ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মেজর জিয়ার সান্নিধ্যেই ধীরে ধীরে জঙ্গী হয়ে ওঠে ঘাতক সিফাত

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ২৬ আগস্ট ২০১৬

মেজর জিয়ার সান্নিধ্যেই ধীরে ধীরে জঙ্গী হয়ে ওঠে ঘাতক সিফাত

গাফফার খান চৌধুরী ॥ আর দশটা সাধারণ ছাত্রের মতো ছিল প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপন হত্যার প্রধান আসামি মঈনুল হাসানের জীবন। বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলার ছাতকের মাধবপুর গ্রামে। ধর্মভীরু সচ্ছল পরিবারের সন্তান। এক ভাই লন্ডন প্রবাসী। উচ্চতর ডিগ্রী অর্জনের জন্য ভর্তি হয় সিলেটের সরকারী মদন মোহন কলেজে। পড়াশোনা শেষ করার পর ব্যবসাবাণিজ্য বা লন্ডনে চলে যাওয়ার কথা ছিল তার। পড়াশোনার জন্য তাকে সিলেটেই থাকতে হচ্ছিল। নিয়মিত ক্লাস, পড়াশোনা আর নামাজ আদায় করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল তার জীবন। সবকিছু ভালভাবেই চলছিল। কিন্তু জীবনের মোড় ঘুরে যায় ২০১২ সালে। কলেজের পাশের এক মসজিদে সে নিয়মিত নামাজ আদায় করত। সেখান থেকেই তাকে টার্গেট করে নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠন হিযবুত তাহরীরের দাওয়াতী সেলের এক সদস্য। গত ২৩ আগস্ট দীপন হত্যার প্রধান আসামি সিফাত ওরফে মঈনুল হাসান গাজীপুরের টঙ্গী থেকে পুলিশেল হাতে গ্রেফতার হয়। বর্তমানে সিফাতকে ছয় দিনের রিমান্ডে পেয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে মামলার তদন্ত সংস্থা ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম এ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট। সিফাত তদন্তকারীদের কাছে তার জঙ্গী হয়ে ওঠা এবং হত্যাযজ্ঞ চালানোর দীর্ঘ কাহিনী বর্ণনা করেছে। সিফাতের বরাত দিয়ে তদন্ত সংস্থার উর্ধতন এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জনকণ্ঠকে আরও বলেন, সিফাত সাধারণ ছাত্র ছিল। পড়াশোনা, নামাজ আর কলেজে যাতায়াতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল তার জীবন। সে নিয়মিত মসজিদে নামাজ আদায় করত। অতিরিক্ত ধর্মভীরু সিফাত। মসজিদ থেকেই জঙ্গীরা তাকে টার্গেট করে। পড়াশোনার জন্য সিলেটে বসবাস করা সিফাত প্রতিদিনের মতো বাসার কাছের একটি মসজিদে নামাজ আদায় করতে যেত। নামাজের পর পবিত্র কোরান-হাদিসের বয়ান শোনার জন্য আহ্বান করা হতো মুসল্লিদের। ওই দিন সিফাতের তেমন তাড়া ছিল না। তাই সে নামাজ আদায় শেষে বসে থাকে বয়ান শোনার জন্য। এক পর্যায়ে বয়ানে মুগ্ধ হয়ে যায়। এরপর নিয়মিত বয়ান শোনা শুরু করে। কয়েকদিন নিয়ম করে বয়ান শোনার পর তার কাছে আসে একজন। সেই প্রথম তাকে ইসলামের জন্য পবিত্র কোরান-হাদিসের জন্য কাজ করার আহ্বান জানান। এমন আহ্বানে সাড়া দেয় সে। এরপর আস্তে আস্তে শুরু হয় তার মগজ ধোলাই। যুবক বয়স। টগবগে রক্ত। সে ইসলামের জন্য গভীরভাবে কাজ করতে পবিত্র মসজিদের মধ্যেই হাত ধরে প্রতিশ্রুতি দেয়। এরপর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় সিলেটেরই একটি বাসায় পবিত্র কোরান- হাদিসের আরও তাৎপর্যপূর্ণ বয়ান শোনার জন্য। বয়ানে মুগ্ধ হয় মঈনুল। কয়েক ধাপ অতিক্রম করার পর তার সঙ্গে যোগাযোগ হয় সেনাবাহিনীতে ক্যু করার চেষ্টার দায়ে চাকরিচ্যুত মেজর জিয়ার। মেজর জিয়ার সঙ্গে তার অনেকবার সরাসরি দেখা ও বৈঠক হয়েছে। মেজর জিয়া তাকে জানায়, সে সেনাবাহিনীতে