ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দবির বয়াতি

অপরাজেয় কুস্তিগীর ইচো

প্রকাশিত: ০৬:৩৫, ২৪ আগস্ট ২০১৬

অপরাজেয় কুস্তিগীর ইচো

ক্রীড়ায় কিংবা যে কোন জায়গাতেই নারীদের উৎসাহ দেয়ার জন্য ৩২ বছর বয়সী জাপানের কুস্তিগীর কাওরি ইচোর ইতিহাসই যথেষ্ট। কোন মহিলা কুস্তিগীর কিংবা অলিম্পিক ইতিহাসেই কোন ক্রীড়ায় মহিলা কোন এ্যাথলেট টানা চার গেমসে চারটি স্বর্ণপদক জিততে পারেননি। কিন্তু জাপানের এ কুস্তিগীর তা করে দেখালেন। রিও অলিম্পিকেও থাকলেন অপরাজেয়। তাকে দমানো গেল না। ফ্রিস্টাইল এ কুস্তিগীর রিও অলিম্পিকে মহিলাদের ৫৮ কেজি শ্রেণীর কুস্তিতে স্বর্ণ জিতেছেন ইচো। আগের তিন অলিম্পিকেও তিনি স্বর্ণ জিতেছিলেন। গত একযুগ ধরেই অলিম্পিকে কুস্তির সম্রাজ্ঞী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি। এছাড়া যে কোন ক্রীড়ার ক্ষেত্রেই কোন নারী এ্যাথলেট টানা চার অলিম্পিকের ব্যক্তিগত ইভেন্টে স্বর্ণ জিততে পারেননি। তাই নতুন এক ইতিহাসের জন্ম দিলেন ৩২ বছর বয়সী এ জাপানী নারী। ইচো এবার শুরু থেকেই ছিলেন ফেবারিট। কারণ, ২০০৪ সালে এথেন্স অলিম্পিকে স্বর্ণ জিতেছিলেন তিনি। সেটা ধরে রাখেন ২০০৮ সালে বেইজিংয়ে এবং ২০১২ সালে লন্ডনে। অবশ্য সে তিনটি অলিম্পিকে ইচো অংশ নিয়েছিলেন ৬৩ কেজি শ্রেণীতে। কিন্তু এখন বয়স যেমন বেড়েছে তেমনি স্বাস্থ্যের কিছুটা ঘাটতি হয়েছে। তাই এবার ৫৮ কেজি শ্রেণীতে অংশ নিয়েছেন ইচো। কিন্তু আগের তিন অলিম্পিকে অংশ নিয়ে যে অপ্রতিরোধ্য নৈপুণ্য দেখিয়েছিলেন সেটার কারণেই এবারও ছিলেন ফেবারিট। কারণ আছে আরও। ২০০২ বিশ্ব আসরে প্রথম স্বর্ণপদক জিতেছিলেন ৬৩ কেজি শ্রেণীতে। এরপর এই একই ক্যাটাগরির লড়াইয়ে তিনি আরও ৭ বার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। ২০১৪ ও ২০১৫ বিশ্ব আসরে ৫৮ কেজি শ্রেণীতে তিনি স্বর্ণপদক জয় করে এই ক্যাটাগোরিতেও নিজেকে দুর্ধর্ষ হিসেবে প্রমাণ করেছেন। এ বছর গোল্ডেন গ্রাঁ প্রিঁ ইভেন্টে অবশ্য হতাশ করেছিলেন ইচো। দুর্ভাগ্যজনকভাবে রৌপ্য জিতেছিলেন। ওই হারের আগ পর্যন্ত গত ১৩ বছরের ক্যারিয়ারে ১০ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইচো টানা ১৮৯ ম্যাচ জিতেছিলেন এ মহিলা কুস্তিগীর। এ কারণে জাপান প্রত্যাশায় ছিল ইচোর মাধ্যমে আরেকটি স্বর্ণপদক রিও অলিম্পিক থেকে সংগ্রহ করার। এবার অলিম্পিকে প্রতিযোগিতার মঞ্চে নেমেই প্রতিপক্ষকে ১১-০ স্কোরে পরাভূত করে নিজের সামর্থ্য দেখান। কোয়ার্টার ফাইনালে অবশ্য ঘাম ঝরাতে হয়েছে জেতার জন্য। কোনক্রমে তুরস্কের প্রতিদ্বন্দ্বী এলিফ জালেকে ৩-১ ব্যবধানে হারিয়ে সেমিতে ওঠেন। সেমিতে আবারও দুরন্ত ইচোর কাছে পাত্তাই পাননি আজারবাইজানের জুলিয়া র‌্যাটকেভিচকে ১০-০ ব্যবধানে বিধ্বস্ত করে ফাইনালে ওঠেন। তবে দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচে রাশিয়ার ভ্যালেরিয়া কবলোভা ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে গিয়েছিলেন। বার বার চেষ্টা করেও পয়েন্ট পাচ্ছিলেন না ইচো। ম্যাচ শেষ হওয়ার মাত্র ৫ সেকেন্ড আগে একইসঙ্গে দুই পয়েন্ট অর্জন করে ৩-২ ব্যবধানের শ্বাসরুদ্ধকর জয় পান ইচো। স্বর্ণ জিতে হয়ে যান ইতিহাস।
×