ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

অভিবাসন সংস্কার অগ্রাধিকার

প্রকাশিত: ০৬:২৮, ২২ আগস্ট ২০১৬

অভিবাসন সংস্কার অগ্রাধিকার

হোয়াইট হাউসে প্রবেশ করলে প্রাথমিক করণীয়গুলো কি হবে তা এখন ঠিক করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক দলের প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন। রিপাবলিকান প্রতিপক্ষ ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে স্পষ্ট ব্যবধানে এগিয়ে থাকায় হিলারি এখন ভবিষ্যত পরিকল্পনা গুছিয়ে আনার দিকে বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন। সফল প্রচারাভিযানের পাশাপাশি প্রেসিডেন্ট হিসেবে এজেন্ডাগুলো বিস্তারিত প্রণয়নের দিকে এখন হিলারি দৃষ্টি দিয়েছেন। তার এই এজেন্ডার মধ্যে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, অবকাঠামো খাতে ব্যয় বৃদ্ধি ও অভিবাসন সংস্কারের মতো বিষয়গুলো রয়েছে। জনমত জরিপের বর্তমান ধারা যদি নবেম্বরে অনুষ্ঠেয় নির্বাচন পর্যন্ত অব্যাহত থাকে তবে ট্রাম্পকে হারিয়ে হিলারিই হবেন প্রেসিডেন্ট। রিপাবলিকান প্রতিপক্ষের তুলনায় হিলারির জনসমর্থন বাড়ছে, সাম্প্রতিক জনমত সমীক্ষাগুলোতে এটি দেখা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী জানুয়ারিতে তিনি প্রেসিডেন্টের দায়িত্বের পাশাপাশি একটি ডেমোক্র্যাটিক সংখ্যাগরিষ্ঠ সিনেটও তিনি পাবেন। এসব হিসাব-নিকাশ ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে প্রত্যাশার মাত্রা বাড়াতে শুরু করেছে। ক্ষমতায় এলে দেশটির দীর্ঘদিনের অভিবাসন ব্যবস্থা সংস্কার হবে হিলারির প্রথম অগ্রাধিকার, এ কথা তিনি গত বছরই বলে রেখেছিলেন। এছাড়া কংগ্রেসের দুই দলকে সঙ্গে নিয়েই তিনি সড়ক, ব্রিজ, এয়ারপোর্ট ও রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটাবেন বলে জানিয়েছেন। সুপ্রীমকোর্টে শূন্য পূরণ তার জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হতে পারে। কারণ বিষয়টি কংগ্রেসের সঙ্গে তার প্রশাসনের সম্পর্ক নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। অভিবাসন ছাড়াও আরও যেসব আইন সংস্কার করতে চান বলে হিলারি ইতোমধ্যেই জানিয়েছেন, তার মধ্যে রয়েছে নির্বাচনী প্রচারাভিযান ব্যয় ও আগ্নেয়াস্ত্র নির্মাতাদের বিচার থেকে অব্যাহতি পাওয়ার মতো বিষয়গুলোও রয়েছে। প্রচারাভিযানকালে হিলারি জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট হলে তিনি একটি নারী-পুরুষ সমতা এবং মার্কিন জনসংখ্যার বৈশিষ্টের দিকে লক্ষ্য রেখে মন্ত্রিসভা গঠন করবেন। তার প্রশাসনের অন্যান্য পদগুলোতেও যেন এটি অনুসরণ করা হয় সেজন্য ইতোমধ্যেই লবিং শুরু হয়ে গেছে। যেহেতু ট্রাম্পের দুর্বলতাগুলোর খুব বেশি গুরুত্ব আরোপ করে এবারের নির্বাচনী প্রচারাভিযান চালানো হচ্ছে তাই হিলারির অনেক সমর্থক এটি নিয়ে উদ্বিগ্ন যে হিলারি হোয়াইট হাউসে গেলেও স্পষ্ট ম্যান্ডেট তার থাকবে না। তবে হিলারির প্রচারাভিযান টিম মনে করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রতিপক্ষকে হারানো গেলে হিলারির অবস্থান এমনিতেই শক্তিশালী হবে। কংগ্রেস তখন তার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে না। তবে হিলারির প্রচার টিমের আশাবাদ সত্ত্বেও বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করেন রিপাবলিকান সংখ্যাগরিষ্ঠ ক্যাপিটাল হিলের সঙ্গে হিলারির সম্পর্ক কি হবে এখনই বলা সম্ভব নয়। প্রেসিডেন্ট হিসেবে হিলারিকে সফল হতে হলে আইনসভার সঙ্গে সম্পর্ককে বিবেচনায় রাখতেই হবে। এছাড়া আরেকটি বিষয় হলো হোয়াইট হাউসের স্টাফ বাছাই করা। কারণ তারাই প্রেসিডেন্টের নীতি বাস্তবায়নে প্রাথমিক পর্যায়ের দায়িত্বগুলো পালন করেন। ‘তিনি সবচেয়ে কঠিন অবস্থার মুখোমুখি হবেন হোয়াইট হাউসে প্রবেশের পর,’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওবামার প্রশাসনের একজন সাবেক কর্মকর্তা এ কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি না কোন প্রেসিডেন্টই এখানে তার কাক্সিক্ষত ভাবমূর্তিটি ধরে রাখতে পারেন।’ গত সপ্তাহে হিলারি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কেন সালাজারকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের অন্তর্বর্তী পরিকল্পনা টিমের নাম ঘোষণা করেছেন। মন্ত্রিসভার সদস্য বাছাই থেকে শুরু করে হাজার হাজার অধস্তন কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেয়া হবে এই কমিটির কাজ। পিছিয়ে নেই ট্রাম্পও। তিনিও অনুরূপ একটি টিম গঠন করেছেন। জনমত সমীক্ষায় তিনি এখন হিলারির চেয়ে দুই অঙ্কের ব্যবধানে পিছিয়ে। অবস্থা এমনই দাঁড়িয়েছে যে হিলারি এখন বলতে শুরু করেছেন যে, রিপাবলিকান পার্টির মধ্যেই তার প্রতি সমর্থন বাড়ছে। -ওয়াশিংটন পোস্ট
×