ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ইয়াসমিন ট্র্যাজেডি দিবস আজ

প্রকাশিত: ০৪:১০, ২৪ আগস্ট ২০১৬

ইয়াসমিন ট্র্যাজেডি দিবস আজ

স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর ॥ ইয়াসমিন ধর্ষণ ও হত্যা ট্র্যাজেডি দিবস আজ। ২১ বছর আগে ১৯৯৫ সালের এই দিনে দিনাজপুরে পুলিশী হেফাজতে ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হয় কিশোরী ইয়াসমিন। এ ঘটনায় উত্তাল হয়ে পড়ে দিনাজপুর। পুলিশী হেফাজতে ইয়াসমিন ধর্ষণ ও হত্যার বিচার চাইতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয় সামু, সিরাজ ও কাদের নামে ৩ জন। আহত হয় আরও শতাধিক মানুষ। পরবর্তীতে বিক্ষুব্ধ জনতা দিনাজপুর কোতোয়ালি থানা, ৩টি পুলিশ ফাঁড়ি, কাস্টমস গোডাউন, প্রেসক্লাব, ৪টি পত্রিকা অফিসসহ বেশ কিছু স্থাপনা ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করে। ২৪ আগস্ট এই দিনটি নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস হিসেবে পালন করে আসছে বিভিন্ন সংগঠন। কিন্তু নারী নির্যাতন এখনও বন্ধ হয়নি। এমন মন্তব্য নিহত ইয়াসমিনের মা ও নারী সমাজের। ১৯৯৫ সাল। ২৪ আগস্ট। স্থান দশ মাইল মোড়। সময় তখন ভোর ৪টা। দিনাজপুর শহর অভিমুখে ফিরতে অপেক্ষমাণ কিশোরী ইয়াসমিন। ফজরের নামাজ পড়তে বের হওয়া স্থানীয় মুসল্লিরা নিরাপদে যেতে তাকে তুলে দিলেন একটি পুলিশ ভ্যানে। তারা কোতোয়ালি পুলিশকে অনুরোধ করলেন দিনাজপুরে পৌঁছে দিতে। কিন্তু পুলিশ ভ্যানে ওঠে ইয়াসমিনকে বিদায় নিতে হয় পৃথিবী থেকে। দশ মাইল থেকে দিনাজপুর শহরে আসার পথে ব্র্যাক স্কুলের সামনে ভোরের দিকে পুলিশ ভ্যানে উপস্থিত ৩ সদস্য এএসআই মইনুল, কনস্টেবল সাত্তার ও গাড়িচালক অমৃতলাল শ্লীলতাহানি ঘটিয়ে ইয়াসমিনকে চলন্ত পিকআপ ভ্যান থেকে ছুঁড়ে ফেলে দিলে তার মৃত্যু ঘটে। দিনাজপুর থেকে নিরাপত্তাজনিত কারণে ইয়াসমিন হত্যা মামলাটি স্থানান্তর করা হয় রংপুরে। রংপুর বিশেষ আদালতে ইয়াসমিন হত্যা মামলার সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে ৩ পুলিশ সদস্যকে ফাঁসি দেয়া হয়। উপমহাদেশের ইতিহাসে দোষী পুলিশদের ফাঁসিতে মৃত্যু কার্যকরের ঘটনা এটাই প্রথম। ইয়াসমিনের স্মরণে দিনাজপুরের দশ মাইল এলাকায় তৈরি করা হয়েছে ইয়াসমিন সরণি। দিবসটি এলেই দিনাজপুর শেখ জাহাঙ্গীর গোরস্তানে ইয়াসমিনের কবরটি চুনকাম করা হলেও ইয়াসমিন ঘটনায় নিহত সামু, কাদের ও সিরাজের স্মৃতিফলকগুলো শহর থেকে হারিয়ে গেছে। দিবসটি পালনে ইয়াসমিনের পরিবার এবং বিভিন্ন সংগঠন দিনব্যাপী দোয়া মাহফিল, কবর জিয়ারত ও আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করেছে।
×