ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

নোয়াখালীতে প্রকাশ্য সালিশে স্কুলছাত্রীকে পেটালেন ইউপি চেয়ারম্যান

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ২৪ আগস্ট ২০১৬

নোয়াখালীতে প্রকাশ্য সালিশে স্কুলছাত্রীকে পেটালেন ইউপি চেয়ারম্যান

নিজস্ব সংবাদদাতা, নোয়াখালী, ২৩ আগস্ট ॥ নোয়াখালীর সুবর্ণচরে এক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মুজাম্মেল হোসেনের বিরুদ্ধে সালিশের নামে শতাধিক লোকের সামনে প্রকাশ্যে দশম শ্রেণীর এক স্কুলছাত্রীকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে। সোমবার রাত নয়টার দিকে পরিষদে চেয়ারম্যানের সভাকক্ষে এ ঘটনা ঘটে। পিটুনিতে ওই ছাত্রী গুরুতর আহত হন এবং ঘটনাস্থলে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে রাত দশটার দিকে পরিষদ থেকে ওই ছাত্রীকে তার বাবা-মা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। বর্তমানে সে ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। পিটুনির শিকার ওই ছাত্রীর নাম রাবেয়া বেগম (১৫)। সে চরবাটা বালিকা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী। তবে স্কুলছাত্রীকে পিটানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন চেয়ারম্যান মুজাম্মেল হোসেন। মঙ্গলবার তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। আমি তো আদালত করি শনিবার। তবু বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নেবেন।’ ছাত্রীর বাবা চরবাটা ইউনিয়নের মধ্যচরবাটা গ্রামের মোঃ হানিফ বলেন, পারিবারিক বিষয় নিয়ে তাদের বাড়ির আরেক পক্ষের সঙ্গে বিরোধ ও ঝড়গা-ঝাটি চলছিল। বিষয়টি নিয়ে প্রতিপক্ষ চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে অভিযোগ করলে তিনি গত সোমবার রাতে সালিশ বৈঠক ডাকেন। রাত নয়টার দিকে তিনি তার স্ত্রী খতিজা খাতুন, শ্যালিকা শামছুন নাহার পরিষদ কার্যালয়ে যান। তিনি জানান, পরিষদের কক্ষে ঢুকতেই চেয়ারম্যান কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাদের দিকে তেড়ে এসে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকেন এবং জানতে চান মেয়ে রাবেয়াকে কেন সঙ্গে নিয়ে যাননি। স্কুল পড়ুয়া মেয়ের পরীক্ষার কারণে তাকে নেয়া হয়নি জানালে চেয়ারম্যান তাৎক্ষণিক চৌকিদার পাঠিয়ে তার মেয়েকে বাড়ি থেকে তুলে পরিষদে নিয়ে আসেন। মোঃ হানিফ অভিযোগ করেন, মেয়েকে পরিষদে আসামাত্র চেয়ারম্যান লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি তাকে পেটাতে থাকেন। এ সময় তিনি, তার স্ত্রী ও শ্যালিকা অনেক আকুতি-মিনতি করেও মেয়েকে রক্ষা করতে পারেননি। একপর্যায়ে চেয়ারম্যানের পিটুনিতে মেয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এ সময় তারা হাসপাতালে নিতে চাইলে চেয়ারম্যানের লোকজন বাধা দেন। পরে পরিষদ থেকে চেয়ারম্যান চলে গেলে মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় থানায় মামলা না করতে তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করে মোঃ হানিফ বলেন। তারপরও তিনি অভিযোগ নিয়ে থানায় যাবেন বলে জানান। এ বিষয়ে সুবর্ণচরের চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ নিজাম উদ্দিন বলেন, তিনি বিষয়টি জানেন না। অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×