নিজস্ব সংবাদদাতা, ভালুকা, ময়মনসিংহ ॥ ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ি এলকার সংরক্ষিত বন থেকে একটি সংঘবদ্ধ কাঠ পাচারকারীদল রাতের আঁধারে ১০ থেকে ১২ বছর বয়সি প্রায় ১৪/১৫ হাজার গজারি গাছ কেটে চুরি করে নিয়ে গেছে। স্থানীয় বনবিভাগের অসাধূ কর্মকর্তা ও কর্মচারী ও প্রভাবশালী ভূমিদস্যূদের যোগসাজশে গভীর বনটি উজার করে শিল্পপতিদের কাছে বিক্রির উদ্দেশ্যে রাতের আঁধারে এসব গজারি গাছ কেটে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার হবিরবাড়ি মৌজার ৪৩৮, ৪১৩ ও ৪৭১ নম্বর দাগে ১১ গড় নামে বেশ কয়েকটি চালায় গভীর গজারি বন রয়েছে। এসব চালায় ১০ থেকে ১২ বছর বয়সি কয়েক লাখ গজারি গাছ রয়েছে। একটি প্রভাবশালী ভূমি দালাল ও ভূমিদস্যূচক্র দীর্ঘদিন ধরে ওই চালা গুলো দখলের পাঁয়তারা করে আসছে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েক দফায় রাতের আঁধারে কয়েক হাজার গাজারি গাছ কেটে নিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। এমনকি কোন কোন চালায় আমের বাগান করা হয়েছে দখলের উদ্দেশ্যে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২২ আগস্ট থেকে ৩ দিন ব্যাপী রাতের আঁধারে ৩০/৩৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ কাঠপাঁচারকারীদল তিনটি চালা থেকে প্রায় ১৪ থেকে ১৫ হাজার গজারি গাছ কেটে নিয়ে যায় এবং ওই জায়গায় আগুণ ধরিয়ে দেয়া হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসি জানান, স্থানীয় প্রভাবশালী আব্দুর রশিদ ও শহিদুল হকের লোকজন রাতের আঁধারে এসব গজারি গাছ কেটে নিয়েছে। স্থানীয় বনবিভাগের কতিপয় অসাধূ কর্মকর্তা ও কর্মচারীর যোগসাজশে রাতের পর রাত সংরক্ষিত বনাঞ্চল উজাড় হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, বন সাবাড় করছে ভূমিদস্যু ও কাঠ পাচারকারী কিন্তু ওইসব প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছেনা। অসাধূ বনবর্মকর্তারা মোটা অংকের টাকার নিয়ে মামলা বেড়াজালে আটকাচ্ছে এলাকার সাধারণ নিরিহ মানুষদের।
এ ব্যাপারে আব্দুর রশিদ জানান, ৪১৩ নম্বর দাগে বনবিভাগ থেকে অবমুক্ত করা আমার জমি রয়েছে। শুনেছি রাতের আঁধারে কে বা কারা গজারী গাছগুলো কেটে নিয়েছে। শহিদুল হকের মোবাইলে বার বার চেষ্টা করেও ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তবে তার ভাই আতিক জানান, ৪৩৮ নম্বর দাগে তাদেরও জমি রয়েছে। কিন্তু গাছ কেটে নেয়ার বিষয়টি তাদের জানা নেই।
হবিরবাড়ি রেঞ্জের বিট কর্মকর্তা মো: শরিফুর রহমান খান জানান, হবিরবাড়ি মৌজার ৪৩৮ নম্বর দাগে মোট জমি রয়েছে ১শত১১ একর ৬৪ শতাংশ, তার মাঝে বনবিভাগের রয়েছে ৮৩ একর ৬৪ শতাংশ। ৪১৩ নম্বর দাগে মোট জমি রয়েছে ১০৩ একর ২৩ শতাংশ। এতে বনবিভাগের রয়েছে ৫৭ একর ৮৬ শতাংশ এবং ৪৭১ নম্বর দাগে মোট জমি রয়েছে ২১৭ একর ৪৭ শতাংশ। এতে বনবিভাগের রয়েছে ৯৩ একর ৩৮ শতাংশ। ৪৩৮ নম্বর দাগে স্থানীয় আব্দুর রশিদ নামে এক ব্যক্তির ডিমারগেশনকৃত ৩ একর ৫২ শতাংশ জমি রয়েছে। ওই দাগ থেকে গাছগুলো কেটে নেয়ার দুইদিন পর খোঁজ পেয়েছি। অনুমান করা হচ্ছে ৫ হাজার গজারি গাছ কেটে নেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যাবস্থা নেয়া হচ্ছে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: