ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

চার নারী জঙ্গীকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে

১৬ দিন রিমান্ডের পর কারাগারে পাঠানো হলো হাসনাতকে

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ২৩ আগস্ট ২০১৬

১৬ দিন রিমান্ডের পর কারাগারে পাঠানো হলো হাসনাতকে

শংকর কুমার দে ॥ রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তরাঁয় জঙ্গী হামলার ঘটনায় দুই দফায় ১৬ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে জঙ্গী হামলার মাস্টারমাইন্ড নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হাসনাত করিমকে। রাজধানীর কল্যাণপুরে নিহত ৯ জঙ্গীর মধ্যে ৭ জঙ্গীর পরিচয় নিশ্চিত হয়ে লাশ হস্তান্তরের জন্য স্বজনদের ডিএনএ প্রোফাইল সংগ্রহ করেছে পুলিশ। কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় ঈদের জামাতের দিনে জঙ্গী হামলায় এখনও আট থেকে দশজন পলাতক জঙ্গীর শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা প্রগতিশীল লেখক ও ব্লগার অভিজিত হত্যাকা-ের ঘটনায় ৭টি সিসিটিভি ভিডিওতে দেখা যাওয়া ৫ জঙ্গীকে শনাক্ত করতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে দ্রুত গ্রেফতারের জন্য মাঠে নেমেছে গোয়েন্দারা। চার নারী শিক্ষার্থী জঙ্গীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে বাংলাদেশ ইসলামিক ইউনিভার্সিটির ছাত্র ফুয়াদ আল মাহাদীর নামে আরেক জঙ্গীকে গ্রেফতার করে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ খবর জানা গেছে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তরাঁয় জঙ্গী হামলার ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা মামলায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক হাসনাত করিমকে দুই দফায় ১৬ দিন রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করা হয় সোমবার। পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নতুন করে আর রিমান্ড চায়নি। তার জামিনের আবেদন করা হলে তা নামঞ্জুর করে আগামী ২৪ আগস্ট শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছে আদালত। আদালতের নির্দেশে হাসনাত করিমকে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। সোমবার দ্বিতীয় দফা আট দিনের রিমান্ড শেষে হাসনাত করিমকে ঢাকা মহানগর হাকিম আহসান হাবীবের আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাউন্টার টেররিজমের পরিদর্শক হুমায়ুন কবীর। এ সময় তাকে মামলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারাগারে রাখার আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এর আগে ১৩ আগস্ট হাসনাতকে আদালতে হাজির করে গুলশানের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম এমদাদুল হক তার আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন। গত ৩ আগস্ট ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় হাসনাতকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন কাউন্টার টেররিজমের পরিদর্শক হুমায়ুন কবীর। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম নূরনাহার ইয়াসমীন আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গত ২ আগস্ট সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে গুলশান এলাকা থেকে হাসনাত করিমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই গ্রেফতার করা হয়েছে হাসনাত করিমকে। প্রসঙ্গত, গত ১ জুলাই রাতে জঙ্গীরা গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর সড়কের পাশে হলি আর্টিজান রেস্তরাঁয় হামলা চালায়। পরদিন সকালে সেনা কমান্ডোরা অভিযান চালিয়ে হলি আর্টিজান থেকে নারী, শিশুসহ ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করে। তাদের মধ্যে ৮ জনকে ডিবির কার্যালয়ে নেয়া হয়। সেখানে হাসনাত করিম ও তাহমিদ হাসিব খানকে ছাড়া অন্যদের জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেয়া হয়। গত ৮ জুলাই পুলিশ হাসনাত ও তাহমিদকে ছেড়ে দেয়ার কথা জানালেও তারা বাসায় ফিরে যাননি বলে তাদের পরিবার জানিয়েছিল। গুলশানের হলি আর্টিসান রেস্তরাঁয় হামলা চালিয়ে বিদেশীসহ ২০ জনকে হত্যা করে জঙ্গীরা। এ সময় পাঁচ জঙ্গীসহ ছয়জন অভিযানে নিহত হয়। ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হাসনাত করিম ও কানাডার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তাহমিদ হাসিব খানকে নজরে রাখা হয়েছিল। তাহমিদ হাসিব খানকে দুই দফায় ১৪ দিনের রিমান্ড শেষে গত শনিবার আদালতে হাজির করার পর কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মাসুদুর রহমান বলেছেন, হাসনাত করিমকে গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তরাঁয় জঙ্গী হামলা মামলার প্রথম আসামি হিসেবে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। ডিএনএ প্রোফাইল সংগ্রহ ॥ রাজধানীর কল্যাণপুরে নিহত ৯ জঙ্গীর মধ্যে ৭ জনের স্বজনদের ডিএনএ প্রোফাইল সংগ্রহ করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি)। সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবে তাদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে। নিহতদের ডিএনএ প্রোফাইলের সঙ্গে স্বজনদের ডিএনএ প্রোফাইল মিলিয়ে তাদের পরিচয় নিশ্চিত করা হবে। পরে স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে। নিহত জঙ্গীরা হচ্ছেÑ দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ থানার বল্লভপুরের সোহরাব আলীর ছেলে আব্দুল্লাহ, টাঙ্গাইলের মধুপুরের নূরুল ইসলামের ছেলে আবু হাকিম নাইম, ঢাকার ধানম-ির রবিউল হকের ছেলে তাজ-উল-হক রাশিক, সাতক্ষীরার তালা থানার ওমরপুরের নাসির উদ্দিন সরদারের ছেলে মতিয়ার রহমান, ঢাকার গুলশানের সাইফুজ্জামান খানের ছেলে আকিফুজ্জামান খান, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাসিন্দা তৌহিদ রউফের ছেলে সাজাদ রউফ অর্ক, নোয়াখালীর সুধারাম থানার মাইজদী এলাকার আব্দুল কাইয়ুমের ছেলে জোবায়ের হোসেন, রংপুরের পীরগাছা থানাধীন পুরশুরা এলাকার শাহজাহান কবিরের ছেলে রায়হান কবির ওরফে তারেক ওরফে ফারুক। নিহত জঙ্গীদের মধ্যে একজনের পরিচয় এখনও শনাক্ত হয়নি। নিহত ৮ জঙ্গীর মধ্যে রায়হান কবির ওরফে তারেক ছাড়া বাকিদের স্বজনদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক ল্যাবে তাদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এসব নমুনা নিহত জঙ্গীদের নমুনার সঙ্গে মিলিয়ে পরিচয় নিশ্চিত করা হবে। পরে স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গত ২৬ জুলাই ভোরে কল্যাণপুরে একটি জঙ্গী আস্তানায় অভিযান চালায় পুলিশ। অভিযানে ৯ জঙ্গী নিহত হয়। গোয়েন্দা সংস্থার একজন কর্মকর্তা জানান, রাজধানীর গুলশান ও কল্যাণপুরে জঙ্গী হামলা ও জঙ্গী আস্তানার অভিযানের তদন্তে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। তবে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় ঈদের জামাতের দিন জঙ্গী হামলার ঘটনায় দুই জঙ্গীর একজন ঘটনাস্থলে নিহত ও আরেকজন বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার ঘটনা ছাড়া আর কোন হামলাকারী জঙ্গী গ্রেফতার হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। শোলাকিয়ায় জঙ্গী হামলার ঘটনায় আরও অন্তত আট থেকে দশ জঙ্গী জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন গোয়েন্দারা। হামলাকারী জঙ্গীদের সাংগঠনিক নাম (ছদ্মনাম) পাওয়া গেলেও সবার প্রকৃত পরিচয় শনাক্ত হয়নি। আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের জঙ্গী ॥ তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অভিজিত রায় হত্যাকা-ে সরাসরি অংশ নিয়েছে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের ৬ জঙ্গী। তারা আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য হলেও তাদের সঙ্গে গুলশান, শোলাকিয়া ও কল্যাণপুরে জেএমবি নামের জঙ্গীদের সঙ্গে যোগসূত্র রয়েছে। অভিজিত হত্যার ঘটনার পর ৭ সিসিটিভি ফুটেজে জঙ্গীদের দেহের গড়ন, বয়স ইত্যাদির দৃশ্য দেখা গেলেও পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি বলে জানা গেছে। তবে তদন্তকারীদের ধারণাÑ গুলশান, কল্যাণপুর ও শোলাকিয়ায় যারা জঙ্গী হামলা ও আস্তানায় ছিল তারা এবং অভিজিত রায় হত্যাকারী জঙ্গীরা ভিন্ন নামের জঙ্গীগোষ্ঠীর পরিচয়ের হলেও তারা একই গ্রুপের জঙ্গী। প্রগতিশীল লেখক, ব্লগার, প্রকাশক শ্রেণীর ব্যক্তিদের যারা হত্যা করেছে তারা আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের জঙ্গীগোষ্ঠীর ব্যানারে হামলা করেছে। আর গুলশান, কল্যাণপুর ও শোলাকিয়ায় জঙ্গী হামলা ও আস্তানা জেএমবির জঙ্গীগোষ্ঠীর ব্যানারে গড়ে তুলেছে। জেএমবি বা আনসারুল্লাহ বাংলা টিম নামের ব্যানারে গুলশান, কল্যাণপুর, শোলাকিয়ায় জঙ্গী হামলা ও অভিজিত হত্যাকা- সংঘটিত করা হলেও মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠের মতোই তাদের শিকড় একই জায়গায় বলে মনে করেন গোয়েন্দারা। চার নারী শিক্ষার্থী জঙ্গীর তথ্যানুযায়ী গ্রেফতার আরেক জঙ্গী ॥ মানারাত বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের চার নারী শিক্ষার্থী জঙ্গীর দ্বিতীয় দফায় ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হলে তাদের দেয়া তথ্যানুযায়ী গ্রেফতার করা হয়েছে ফুয়াদ আল মাহাদীর নামে আরেক জঙ্গীকে। গ্রেফতারের পর ফুয়াদ আল মাহাদীরকে আদালতের নির্দেশে ৫ দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সক্রিয় সদস্য হিসেবে গ্রেফতার হওয়া ওই চার নারী হচ্ছেনÑ মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ফার্মাসি বিভাগের শিক্ষার্থী আকলিমা রহমান মনি, খাদিজা পারভীন মেঘনা ও ইসরাত জাহান এবং ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) থেকে এমবিবিএস পাস করা চিকিৎসক ঐশী। তাদের দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী অনুযায়ী গ্রেফতার করা ফুয়াদ আল মাহাদী বাংলাদেশ ইসলামিক ইউনিভার্সিটির ছাত্র। ওই চার নারীর রিমান্ডে দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ২১ আগস্ট রবিবার কলাবাগানের লেকসার্কাস এলাকার ফ্ল্যাট ১/বি, ২৬/১ থেকে গ্রেফতার করা হয় ফুয়াদ আল মাহাদীকে। তাকেও জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সদস্য বলে দাবি করেছে র‌্যাব। রবিবার বিকেল সোয়া তিনটায় ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে প্রত্যেক আসামির ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন র‌্যাব-৪ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ শামসুল হক। রিমান্ডের আবেদনে বলা হয়, ওই চার নারীকে ৫ দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। মামলাটির সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাদের আরও নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। একই সঙ্গে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে গ্রেফতার হওয়া মাহাদীকেও জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন। মুক্তিযোদ্ধা পরিবার দাবি ॥ মাহাদীর রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন তার আইনজীবী। তবে চার নারী জঙ্গীর পক্ষে কোন আইনজীবীকে আদালতে দেখা যায়নি। আদালতে উপস্থিত হয়ে মাহাদীর মা সফুরা বেগম বলেন, আমার স্বামী নুরুল ইসলাম একজন মুক্তিযোদ্ধা ও লক্ষ্মীপুর জেলা কৃষক লীগের সভাপতি। তিনি লক্ষ্মীপুরের বসিকপুর স্কুল এ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ। আমার ছেলে বাংলাদেশ ইসলামিক ইউনিভার্সিটিতে ইংরেজী বিষয়ে মাস্টার্স পড়ছে। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান হয়ে আমার ছেলে জঙ্গী সংগঠনের সদস্য হতে পারে না। সে নির্দোষ। গত দুই-তিন দিন ধরে আমার ছেলের কোন সন্ধান পাইনি। সে নিখোঁজ ছিল। পরে শুনি যে সে র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়েছে। সে জঙ্গী হতে পারে না। আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে মাহাদীও দাবি করেন, তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এবং জেএমবির সদস্য ও জঙ্গী নন বলে মাহাদীর দাবি।
×