ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সুমন্ত গুপ্ত

অর্থবছরের শুরুতেই রফতানি আয়ে হোঁচট

প্রকাশিত: ০৬:৪৯, ২১ আগস্ট ২০১৬

অর্থবছরের শুরুতেই রফতানি আয়ে হোঁচট

বছর শুরু হলো রফতানি আয় কমার মধ্য দিয়ে। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে ২৫৩ কোটি ৪৩ লাখ ১০ হাজার ডলারের পণ্য রফতানি করেছে বাংলাদেশ। যা গেল বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩ দশমিক ৪৯ শতাংশ কম। ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরের জুলাইয়ে ২৬২ কোটি ৫৯ লাখ ৩০ হাজার ডলারের পণ্য রফতানি করে বাংলাদেশ। অবশ্য রফতানিকারকরা এক মাসের এ নেতিবাচক প্রবণতায় চিন্তিত নন। তাঁরা বলছেন, জুলাইয়ে ঈদ-উল-ফিতরের কারণে লম্বা ছুটি ছিল। এ কারণে রফতানি কম হয়েছে। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের জুলাইয়ে এর চেয়ে ৯ কোটি ১৬ লাখ ডলার বেশি আয় হয়েছিল।এ বছরের মোট রফতানি আয়ের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে ৩ হাজার ৭০০ কোটি ডলার, যা আগের বছরের চেয়ে প্রায় ৮ শতাংশ বেশি। জুলাইয়ে আয়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছিল ৩৩৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার। তবে এ সময় আয় লক্ষ্যের চেয়ে প্রায় ২৫ শতাংশ কম হয়েছে।দেশের রফতানি আয়ের প্রায় ৮০ শতাংশই আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। ইপিবির রফতানি আয়-সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনায় দেখা যায়, জুলাই মাসে পোশাক খাতের আয় কমে যাওয়ায় সার্বিকভাবে পুরো রফতানি আয়ের প্রবৃদ্ধিই ঋণাত্মক হয়ে গেছে।আলোচ্য সময়ে পোশাক খাত থেকে মোট রফতানি আয় হয়েছে ২১১ কোটি ৭৬ লাখ ডলার, যা গত বছরের চেয়ে ৪ দশমিক ৪১ শতাংশ কম। গত বছর জুলাইয়ে পোশাক রফতানি করে আয় হয়েছিল ২২১ কোটি ৫২ লাখ ডলার।জুলাইয়ে পোশাক রফতানি আয় লক্ষ্যের চেয়েও ২৩ দশমিক ৬০ শতাংশ কম হয়েছে। এ সময় ২৭৭ কোটি ১৬ লাখ ডলার আয়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছিল।পোশাকের মধ্যে বেশি কমেছে নিটওয়্যার বা গেঞ্জি জাতীয় পোশাক রফতানি আয়। জুলাইয়ে নিটওয়্যার খাত থেকে আয় হয়েছে প্রায় ১০৭ কোটি ৭২ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ ও লক্ষ্যের চেয়ে ১৬ দশমিক ৬৮ শতাংশ কম।ওভেন গার্মেন্টস বা শার্ট-প্যান্টের রফতানি আয় কমেছে ৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ। জুলাইয়ে ওভেন পোশাক রফতানি করে আয় হয়েছে প্রায় ১০৪ কোটি ডলার। আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে কমার পাশাপাশি এ আয় লক্ষ্যের চেয়ে ২৯ দশমিক ৬৫ শতাংশ কম। চলতি অর্থবছরের জুলাইয়ে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় পাট ও পাটজাত দ্রব্য, কার্পেট জাতীয় দ্রব্যে রফতানি আয় বেড়েছে। তবে বেশিরভাগ খাতে রফতানি আয় গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে। বাংলাদেশ পোশাকের পরে সবচেয়ে বেশি রফতানি করে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য। এ খাতের রফতানি আয়ও জুলাইয়ে কমেছে। অর্থবছরের প্রথম মাসে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রফতানি করে আয় হয়েছে ৯ কোটি ২৫ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২ দশমিক ২৬ শতাংশ ও লক্ষ্যের চেয়ে ১৬ দশমিক ৯১ শতাংশ কম। তবে এ খাতের অধীন উপখাত চামড়াজাত পণ্য (পাদুকা বাদে) রফতানি আয় প্রায় ৩৬ শতাংশ বেড়েছে, আয় হয়েছে প্রায় ২ কোটি ৭৮ লাখ ডলার।এ ছাড়া চামড়ার বাইরে অন্যান্য পণ্য দিয়ে তৈরি পাদুকা রফতানি আয়ও কমেছে। জুলাইয়ে এ পণ্যটি রফতানি করে আয় হয়েছে প্রায় এক কোটি ৩৭ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৮ শতাংশ কম।অন্যান্য খাতের মধ্যে হোম টেক্সটাইল রফতানি আয় প্রায় ১৮ শতাংশ, কৃষিপণ্য প্রায় ৬ শতাংশ, ওষুধ প্রায় ১৯ শতাংশ, চিংড়ি ১ দশমিক ৪৭ শতাংশ ও প্রকৌশল পণ্য রফতানি আয় প্রায় ৩৬ শতাংশ কমেছে। এর বিপরীতে পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি আয় প্রায় ২৬ শতাংশ, প্লাস্টিক পণ্য প্রায় ১ শতাংশ ও সাইকেল রফতানি প্রায় ২১ শতাংশ বেড়েছে।
×