প্রেসিডেন্ট সোর্ড অব অনার পাওয়া কর্মকর্তা। বর্ণাঢ্য কেরিয়ার ছিল তার। বাহিনীতে থাকলে জীবনে একদিন অবশ্যই অনেক বড় আর্মি অফিসার হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু সবকিছু ফেলে শুধু দেশে ইসলামী শাসন ব্যবস্থা কায়েম করতে, পবিত্র কোরান-হাদিস অনুযায়ী দেশ যাতে পরিচালিত হয় তার ব্যবস্থা করতে জিহাদের পথ বেছে নিয়েছেন। নিজের জীবনকে ইসলামের জন্য উৎসর্গ করেছেন। জিহাদ করতে হলে জীবন উৎসর্গ করতে হয়। যুগে যুগে অনেকেই তা করে গেছেন। এমন কথায় মুগ্ধ হয় মঈনুল। ওই সময় মেজর জিয়ার সহযোগীরা মঈনুলকে পবিত্র মসজিদে প্রতিশ্রুতি দেয়ার কথা স্মরণ করিয়ে দেন। সার্বিক আলাপ, আলোচনা ও পরিবেশ-পরিস্থিতিতে মঈনুল পবিত্র ইসলাম ধর্মের জন্য জীবন উৎসর্গ করতে রাজি হয়ে যায়। এরপর থেকেই মঈনুলের সঙ্গে বাড়ির যোগাযোগ ক্রমেই কমে আসতে থাকে। দূরত্ব বাড়তে থাকে বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে। মঈনুল নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠন হিযবুত তাহরীরের হয়ে প্রথমে নিজের কলেজ থেকেই কাজ শুরু করে। নিজ এলাকা সুনামগঞ্জে হিযবুত তাহরীরের লিফলেট বিলির সময় একবার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়। যদিও পরবর্তীতে জামিনে ছাড়া পেয়ে যায়। জামিনে ছাড়া পাওয়ার পর অনেকটাই স্বাভাবিক জীবনে ফিরছিল সে। কিন্তু তাকে যারা জঙ্গীবাদে উদ্বুদ্ধ করেছিল তারা মঈনুলের পিছু ছাড়ছিল না। ২০১৪ সালের মাঝামাঝি আবার মঈনুলকে তারা টার্গেট করে। এরপর মঈনুল যোগ দেয় আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সঙ্গে। এবিটিতে যোগ দেয়ার পরেও মঈনুলের সঙ্গে জিয়ার আবার দেখা সাক্ষাত শুরু হয়। এ সময় মঈনুলকে নিয়ে যাওয়া হয় আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের কেন্দ্রীয় শূরা কমিটির কাছে। শূরা কমিটি মঈনুলকে ইসলামের শত্রুদের বিরুদ্ধে জিহাদ করার নির্দেশ দেয়। রাজি হওয়ার পর প্রথমেই তাকে পাঠিয়ে দেয়া হয় চট্টগ্রামের ট্রেনিং ক্যাম্পে। সেখানে জঙ্গী সংগঠনটির সামরিক শাখার প্রধান মেজর জিয়ার সঙ্গে আবারও সাক্ষাত হয়। সেখানেই তার শারীরিক কসরতের পাশাপাশি অস্ত্র চালনার ট্রেনিং হয়। ইতোমধ্যেই নাম পাল্টে যায় মঈনুলের। নাম পরিবর্তন হয়ে মঈনুলের নাম হয় শামীম ওরফে সিফাত ওরফে সামির ওরফে ইমরান। একেক সময় একেক নাম ব্যবহারের কথা বলা হয়। এসব সাংগঠনিকভাবে দেয়া। আসল নাম হারিয়ে যায়। সাধারণ ঘরের কলেজছাত্র মঈনুল হয়ে ওঠে আত্মঘাতী জঙ্গী। অস্ত্র ও চাপাতি চালানোর প্রশিক্ষণ শেষে ২০১৪ সালের শেষদিকে তাকে পাঠানো হয় ঢাকায়। প্রথমে গাজীপুরের টঙ্গীর একটির মারকাযে (নিরাপদ আস্তানা) তার ট্রেনিং হয়। টঙ্গীর মারকাযে থাকার সময় সে প্রথম সরাসরি একটি সিøপার সেলের সঙ্গে হত্যার অপারেশনে অংশ নেয়। সেলটির প্রথম টার্গেট ছিল সঙ্গীত শিল্পী রিয়াদ মোর্শেদ বাবু। গত বছরের ৪ জানুয়ারি তাকে গান শেখার কথা বলে ঢাকা জেলার সাভারের একটি বাড়িতে ডেকে নেয় মঈনুলসহ সিøপার সেলের অন্য সদস্যরা। বাবু ওই বাসায় যাওয়ার পর তার হাত-পা বেঁধে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করা হয়। সফল হত্যাকা-ে। এরপর দলে মঈনুলের পদবি বাড়ে। সে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (বর্তমানে আনসার আল ইসলাম) সামরিক শাখার শীর্ষ চার মাসুলদের (দায়িত্বশীল ব্যক্তি) একজন হিসেবে বিবেচিত