ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ইতালির ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত এলাকায় জরুরী অবস্থা জারি

প্রকাশিত: ০৪:০৭, ২৭ আগস্ট ২০১৬

ইতালির ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত এলাকায় জরুরী অবস্থা জারি

ভয়াবহ ভূমিকম্পে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে জরুরী অবস্থা জারি করেছে ইতালি। দু’দিন আগের এ ভূমিকম্পে জীবিত আর কারও উদ্ধার হওয়ার আশা যখন ক্ষীণ হতে শুরু করেছে, তখন এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। খবর বিবিসির। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইতালির প্রধানমন্ত্রী মাত্তিও রেনজি পুনর্গঠনের জন্য পাঁচ কোটি ইউরো বরাদ্দ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ভয়াবহ এ দুর্যোগে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ২৫২ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে, আহত হয়েছে ৩৬৫ জন। পাঁচ হাজার উদ্ধারকারী দ্বিতীয় দিনের মতো ধসে পড়া ভবনের স্তূপের মধ্যে তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছে। তবে ভূমিকম্পের পর মুহুর্মুহু পরাঘাতের কারণে উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে। পুনর্গঠনের জন্য বিশেষ বরাদ্দের সঙ্গে বিধ্বস্ত এলাকাবাসীদের কর মওকুফ করেছেন রেনজি। পাশাপাশি নিম্নমানের নির্মাণ নিয়ে সমালোচনা ঠেকাতে ‘ইতালিয়ান হোমস’ নামে নতুন এক উদ্যোগের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী। তবে ইতালি সম্পূর্ণভাবে ভূমিকম্প সহনশীল ভবন তৈরি করতে পারে এমন ভাবনাকে অলীক বলেছেন তিনি। অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় ভবন নির্মাণের মান নিয়ে ইতালির গণমাধ্যমগুলোতে সমালোচনা চলছে। ভূমিকম্পে যেসব ভবন ধসে পড়েছে তার কতকগুলি সম্প্রতি সংস্কার করা হয়েছে। ইতালির ঐতিহাসিক শহরগুলোতে ভূমিকম্প প্রতিরোধী ভবন নির্মাণ বিধিমালা মানা হয় না, যেগুলো অনেক সময় নতুন ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রেও অবহেলিত হয়। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের সবচেয়ে কাছে আকুমোলি ও আমাত্রিস শহরে সবচেয়ে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে ও ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যাচ্ছে। আমাত্রিস শহরটি পুরো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। পেসকারা ডেল ট্রন্টো নামে কাছের একটি গ্রাম ধুলায় মিশে গেছে এবং নিহতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। রোমের প্রায় এক শ’ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে এ ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। পরে ইতালির নাগরিক সুরক্ষা বিভাগের প্রধান ইম্মাকোলাতা পস্তিগলিওনি এক সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছেন, বহু মানুষ এখনও নিখোঁজ। ভূমিকম্পের তীব্রতায় রাজধানী রোমে বাড়িঘর ২০ সেকেন্ড ধরে কাঁপে। কম্পন অনুভূত হয়েছে উত্তরে বোলোনা থেকে দক্ষিণে নেপলস পর্যন্ত। ৮০টি ছোট ছোট ভূকম্পনের খবর পাওয়া গেছে। একটি গ্রামে ধ্বংসস্তূপ থেকে প্রায় দশজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। বেশকিছু প্রত্যন্ত গ্রামে উদ্ধারকারীরা এখনও পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন। আমাত্রিস শহরের মেয়র জানিয়েছেন, শহরের অর্ধেক ধ্বংস হয়ে গেছে এবং শহর থেকে ঢোকা ও বের হওয়ার পথ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। যেসব এলাকায় ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে সেসব এলাকায় বহু মানুষ এখনও নিখোঁজ রয়েছে। আকুমোলি শহরটি পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় এবং শহরটিতে বহু পর্যটক এ সময়ে বেড়াতে এসেছিল। ইতালির প্রেসিডেন্ট সের্গিও মাত্তারেল্লা এ বিপর্যয়কে মর্মান্তিক বলে বর্ণনা করেছেন।
×