ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আজ থেকে এলপিজি সিলিন্ডার পরীক্ষা

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ২৩ আগস্ট ২০১৬

আজ থেকে এলপিজি সিলিন্ডার পরীক্ষা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দুর্ঘটনা প্রতিরোধে আজ মঙ্গলবার থেকেই এলপিজি সিলিন্ডার পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) সিলিন্ডার পরীক্ষা করা হবে। যদিও পর্যায়ক্রমে বেসরকারী কোম্পানির সিলিন্ডারগুলোও পরীক্ষা করার বিষয়ে সোমবার এক বৈঠকে জ্বালানি মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রতি পাঁচ বছর পর পর সিলিন্ডার পরীক্ষা করার বিধান থাকলেও তা কেউ মানে না। এতে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। বিপিসির তরফ থেকে বলা হচ্ছে তাদের সিলিন্ডারের মান ভাল হলেও এর অনেকাংশই এখন বেসরকারী কোম্পানির হাতে চলে গেছে। এই প্রক্রিয়ায় বিপিসির সিলিন্ডারের মান নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। সবশেষ বগুড়ায় বিপিসির সিলিন্ডার ট্রাক থেকে নামানোর সময় বিস্ফোরণ ঘটে। শুধু বগুড়াতেই নয়, দেশের কোথাও না কোথাও রোজই এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে। সোমবার জ্বালানি মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে সিলিন্ডারগুলো আজ মঙ্গলবার থেকেই পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বৈঠকে বিপিসির পরিচালক (অপারেশন) আলী রেজাকে সিলিন্ডারগুলো পরীক্ষার জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়। বৈঠকে মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ ছাড়াও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের পর বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, মঙ্গলবার থেকেই সিলিন্ডার পরীক্ষা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে যেসব সিলিন্ডার মানের প্রশ্নে উত্তীর্ণ হতে পারবে না সেগুলো সরিয়ে ফেলা হবে। সারাদেশে বিপিসির পাঁচ লাখ সিলিন্ডারের বিপরীতে চট্টগ্রামে একটি টেস্টিং ল্যার রয়েছে। সারাদেশ ঘুরে এসব সিলিন্ডার কেবল চট্টগ্রামে আসলেই তা পরীক্ষার আওতায় আনা হয়। চট্টগ্রাম ইস্টার্ন রিফাইনারি এবং সিলেটে আরপিসিএলের কারখানা থেকে বিপিসির বোতলগুলোতে এলপিজি ভর্তি করা হয়। বিপিসির পরিচালক (অপারেশন) আলী রেজা জনকণ্ঠকে বলেন, আমরা আশা করছি আমাদের সিলিন্ডারগুলো দুই মাসের মধ্যে পরীক্ষা শেষ করতে পারব। পরীক্ষার পর প্রতিটি সিলিন্ডারের গায়ে ট্যাগ লাগিয়ে দেয়া হবে। আমাদের বিপিসির ১০ থেকে ১৫ বছরের পুরাতন সিলিন্ডার রয়েছে বলে জানান তিনি। সাধারণত একটি সিলিন্ডারের আয়ুষ্কাল ২০ বছর জানিয়ে তিনি বলেন, এজন্য প্রতিটি সিলিন্ডারকে প্রতি পাঁচ বছরে একবার পরীক্ষা করতে হয়। জানা গেছে সারাদেশেই এলপিজির ক্ষেত্রে একটি মধ্যসত্ত্বভোগী গোষ্ঠী গড়ে উঠেছে। তারা ৩৫ কেজির বড় সিলিন্ডার করে। ছোট সিলিন্ডারে রিফিল করে দেয়। চোরাইভাবে কোন কারিগরি নিয়ম না মেনেই সিলিন্ডার রিফিল করায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে গৃহিণীর জীবন। বাজারে কিছুটা কম দামে এসব সিলিন্ডার পাওয়া যায়। একজন বিক্রিতা জানান, সাধারণত একটি কোম্পানির সিলিন্ডার যে দামে বিক্রি করা হয় তার থেকে ১০০ বা ১৫০ টাকা কমে অবৈধ রিফিলকারীরা বিক্রি করেন। কিন্তু তাতে দুই থেকে তিন কেজি গ্যাসও কম থাকে। যেহেতু গ্রাহক দাম কম পায় সেহেতু কম দাম পেলেও এসব সিলিন্ডার কিনে প্রতারিত হওয়ার পাশাপাশি ঝুঁকি বহন করে। সিলিন্ডার পরীক্ষায় ব্যয় হওয়া অর্থ স্ব স্ব কোম্পানিকে বহন করতে হবে। এর আগে উত্তরাঞ্চলে বিপিসির এলপিজি সিলিন্ডারের ৯০ শতাংশই ত্রুটিপূর্ণ বলে জ্বালানি মন্ত্রণালয়কে সতর্ক করে চিঠি দেয় বিস্ফোরক অধিদফতর। গত শনিবার সিলেট থেকে তিনটি ট্রাকে করে ৮৭৮টি সিলিন্ডার বগুড়া ডিপোতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ট্রাক থেকে নামানোর সময় বিকট শব্দে ৩০০ সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়। এরপর সোমবার এই আদেশ দিল জ্বালানি মন্ত্রণালয়। নিয়মানুযায়ী বিস্ফোরক অধিদফতরের এসব দেখভালের কথা থাকলেও তাদের নিজস্ব কোন টেস্টিং ল্যাব নেই।
×