স্টাফ রিপোর্টার ॥ সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় (২০১৬-২০২০) অভিবাসন উন্নয়নের উদ্দেশ্যকে অন্তর্ভুক্ত করেছে সরকার। এ জন্য সব ধরনের কাজ করে যাচ্ছে। বিশেষ করে মানব সম্পদ উন্নয়নের ওপর জোর দিয়েছে। বৃহস্পতিবার শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোর একটি হোটেলে ‘কলম্বো প্রসেস’ সম্মেলনে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি এ কথা বলেন।
কলম্বো প্রসেস সম্মেলনে যোগ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সরকার নিরাপদ অভিবাসন এবং অভিবাসন ব্যয় কমানোর জন্য কাজ করছে। বিদেশে কর্মী প্রেরণের ক্ষেত্রে তার সরকার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণে জিটুজি এবং জিটুজি প্লাস প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয়েছে। কোরিয়ায় কর্মী প্রেরণে ইপিএস প্রক্রিয়া, সৌদি আরবে কর্মী প্রেরণের জন্য একটি প্রক্রিয়া হাতে নেয়া হয়েছে। কর্মী প্রেরণে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার লক্ষ্যে টাস্কফোর্স গঠন এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান অভিবাসন আইন-২০১৩ প্রণয়ন করা হয়েছে। মানব সম্পদ উন্নয়নে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষকর্মী তৈরি ও বিদেশে পারদর্শী কর্মী প্রেরণে তার সরকার কাজ করছে।
প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সকল অভিবাসীর নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য সর্বাত্মকভাবে কাজ করার জন্য সকল সদস্যের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি কলম্বো প্রসেসের সুন্দর আয়োজনের জন্য শ্রীলঙ্কা সরকারকে এবং অভিবাসনবিষয়ক সার্বিক কাজের জন্য আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। এ সময় মন্ত্রীর প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদিশেক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব বেগম শামছুন নাহার উপস্থিত ছিলেন।
কলম্বো প্রসেসের বর্তমান চেয়ারম্যান ও শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী থালাথা আতুকুড়ালির সভাপতিত্বে সম্মেলনে এশিয়ার অভিবাসী কর্মী প্রেরণকারী ১১ দেশের (আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, চীন, নেপাল, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, নেপাল, ভিয়েতনাম, ফিলিপিন্স, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ড মন্ত্রীরা সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন।
সম্মেলনে অভিবাসী কর্মীদের স্বার্থরক্ষা ও তাদের নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন বিষয়াদি সমন্বিত ‘কলম্বো ডিক্লারেশন’ সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। এ ডিক্লারেশনে পাঁচটি থিমেটিক এরিয়াতে পরবর্তীতে কর্মপরিকল্পনা অনুয়ায়ী সুনির্দিষ্টভাবে কাজ করার অঙ্গীকার করা হয়। দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ, প্রাক-বহির্গমন ব্রিফিং, শ্রমবাজার গবেষণা, রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধি হচ্ছে।
সম্মেলনে বাংলাদেশের উদ্যোগের গৃহীত কিছু বিশেষায়িত নিয়োগ পদ্ধতির প্রশংসা করা হয়। এছাড়াও সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো তাদের নিজ নিজ দেশের অভিবাসনসংক্রান্ত কাজের উল্লেখযোগ্য অংশ তুলে ধরেন। সম্মেলনে হোস্ট প্রতিষ্ঠান হিসেবে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) ও সুইস এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট এ্যান্ড কো-অপারেশন (এসডিসি) অংশগ্রহণ করে।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছেন, সম্মেলন শুরুর আগে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি সংযুক্ত আরব আমিরাতের মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আলেক্স জাম্মামীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। বৈঠকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশী কর্মী নিয়োগ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। তিনি বাংলাদেশ থেকে নির্মাণ কাজের জন্য বাংলাদেশী কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রদান করে কর্মী নিয়োগ করার বিষয়ে একমত হন। এ জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা প্রস্তুত করার রূপরেখা প্রদান করেন। পরে শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার মহাপরিচালক উইলিয়াম লেসি সুইং আলাদা আলাদা বৈঠক মিলিত হন।