ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শ্যামল চৌধুরী

সকলের তরে সকলে আমরা

প্রকাশিত: ০৬:২৩, ২৫ আগস্ট ২০১৬

সকলের তরে সকলে আমরা

মানুষ সমাজবদ্ধ জীব। সমাজবদ্ধ হিসেবে বাস করা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। সৃষ্টির ঊষালগ্ন থেকে মানুষ মিলেমিশে বাস করে আসছে। মানুষে মানুষে মিলন যেন সম্পর্কের এক জটাজাল। মানবজীবন ব্যক্তিকেন্দ্রিক নয়। একে অন্যের কল্যাণে ব্রতী হওয়ার মাধ্যমেই মনুষত্বের পরিচয় ফুটে ওঠে। মানুষ মানুষের জন্য। মানুষের প্রতি মানুষের মমত্ববোধ থাকবে এটাই স্বাভাবিক। সুখে-দুঃখে, আপদে-বিপদে একজন অন্যজনের পাশে দাঁড়াবে। একজন বিবেকবান মানুষের এটাই কর্তব্য। আপন দুঃখে যেমন মানুষ কাতর হয়, তেমনি অপরের দুঃখ-বেদনাতেও সহানুভূতি ও সহমর্মিতা প্রকাশ করা উচিত। সুখে-দুঃখে একে অপরের পাশে দাঁড়ানোর মধ্যেই জীবনের সার্থকতা নিহিত। নিজের স্বার্থের জন্যই জীবন নয়। এ প্রসঙ্গে ডা. লুৎফর রহমান বলেছেন, আত্মার সাত্মিক তৃপ্তির কাছে জড়দেহের ভোগসুখের কিছুই মূল্য নেই। সমাজবদ্ধ সহানুভূতিশীল মানুষ আত্মস্বার্থে মগ্ন না থেকে পরহিতে জীবন দান করতেও দ্বিধা করে না। পরোপকারের মধ্য দিয়েই জীবন কাটাতে চায়। পারস্পরিক সহযোগিতায় এগিয়ে আসে অন্যের যে কোন বিপদে। বিপদে অন্যের পাশে দাঁড়ানো এমন মহৎ কাজ আর নেই। তাই বলা হয়েছে, আপনা রাখিলে ব্যর্থ জীবন সাধনা জনম বিশ্বের তার পরার্থে কামনা। মানুষ একে অপরের সুখ দুঃখের সাথী। একে অন্যের জন্য। এ প্রসঙ্গে কবি কামিনী রায় বলেছেন, সকলের তরে সকলে আমরা প্রত্যেকে আমরা পরের তরে। মানুষ মানুষের জন্য। এমন এক বিরল দৃষ্টান্ত হয়ে রইলেন অটোরিক্সা চালক সারোয়ার হোসেন। গত ১৪ আগস্ট রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় ধামাইখালে কয়েক তরুণ গোসল করতে যান। সাব্বির নামে এক তরুণ স্রোতের তোরে গভীর পানিতে চলে গেলে তাকে বাঁচাতে গিয়ে রাজু পা-ে নামে আরেক যুবক ডুবে যেতে থাকেন। দুই তরুণের বাঁচাও বাঁচাও আর্তনাদ শুনে তীরে থাকা সারোয়ার হোসেন খালে ঝাঁপ দিয়ে তাদের উদ্ধার করলেও নিজে উঠতে পারেননি। উঠে আসেন লাশ হয়ে। আমাদের সমাজে যখন মানুষের প্রতি মানুষের অমানবিক আচরণের মহোৎসব চলছে, এমনি সময়ে নিজের জীবন বিসর্জন দিয়ে মৃত্যু পথযাত্রী দুই তরুণকে বাঁচিয়ে মানবতার এক মহৎ দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন সারোয়ার হোসেন। নেত্রকোনা থেকে
×