ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আইএসপি লাইসেন্স নবায়ন করা হয়নি

ইন্টারনেট সেবাদানকারী ২০৪ প্রতিষ্ঠানের সংযোগ বন্ধ হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ২৩ আগস্ট ২০১৬

ইন্টারনেট সেবাদানকারী ২০৪ প্রতিষ্ঠানের সংযোগ বন্ধ হচ্ছে

ফিরোজ মান্না ॥ দেশের ২০৪টি ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের (আইএসপি) সংযোগ বিচ্ছিন্ন হচ্ছে ২৫ আগস্ট মধ্য রাতে। লাইসেন্স নেয়ার পর থেকে এসব আইএসপি লাইসেন্স নবায়ন করেনি। তাদের কাছে সরকার বড় অংকের রাজস্ব পায়। দফায় দফায় চিঠি দেয়ার পরও লাইসেন্স নবায়নের বিষয়ে কোন গুরুত্ব দেয়নি। এ অবস্থায় গত সপ্তাহে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) আইএসপিগুলো বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিটিআরসি সূত্র জানিয়েছে, আগামী ২৫ আগস্টের মধ্যে এসব আইএসপি প্রতিষ্ঠানের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে সব ইন্টারনেট গেটওয়েগুলোকে (আইআইজি) গত মঙ্গলবার চিঠি দেয়া হয়। ২৫ আগস্ট রাত ১২টার পর কোন আইআইজি যেন তাদের সংযোগ চালু না রাখে। বিটিআরসির দেয়া নির্দেশ অমান্য করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথাও বলা হয়েছে ওই চিঠিতে। ওই সময়ের পর থেকে এসব আইএসপি ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ পাবে না। চিঠিতে আরও বলা হয়, কোনভাবেই এসব প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স নবায়নের আবেদন অনুমোদন করা হবে না। এদের বিরুদ্ধে ২০০১ সালের টেলিযোগাযোগ আইন অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিটিআরসির হিসাবে বর্তমানে নেশনওয়াইড, সেন্ট্রাল জোন, আঞ্চলিক ও মহানগরী বিভিন্ন এলাকায় এ, বি ও সি ক্যাটাগরিতে লাইসেন্সপ্রাপ্ত ৫ শতাধিক আইএসপি রয়েছে। সংযোগ বন্ধের জন্য তালিকাভুক্ত ২০৪টি আইএসপি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩৩টি নেশনওয়াইড, ২৩টি সেন্ট্রাল জোন, ১৩টি আঞ্চলিক, ৭০টি ঢাকা মহানগরী এলাকায় (এ ক্যাটাগরিভুক্ত), ২৬টি চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট মহানগরী এলাকার (বি ক্যাটাগরিভুক্ত) এবং ৩৯টি অন্যান্য সিটি কর্পোরেশন এলাকায় (সি ক্যাটাগরিভুক্ত) আইএসপি রয়েছে। আইএসপি বন্ধের কারণ সম্পর্কে বিটিআরসি সচিব সারওয়ার আলম বলেন, লাইসেন্স নেয়ার পর এই আইএসপিগুলো বিটিআরসির কাছে নিয়ম অনুযায়ী কোন তথ্য দেয়নি। তাদের কাছে বড় অংকের টাকাও আদায় হয়নি। এই আইএসপিগুলো কার কাছ থেকে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ নিচ্ছে বা কত সংখ্যক গ্রাহককে সেবা দিচ্ছে এসব কোন তথ্য তারা বিটিআরসির কাছে দেয়নি। তারা বিটিআরসিকে উপেক্ষা করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের বারবার চিঠি দেয়া হলেও ওই চিঠির কোন গুরুত্ব দেয়নি। এসব তথ্য চেয়ে কয়েক দফা চিঠি দেয়া হলেও আইএসপি প্রতিষ্ঠানগুলো তার কোন উত্তর না দেয়াতে কমিশন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার এ্যাসোসিয়েশনের (আইএসপিএবি) এক কর্মকর্তা বলেন, এসব আইএসপি প্রতিষ্ঠানগুলো বেশিরভাগই বন্ধ। ছয় মাস ধরে এদের চিঠি পাঠাচ্ছে বিটিআরসি, তবে কোন উত্তর পায়নি। তবে যেগুলো চালু রয়েছে, তারা বিটিআরসির কাছে সময় চেয়ে আবেদন করেছে। এসব আইএসপি প্রতিষ্ঠান বন্ধ হলে এ ব্যবসা ও গ্রাহকসেবায় কোন প্রভাব পড়বে না। বন্ধ করে দেয়া এক আইএসপি মালিক বলেন, তারা লাইসেন্স নেয়ার পর থেকে আইআইজির কাছ থেকে ব্যান্ডউইথ নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করতে হয়েছে। তারা যে টাকায় ব্যান্ডউইথ দিয়েছে ওই টাকায় তাদের কোন ব্যবসা হয়নি। বরং প্রতি মাসেই তাদের ব্যবসায় ভর্তুকি দিতে হয়েছে। এ বিষয়গুলো বিটিআরসির কাছে জানানো হলেও বিটিআরসি আমাদের মতো ছোট লাইসেন্সধারীদের সুবিধা দেয়ার বিষয়ে উদাসীন ছিল। লাইসেন্স নিতে কয়েক লাখ টাকা খরচ করা হলেও ব্যবসা হয়নি কোন। আমাদের পক্ষ থেকে বিটিআরসির কাছে সময় চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।
×