ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

৫০ কেজির বস্তায় দাম বেড়েছে ১০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত

পাইকারি বাজারে চালের দাম উর্ধমুখী

প্রকাশিত: ০৪:১০, ২৮ আগস্ট ২০১৬

পাইকারি বাজারে চালের দাম উর্ধমুখী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পাইকারি বাজারে চালের দাম আবারও উর্ধমুখী। মাসের ব্যবধানে ৫০ কেজি ওজনের চালের বস্তায় মানভেদে দাম বেড়েছে ১০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত। এর প্রভাব পড়ছে ভোক্তা পর্যায়ে। গত কয়েকদিনের মধ্যে সব ধরনের চালের দাম কেজিপ্রতি ২ থেকে ৪ টাকা করে বেড়েছে। বাজার মনিটরিং না থাকার কারণে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ করছেন ভোক্তা ও বাজার বিশ্লেষকরা। ভোক্তা পর্যায়ে এর দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে বাজার মনিটরিংয়ের দাবিও জানিয়েছেন তারা। নতুবা চালের দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। চাক্তাই এলাকার চাল ব্যবসায়ীরা জানান, মিল পর্যায়ে দাম বাড়ায় পাইকারি বিক্রেতারা ৫০ কেজির বস্তায় চালের দাম ১০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়েছেন। মাসের ব্যবধানে মোটা চালের দাম বস্তাপ্রতি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। চিকন চালের দাম বেড়েছে ১০০ থেকে ২০০ টাকা। চাক্তাই চাল পট্টির রহমান চালের আড়ৎদার মুহাম্মদ নাসির উদ্দিন জানান, কোরবানির গরু সরবরাহের কারণে পরিবহন সঙ্কট দেখিয়ে ভাড়া বাড়াচ্ছে পরিবহন মালিকরা। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে চালের দামেও। তাছাড়া মিল মালিকদের কারসাজির কারণেও এর দাম বাড়ছে। তিনি জানান, দুই মাস আগে মোটা আতপ ও সিদ্ধ চালের দাম ছিল মানভেদে প্রতি বস্তা ১ হাজার টাকা থেকে ১ হাজার ২০ টাকা। চলতি মাসের শুরুতে দাম বাড়িয়ে ১৩০০ থেকে ১৪০০ টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হয়েছিল। বর্তমানে তা আরও বাড়িয়ে ১৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে বাসমতি জিরা সিদ্ধ চাল প্রতি বস্তা ২০১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে; যা এক মাস আগেও ১৮০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। মিনিকেট চালের দাম ১৫৫০ থেকে বাড়িয়ে প্রতিবস্তা ১৮২০ টাকা এবং নাজিরশাইল চালের দাম ২২০০ থেকে বাড়িয়ে ২৫০০ টাকা করা হয়েছে। চট্টগ্রামের চাক্তাই দোকান কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এম. সরোয়ার চৌধুরী জানান, সরকারের ক্রয় পদ্ধতির কারণেই চালের দাম বাড়ছে। কৃষক থেকে বেশি দামে চাল কিনছে সরকার। ফলে ভোক্তা পর্যায়ে এর প্রভাব পড়ছে। রাইচ মিল মালিক সমিতি, চট্টগ্রামের সভাপতি শান্ত দাশ গুপ্ত জানান, মোটা চালের দামই বেশি বেড়েছে। কয়েক মাসের ব্যবধানে মোটা চালের দাম প্রতিবস্তায় ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। মোটা চালের দাম বাড়ার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, বেশ কিছু কারণে চালের দাম বেড়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- সরকারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ মিল মালিকরা সরকারী চাল সংগ্রহে একযোগে মাঠে নেমেছে। ফলে মোটা চালের চাহিদা ৪ গুণ হয়েছে। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চুক্তিবদ্ধ মিল মালিকরা এই চাল সংগ্রহ করবেন। এছাড়া অক্টোবরের দিকে সরকার ৫০ লাখ মানুষের মাঝে বিনামূল্যে ৩০ কেজি করে চাল বিতরণ করবেন। তখন চালের দাম এমনিতেই কমে যাবে। কনজ্যুমার্স এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন জানান, এখন বিদেশ থেকে চাল আমদানি করতে হয় না। দেশে উৎপাদিত চালেই দেশের চাহিদা পূরণ হচ্ছে। তাই চালের দাম বাড়ার কোন প্রশ্নই আসে না। দাম আরও বাড়ার আগেই মনিটরিং শুরু করা উচিত। নতুবা চালের দাম লাগামহীন হয়ে যাবে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমান বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিব। তখন কোন অজুহাত দেখিয়ে ব্যবসায়ীরা ছাড় পাবেন না।
×