ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে নতুন ষড়যন্ত্রের শঙ্কা গণজাগরণমঞ্চের

প্রকাশিত: ০২:৫১, ২৮ আগস্ট ২০১৬

যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে নতুন ষড়যন্ত্রের শঙ্কা গণজাগরণমঞ্চের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর সর্বোচ্চ শাস্তির রায় কার্যকরে বারবার দীর্ঘসূত্রীতার প্রতিবাদে শাহবাগে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে গণজাগরণ মঞ্চ। শনিবার এ কর্মসূচী পালিত হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এবং আপিল বিভাগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এই যুদ্ধাপরাধীর রিভিউ শুনানি বারবার পিছিয়ে দেয়ার প্রেক্ষিতে বিক্ষোভ কর্মসূচী পালিত হয়। সমাবেশে বক্তারা দ্রুত কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর ফাঁসির রায় কার্যকর এবং তার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার দাবি জানান। সমাবেশে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার বলেন, কুখ্যাত বাহিনী ছাত্রসংঘ, যা বর্তমানে ছাত্রশিবির নামে পরিচিত, যারা ১৯৭১ সালে আলবদর বাহিনী গঠন করে এদেশের সাধারণ মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। এই ছাত্রসংঘের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মীর কাসেম আলী। ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তার সর্বোচ্চ শাস্তির রায় হবার পর দীর্ঘ দুই বছর আপীল বিভাগে এই মামলা চলে। চলতি বছরের ৮ মার্চ আপিল বিভাগের চূড়ান্ত রায়ে তার মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখার পর সাড়ে পাঁচ মাস সময় অতিবাহিত হয়েছে। আপীল বিভাগের চূড়ান্ত রায়ের পর রিভিউ শুনানি একটি আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। এর আগে যেসব যুদ্ধাপরাধীর রায় কার্যকর হয়েছে, কারো ক্ষেত্রেই রিভিউ শুনানিতে এক সপ্তাহের বেশি সময় লাগেনি। অথচ এই কুখ্যাত বিত্তশালী যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর ক্ষেত্রে বারবার রিভিউ শুনানি পিছিয়ে কালক্ষেপণ করা হচ্ছে। কেন এই ধনকুবের যুদ্ধাপরাধীর রিভিউ শুনানি বারবার পিছিয়ে দেয়া হচ্ছে, এর পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য আছে কিনা, সে বিষয়ে সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন জেগেছে। ইমরান এইচ সরকার বলেন, একদিকে বারবার রিভিউ পিছিয়ে দেয়া হচ্ছে, অন্যদিকে যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে যারা আন্তর্জাতিক লবিং করে, তারা সক্রিয় হচ্ছে। হঠাৎ করেই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বাংলাদেশে আসার ঘোষণা দিয়েছে। বিভিন্ন সময়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বক্তব্য যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে গেছে। একারণে মানুষের মধ্যে শংকা তৈরি হয়েছে। ইমরান এইচ সরকার বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, যেটি পুরাতন হাইকোর্ট ভবনে ছিল, সেখান থেকে সেটিকে সরিয়ে দেয়ার জন্য একটি চিঠি দেয়া হয়েছে আইন মন্ত্রণালয়ে। এটি আমাদের কাছে ন্যাক্কারজনক মনে হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে সরিয়ে দিয়ে বিচার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্থ করার চেষ্টায় মনে হয়, যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিরুদ্ধে নতুনভাবে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। তিনি আরো বলেন, যদি যুদ্ধাপরাধের বিচারকে বাধাগ্রস্থ করার ষড়যন্ত্র অব্যাহত থাকে, কোনোভাবে মীর কাসেমকে রক্ষার চেষ্টা করা হয়, তাহলে ২০১৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারির মতো প্রয়োজনে সারাদেশে আমরা আবারও রাজপথে নেমে আসবো। সকল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে দাঁতভাঙা জবাব দেয়া হবে। মীর কাসেমের রায় নিয়ে আমাদের শংকার কথা আগেও আমরা কর্মসূচীর মাধ্যমে জানিয়েছি। আগামীকাল ২৮ আগস্ট রিভিউর শুনানি রয়েছে। আমরা আশা করি, আর কালক্ষেপণ না করে আগামীকালই রিভিউ নিষ্পত্তি হবে এবং অতি দ্রুত এই যুদ্ধাপরাধীর রায় কার্যকর হবে।
×