ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

নাট্যপ্রদর্শনী ও স্মৃতিচারণে আবদুল্লাহ আল মামুনকে শ্রদ্ধাঞ্জলি

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ২২ আগস্ট ২০১৬

নাট্যপ্রদর্শনী ও স্মৃতিচারণে আবদুল্লাহ আল মামুনকে শ্রদ্ধাঞ্জলি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিস্তৃত এক শিল্পী জীবনকে ধারণ করেছিলেন তিনি। মঞ্চনাটক, টিভিনাটক কিংবা চলচ্চিত্র- সবখানেই ছিলেন অনবদ্য। প্রতিভার ব্যপ্তিতে প্রখ্যাত অভিনয় শিল্পীর পরিচয়কে ছাপিয়ে হয়েছিলেন গুণী নাট্যকার, নির্দেশক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা। রবিবার ছিল সেই বরেণ্য শিল্পব্যক্তিত্ব আবদুল্লাহ আল মামুনের অষ্টম প্রয়াণবার্ষিকী। শিল্পের নিবেদনেই মৃত্যুবার্ষিকীতে তাকে জানানো হলো শ্রদ্ধাঞ্জলি। মঞ্চস্থ হলো নাটক। সেই সঙ্গে ছিল তাকে নিয়ে শিল্প-জীবনের সঙ্গীদের স্মৃতিচারণ। বৃষ্টিঝরা সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে স্মৃতিচারণ ও নাট্য প্রদর্শনীর আয়োজন করে আবদুল্লাহ আল মামুন থিয়েটার স্কুল প্রাক্তনী। মঞ্চস্থ হয় থিয়েটার স্কুল প্রাক্তনীর নিয়মিত প্রযোজনা প্রথম পার্থ। ২৫তম মঞ্চায়নের পূর্বে আবদুল্লাহ আল মামুনকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন খ্যাতিমান অভিনয়শিল্পী ফেরদৌসী মজুমদার ও আতাউর রহমান। এছাড়া একই সময়ে নাট্যশালার স্টুডিও থিয়েটার হলে আবদুল্লাহ আল মামুন স্মরণে নাট্য প্রদর্শনী ও আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে নাট্যম রেপার্টরি। মঞ্চস্থ হয় দলটির প্রযোজনা চারদিকে যুদ্ধ। আলোচনায় অংশ নেন নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার ও গোলাম সারোয়ার। স্মৃতিচারণ করে ফেরদৌসী মজুমদার বলেন, আমি নাটকের বৈরী পরিবেশে বড় হয়েছি। যদি আবদুল্লাহ আল মামুন আমার জীবনে না আসতেন তাহলে আজকের এই ফেরদৌসী মজুমদার হতে পারতাম না। তিনি আমার নাট্যসঙ্গী, তিনি আমার নাট্যকার, তিনি আমার বন্ধু। তার অবদান আমার জীবনে ভোলার নয়। তার প্রতি কৃতজ্ঞতা না জানানোর মতো অধর্ম আর হবে না। তিনি আমার মাঝে আত্মবিশ^াস গড়ে দিয়েছেন। অনেকের গুণ থাকে, কিন্তু আত্মবিশ^াস না হলে অভিনয় হয় না। এ আত্মবিশ^াস সবার থাকা উচিত। আতাউর রহমান বলেন, জীবনটা হচ্ছে উদযাপনের। যে মানুষ কর্ম রেখে যায় তার মৃত্যু নেই। আবদুল্লাহ আল মামুনের যা কাজ তা আমাদের জীবনে উদযাপনের উপলক্ষ সৃষ্টি করেছে। স্মরণ সভায় রামেন্দু মজুমদার বলেন, আবদুল্লাহ আল মামুন ছিলেন নব-নাট্যচর্চার অগ্রদূত। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তিনি অসাধারণ সব নাটক লিখেছেন। সংলাপ রচনার অদ্ভুত দক্ষতায় দ্রুতই পেয়েছেন জনপ্রিয়তা। বর্তমান সময়ের নাটক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আজকাল নাটকের ১০-১৫ মিনিট তো কিছুই থাকে না। কিন্তু মামুন তার নাটকে দর্শক ধরে রাখতে পারতেন। টিভি নাটকের প্রতি মামুনের ভালবাসা ছিল অপরিসীম। সে কারণেই টিভি নাটক তথা মেগাসিরিয়াল এত জনপ্রিয়তা পেয়েছে। সুস্থ ধারার চলচ্চিত্র নির্মাণে পরিবেশ তো কখনও ছিল না। তার মধ্যেও ‘সারেং বউ’ নির্মাণ করেছিলেন মামুন। গোলাম সারোয়ার বলেন, আবদুল্লাহ আল মামুন অসাধারণ সাংগঠনিক ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে নব্য ধনী শ্রেণীর পাশাপাশি মধ্যবিত্ত সমাজের নানা সঙ্কটের কথা প্রকাশিত হয়েছে তার নাটকে। মহাভারতে বর্ণিত কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের পূর্ব রাত্রির ঘটনা অবলম্বনে বুদ্ধদেব বসুর কাব্যনাটক থেকে প্রথম পার্থ প্রযোজনাটির নির্দেশনা দিয়েছেন জয়িতা মহলানবীশ। নাটকটিতে জনপ্রিয় অভিনেত্রী শিরিন বকুল, তানিয়া হোসেন, নূর জামান রাজা, গোলাম শাহারিয়ার সিক্তসহ থিয়েটার স্কুলের প্রাক্তন সদস্যরা অভিনয় করেছেন। আবহ সঙ্গীত নির্মাণ করেছেন সঙ্গীতশিল্পী পার্থ বড়ুয়া। আলোক পরিকল্পনার সঙ্গে মঞ্চসজ্জাও করেছেন পলাশ হেনডি সেন। বন্যার্তদের সাহায্যার্থে চিত্রাঙ্কন কর্মশালা ॥ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের জয়নুল গ্যালারিতে ‘এসো বানভাসি মানুষের পাশে’ শিরোনামে ৫ দিনব্যাপী চিত্রাঙ্কন কর্মশালা শুরু হয়েছে শনিবার। বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংসদের আয়োজনে দুপুর ১২টায় কর্মশালার সূচনা হয়। বন্যাদুর্গতের সাহায্যার্থে দেশের প্রথিতযশা ও তরুণ শিল্পীরা এ কর্মশালায় ছবি আঁকছেন। অঙ্কিত চিত্রকর্মের তাৎক্ষণিক প্রদর্শনী ও বিক্রয়ের ব্যবস্থাও রয়েছে এ আয়োজনে। ২৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কর্মশালা এবং প্রদর্শনী ও বিক্রয় চলবে।
×