হয়। এরপর তার আরও ট্রেনিং শুরু হয়। চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি রাজধানী বাড্ডার সাঁতারকুলে এবং মোহাম্মদপুরের নবোদয় হাউজিং এলাকায় আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের দুটি আস্তানার সন্ধান পায় পুলিশ। দুটি আস্তানায়ই যাতায়াত ছিল সিফাতের। এরমধ্যে মোহাম্মদপুরের আস্তানাটি ছিল আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের বোমা তৈরির প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। কেন্দ্রটি থেকে সিফাত বোমা তৈরির প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে। বাবু হত্যার পর সিফাতকে টঙ্গীর মারকায থেকে রাজধানীর মহাখালীর মারকাযে স্থানান্তর করা হয়। প্রতিবারই মারকায স্থানান্তরকালে সব জঙ্গীর নাম পরিবর্তন করে দেয়া হয় সংগঠনের তরফ থেকে। এখানে ট্রেনিং চলে প্রায় একমাস। মহাখালীতে ট্রেনিং করায় শরীফ ও সেলিম নামের দুইজন হাদী (সামরিক প্রশিক্ষক ও কমান্ডার)। ট্রেনিং ক্যাম্পে ইতোপূর্বে গ্রেফতার হওয়া শিহাব ছিল। এই ট্রেনিং ক্যাম্পে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের দুটি গ্রুপ ট্রেনিং করে। একটি গ্রুপের টার্গেট ছিল প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপনকে হত্যা। আরেকটি গ্রুপের টার্গেট ছিল মোহাম্মদপুরে শুদ্ধস্বর প্রকাশনীতে হামলা করে প্রকাশককে হত্যা করা। প্রকাশনা সংস্থা দুটি অভিজিত রায়ের লেখা বই প্রকাশ করায় টার্গেটে পরিণত হয়। প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে অভিজিত রায়কে হত্যা করে জঙ্গীরা। শুদ্ধস্বর প্রকাশনীতে হামলায় সরাসরি অংশ নেয়া শিহাব আদালতে ১৬৪ ধারায় দেয়া জবানবন্দীতে জানায়, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গত বছরের ৩১ অক্টোবর শরীফের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের একটি সিøপার সেল মহাখালী থেকে বের হয় মোহাম্মদপুরের শুদ্ধস্বর প্রকাশনায় আর সেলিমের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি সিøপার সেল বের হয় প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপনকে হত্যা করতে। ওইদিন দুপুর আড়াইটার দিকে শুদ্ধস্বর প্রকাশনা কার্যালয়ে হত্যার উদ্দেশে হামলা চালানো হয়। চাপাতির আঘাতে ও গুলিতে প্রকাশক আহমেদুর রশীদ চৌধুরী টুটুল (৫০), লেখক এবং ব্লগার প্রকৌশলী তারেক রহিম (৪২) ও রন দীপম বসু (৪০) মারাত্মক আহত হলেও প্রাণে বেঁচে যায়। অভিজিত রায়ের লেখা ‘সমকামিতা: একটি বৈজ্ঞানিক এবং সমাজ-মনস্তাত্ত্বিক অনুসন্ধান’ ও ‘শূন্য থেকে মহাবিশ্ব’ নামের দুটি বই প্রকাশ করায় হামলা চালায় জঙ্গীরা। ডিবির ওই কর্মকর্তা সিফাতের বরাত দিয়ে বলছেন, সেলিমের নেতৃত্বে থাকা সিøপার সেলটি মহাখালীর মারকায থেকে একই সময়ে বের হয়। তারা সোজা শাহবাগে আসে। এরপর তারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আউটডোরের নতুন ভবন সংলগ্ন আজিজ সুপার মার্কেটের পূর্বপার্শ্বে থাকা ওষুধের মার্কেটের ভেতর দিয়ে তৃতীয় তলায় ১৩১ নম্বর দোকানে থাকা জাগৃতি প্রকাশনীতে প্রবেশ করে। সেখানে তারা প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপনকে (৪০) ঘাড় ও গলা কেটে হত্যা করে। হত্যার আগে দীপনকে প্রায় এক মাস ধরে অনুসরণ করেছে জঙ্গীরা। দীপন দ্বিতীয় তলায় উত্তর দিকে থাকা অন্তর নামের একটি রেস্তরাঁয় প্রায়ই খাওয়াদাওয়া করতেন। সেই