ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ফেলপস-বোল্টের বিদায়ে ঔজ্জ্বল্য হারাবে অলিম্পিক...

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ২৩ আগস্ট ২০১৬

ফেলপস-বোল্টের বিদায়ে ঔজ্জ্বল্য হারাবে অলিম্পিক...

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শেষ হয়ে গেল বিশ্বের সর্ববৃহৎ ক্রীড়াযজ্ঞ অলিম্পিক গেমস। এবারের আসরে ব্যক্তিগতভাবে আলো ছড়িয়েছেন অনেকে। তবে সবাইকে ছাপিয়ে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাঁতারু মাইকেল ফেলপস ও জ্যামাইকান দৌড়বিদ উসাইন বোল্ট। দু’জনই এবার শেষবারের মতো খেলেছেন অলিম্পিক। ২০২০ টোকিও অলিম্পিকে আর দেখা যাবে না সর্বকালের অন্যতম সেরা দুই অলিম্পিয়ানকে। এ কারণে অলিম্পিকে শূন্যতা সৃষ্টি হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ফেলপস ও বোল্টকে অলিম্পিক গেমসের ‘আইকন’ খেতাবে ভূষিত করেছেন আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির (আইওসি) সভাপতি মাস বাখ। রিও আসরে তারা ঔজ্জ্বল্য ছড়ালেও আগামীতে কিভাবে পূর্ণ হবে তাদের ঘাটতি এ নিয়ে চলছে এখন বিস্তর আলোচনা। এই মুহূর্তে এ দু’জনের মতো স্পোর্টিং পাওয়ার বা ক্যারিশমার ধারে কাছেও নেই কোন এ্যাথলেট। সাঁতার ও এ্যাথলেটিক ট্র্যাক থেকে এই দুই ক্রীড়াবিদ মিলে জয় করেছেন ৩২ স্বর্ণপদক। সফলতা অর্জনের মাধ্যমে বোল্ট নিজেকে বক্সর মোহাম্মদ আলীর মতো ‘কিংবদন্তি’ হওয়ার দাবি করেছেন। কিন্তু তিন অলিম্পিক আসর থেকে ট্র্যাকে নেমে তার মতো ৯ স্বর্ণপদক ভবিষ্যতে কেউ পাবে কিনা সেটি নিয়ে যথেষ্ট সংশয় আছে। একবার অবসরের ঘোষণা দেয়ার পরও ৩১ বছর বয়সে ফের পুলে ফিরে রিও অলিম্পিকে ৫ স্বর্ণপদক জয় করেছেন মার্কিন সাঁতারু ফেলপস। আইওসি সভাপতি বাখ বলেন, এখানে অংশগ্রহণের আগে থেকেই অনেক এ্যাথলেট নিজেদের আইকন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এখানে এসে বোল্ট ও ফেলপস ‘আইকন’ হিসেবে নিজেদের অবস্থানকে আরও মজবুত করেছেন। ২০০৮ সালের বেজিং অলিম্পিক থেকে শুরু করে লন্ডন অলিম্পিক এবং সবশেষ রিও অলিম্পিকে বোল্ট ও ফেলপস অগণিত ভক্ত সৃষ্টি করেছেন, সৃষ্টি করেছেন দারুণ এক উন্মাদনা। ২০০০ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে ফেলপস সাঁতারের ২০০ মিটার বাটারফ্লাইয়ে অংশ নিয়েছিলেন। আর ২০০৪ সালে বোল্ট ২০০ মিটার স্প্রিন্টে অংশ নিয়ে পঞ্চম স্থান লাভ করেছিলেন। ফেলপস ২০০৪ সালের এথেন্স অলিম্পিকে অংশ নিয়েই চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেন মার্ক স্পিৎজের এক গেমসে ৭ স্বর্ণপদক জয়ের রেকর্ডকে। তবে শেষ পর্যন্ত ৬ সোনা ও একটি ব্রোঞ্জপদক জয় করেন তিনি। বেজিং অলিম্পিকে এসেই ফেলপস সেই রেকর্ডটি শেষ পর্যন্ত ভাঙতে সক্ষম হন। ৮ ইভেন্টের সবকটিতেই স্বর্ণপদক জয় করেন মার্কিন সাঁতারু। বার্ডনেস্টে অনুষ্ঠিত ওই আসরে ১০০, ২০০ ও ৪ গুনিতক ১০০ মিটার স্প্রিন্টের সব স্বর্ণপদক জয়ের মধ্য দিয়ে সবার মধ্যে বৈদ্যুতিক শিহরণ জাগাতে সক্ষম হন জ্যামাইকান স্প্রিন্টার বোল্ট। ওই আসরেই কিংবদন্তির মর্যাদা পান তিনি। লন্ডন ও রিওতেই শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখেন তিনি। ক্যারিয়ারের পঞ্চম অলিম্পিকে ফেলপস যে কীর্তি প্রদর্শন করেছেন তা সবার জন্যই দৃশ্যমান। আরও ৫ স্বর্ণপদক জয় করে ফেলপস অলিম্পিক থেকে সর্বমোট ২৩ স্বর্ণপদক জয়ের বিরল গৌরব অর্জন করেন। অলিম্পিকে তার সর্বমোট পদক সংখ্যা এখন ২৮। আর ঘোষণা দিয়েই এ্যাথলেটিক ট্র্যাকের তিন আকর্ষণীয় ইভেন্টের সবকটিতে স্বর্ণপদক জয়ের অন্যন্য দৃষ্টান্ত গড়েছেন বোল্ট। ১০০, ২০০ ও ৪ গুনিতক ১০০ মিটার ইভেন্টে ফের স্বর্ণপদক জয়ের মাধ্যমে ‘ট্রিপল ট্রিপল’ অর্জনের পর নিজেকে ‘কিংবদন্তি অলিম্পিয়ান’ হিসেবে ঘোষণা করেন বোল্ট। আন্তর্জাতিক এ্যাথলেটিকস ফেডারেশনের সভাপতি সেবাস্টিয়ান কো বোল্টের অবসর প্রসঙ্গে বলেন, এটা ঠিক যে তার অনুপস্থিতিতে বিশাল এক শূন্যতার সৃষ্টি হবে। তবে সেটি অপূরণীয় নয়। এদিকে অলিম্পিক মাতিয়ে যাওয়া বোল্ট শীঘ্রই হয়ত বিয়ের পিঁড়িতে বসতে যাচ্ছেন। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবরে এমনই জানা গেছে। শোন যাচ্ছে, ট্র্যাকে সবার ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকা বোল্টের মন জয় করে নিয়েছেন এক ‘স্পেশ্যাল লেডি’। জ্যামাইকার জনপ্রিয় মডেল ক্যাসি বেনেটের সঙ্গে রোম্যান্সের সেই ঘটনা ফাঁস করে দিয়েছেন বোল্টেরই বড় বোন ক্রিস্টিন বোল্ট হিল্টন। তিনি জানিয়েছেন, দেশে ফিরেই ক্যাসিকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে চলেছেন ভাই বোল্ট। গত তিন বছর ধরে ক্যাসি বেনেটের সঙ্গে গোপনে ডেটিং করছেন বোল্ট। লন্ডনের এক পত্রিকায় দেয়া সাক্ষাতারে এমনটা জানিয়ে ক্রিস্টিন বলেছেন, আমি ওর সঙ্গে দেখাও করেছি। খুব মিষ্টি মেয়ে। বোল্টের পারফেক্ট পার্টনার। আমি যত দূর জানি, দেশে ফিরেই ও ক্যাসির কাছে বিয়ের প্রস্তাব দেবে।
×