড়ক অত্যন্ত খারাপের কারণে ভারতের অসম থেকে ত্রিপুরায় পেট্রোলিয়াম জাত দ্রব্য পরিবহনে মারাত্মক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এতে করে ত্রিপুরা ব্যাপক জ্বালানি সঙ্কটে পড়ে। এরপরই ভারত বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে তেল নেয়ার বিকল্পপথের পরিকল্পনা করে। এওডির নির্বাহী পরিচালক দীপঙ্কর রায় জানান, ভারত এখন ত্রিপুরায় আরও জ্বালানি মজুদ করে রাখতে চায়। বাংলাদেশ হয়ে নতুন রুট এ অঞ্চলের সঙ্কট দূর করে দেবে। তিনি বলেন, এখানে সাধারণ মানুষকে যাতে ভোগান্তিতে পড়তে না হয়, সেজন্য আমরা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন এই ৭৫০ কোটি টাকায় একটি পেট্রোলিয়াম, অয়েল এবং লুব্রিক্যান্ট ডিপো তৈরি করবে। এছাড়া আগরতলায় তেল ভরার জন্য একটি নতুন প্লান্ট তৈরি করা হবে। ওই ডিপোর জন্য ব্যয় করা হবে ৫০০ কোটি রুপী। আর প্লান্ট তৈরির জন্য ব্যয় হবে ১৪৩ কোটি রুপী। আগামী ২ থেকে ৩ বছর এ প্রকল্পের কাজ চলবে। এদিকে ভারতের অনুরোধে সাময়িকভাবে জ্বালানি তেল পরিবহনের অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভারত বাংলাদেশের ১৪০ কিলোমিটার সড়কপথ ব্যবহার করে ত্রিপুরায় জ্বালানি তেল সরবরাহ করতে পারবে। গত বৃহস্পতিবার এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে এ বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। ভারতের অসম ও ত্রিপুরা রাজ্য এখন ভয়াবহ বন্যাকবলিত। তবে ত্রিপুরার চেয়ে অসম অঞ্চলেই বন্যায় সড়কপথ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেশি। আর অসমের সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ত্রিপুরায় জ্বালানি তেল সরবরাহ সম্ভব হচ্ছে না। এ অবস্থায় মেঘালয় থেকে বাংলাদেশ হয়ে ত্রিপুরায় জ্বালানি তেল সরবরাহের অনুরোধ করে ভারত। মানবিক কারণে প্রতিবেশী দেশটির অনুরোধে সাড়া দিয়েছে বাংলাদেশ। রায় বলেন, ইতোমধ্যেই আমরা বাংলাদেশের মধ্যে দিয়ে ত্রিপুরায় তেল আনার রুট ঠিক করে ফেলেছি। ১৫ থেকে ৩০ দিনের মধ্যেই সবকিছু চূড়ান্ত হবে। চলতি মাসের মধ্যেই ত্রিপুরায় ২০ ট্যাঙ্কারের প্রথম চালান নেয়া হবে। গোহাটিতে ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের বেতকুচি ডিপো থেকে বাংলাদেশের হয়ে ত্রিপুরায় ধর্মঙ্গর ডিপোতে আসতে পাড়ি দিতে হবে ৩৬৬ কিলোমিটার পথ। এর মধ্যে বাংলাদেশের মধ্যে পড়বে মাত্র ১২৬ কিলোমিটার পথ। অন্যদিকে বারাক উপত্যকা দিয়ে আসতে পাড়ি দিতে হতো ৩৮৬ কিলোমিটার পথ। তেলের ট্যাঙ্গার মেঘালয়ের ডাওকি পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে। এরপর ত্রিপুরার কৈলাশ্বহর দিয়ে ভারতে প্রবেশ করবে। রায় জানান, বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী, টনপ্রতি বাংলাদেশ পাবে ১ টাকা ২ পয়সা।
×