রেস্তরাঁয় কখন-কোন দিন যাতায়াত করতেন, তাও রেকি করেছিল জঙ্গীরা। আজিজ সুপার মার্কেটের কোন্ কোন্ পয়েন্টে সিসি ক্যামেরা রয়েছে, তা ছিল হত্যাকারীদের নখদর্পণে। শুধু আজিজ সুপার মার্কেটের ওষুধ বাজারের ভেতর দিয়ে আজিজ সুপার মার্কেটের সঙ্গে সংযুক্ত রাস্তায় কোন সিসি ক্যামেরা ছিল না। এজন্য তারা সেই পথেই প্রবেশ করে। দীপন হত্যার পর ওই রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়া হয় পুলিশের নির্দেশেই। বর্তমানে দুই মার্কেটে আলাদা আলাদাভাবে প্রবেশ করতে হয়। প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. আবুল কাসেম ফজলুল হকের একমাত্র ছেলে ছিলেন। আর অভিজিত রায়ের পিতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. অজয় রায়। দীপন ও অভিজিতের পিতা প্রায় সমবয়সী। দুই শিক্ষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কোয়ার্টারে বসবাস করতেন। সেই সুবাদে দীপন ও অভিজিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় জন্ম ও বড় হয়ে উঠেছিল। তারা বাল্যবন্ধু ছিলেন। একত্রে পড়াশোনা করেছিলেন উদয়ন স্কুলে। বন্ধুত্বের সূত্র ধরেই জাগৃতি প্রকাশনা থেকে অভিজিত রায়ের লেখা ‘বিশ্বাসের ভাইরাস’ ও ‘অবিশ্বাসের দর্শন’ নামক দুটি বই প্রকাশ করেন প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপন। সিফাত প্রকাশক দীপন হত্যায় সরাসরি অংশ নিয়েছিল। এ ব্যাপারে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম এ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের উপকমিশনার মাশরুকুর রহমান খালেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, সিফাতকে জিজ্ঞাসাবাদে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসছে। সিফাত সিলেটে যার হাত ধরে জঙ্গীবাদে জড়িয়ে পড়ে তার নামসহ অনেক কিছুই প্রকাশ করেছে। তদন্তের স্বার্থে তা বলা সম্ভব নয়। অনেক ঘটনার বিষয়ে সিফাত তথ্য দিয়েছে। প্রসঙ্গত, ব্লগার, প্রকাশকসহ কয়েকটি চাঞ্চল্যকর হত্যাকা-ের ঘটনায় ছয় জঙ্গীর ছবি প্রকাশ করে ১৮ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে পুলিশ। এদের মধ্যে ৫ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষিত শরীফ পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মারা যায়। দুই লাখ টাকা পুরস্কার ঘেষিত শিহাব গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে কারাগারে। সর্বশেষ গ্রেফতার হলো সিফাত। তাকে ধরিয়ে দিতেও দুই লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল। সিফাত গ্রেফতারের পর সংবাদ সম্মেলনে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, গত ১৫ জুন প্রকাশক টুটুল হত্যা চেষ্টায় সরাসরি অংশগ্রহণকারী দুই লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষিত জঙ্গী মোঃ সুমন হোসেন ওরফে শাকিব ওরফে শিহাব ওরফে সাইফুল গ্রেফতারের পর সিফাতের নাম আসে। আদালতে ১৬৪ ধারায় শিহাবের দেয়া জবানবন্দীতেও সিফাত এবং সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত মেজর জিয়ার নাম প্রকাশ পায়। শিহাবের তথ্যমতেই গ্রেফতার হয় সিফাত। দীপনসহ ব্লগার, প্রকাশকসহ মুক্তমনা নানা শ্রেণীপেশার বহু মানুষ হত্যার সঙ্গে সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত মেজর জিয়া জড়িত। গ্রেফতারকৃত সিফাতের সঙ্গে মেজর জিয়ার একাধিকবার দেখাসাক্ষাত, কথাবার্তা ও বৈঠক হয়েছে।
×