ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

পেট্রোলপাম্পে ২৮ আগস্ট কর্মবিরতির হুমকি

প্রকাশিত: ০৬:০২, ২১ আগস্ট ২০১৬

পেট্রোলপাম্পে ২৮ আগস্ট কর্মবিরতির হুমকি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ইজারা মাসুল বাড়ানোর সিদ্ধান্ত বাতিল, কমিশন ও ট্যাংকলরির ভাড়া বাড়ানোসহ ১২ দফা দাবি বাস্তবায়নে সরকারকে ২৮ আগস্ট পর্যন্ত সময় দিয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংকলরি মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। এ সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ করা না হলে ওইদিন সারাদেশে কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি। শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ঐক্য পরিষদের সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। এতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ওইদিন দেশের সব পেট্রোলপাম্প বন্ধ থাকবে। ট্যাংকলরির মাধ্যমে তেল উত্তোলন, পরিবহন এবং বিপণনও বন্ধ থাকবে। এরপরও দাবি মানা না হলে টানা কর্মবিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা দেন নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংকলরি মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ নাজমুল হক। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কমিশন বৃদ্ধিসহ নানা দাবি ছয় বছরেও বাস্তবায়ন হয়নি। সরকার বিভিন্ন সময়ে দাবি দাওয়া পূরণে আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। বাস্তবতা হলো এই সেক্টরের সংকট সমাধানে কারও সুনজর নেই। সম্প্রতি ১২ দফা দাবির বিষয়টি জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ে তিনবার চিঠি পাঠিয়েও কোন লাভ হয়নি বলে জানান পরিষদের নেতারা। পেট্রোলপাম্পগুলোর অবস্থান সড়ক, মহাসড়কের পাশে। একারণে সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের জমি সংযোগ সড়ক হিসেবে ইজারা নেয়া হয়েছে। কিন্তু কয়েক বছর পরপরই সওজের জমির ইজারা মাসুল বাড়ানো হচ্ছে। এটা ‘অযৌক্তিক’ উল্লেখ করে এ ব্যাপারে সরকারকে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান তারা। বক্তারা বলেন, গত কয়েক বছরে পেট্রোলপাম্প পরিচালনায় ব্যয় কয়েকগুণ বেড়েছে। কিন্তু কমিশন বাড়ানো হয়নি। ২০১১ সালের হিসেবেই পাম্প মালিকদের কমিশন দেয়া হচ্ছে। এ অবস্থায় কমিশন বাড়ানো না হলে পাম্প চালানো সম্ভব হবে না উল্লেখ করে তেল বিক্রির ওপর কমিশন বাড়ানোর দাবি জানান তারা। এর আগে চার আগস্ট রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাসের (সিএনজি) দাম বাড়ানো হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য ফিলিং স্টেশন বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দেয় বাংলাদেশ সিএনজি ফিলিং স্টেশন এ্যান্ড কনভার্শন ওয়ার্কশপ ওনার্স এ্যাসোসিয়েশন। পাশাপাশি পরিবহন ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞসহ অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, এই মুহূর্তে গ্যাসের দাম বাড়ানো ঠিক হবে না। তারা সরকারের বঙ্গোপসাগড়ে গ্যাস কূপ অনুষন্ধানে বাপেক্সকে কাজে লাগানোর পরামর্শ দিয়েছেন। ‘পরিবহনে ভাড়া বৃদ্ধি ও সিএনজির মূল্য বৃদ্ধি থামাও’ শীর্ষক আলোচনা সভায় ‘পরিবহন খাতে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতার স্বার্থে’ ফিলিং স্টেশন বন্ধের হুমকি দিয়েছিলেন সংগঠনটি সভাপতি মাসুদ খান। অনুষ্ঠানে পরিবহন ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, পরিবহন নেতা থেকে শুরু করে বিভিন্ন সেক্টরের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। বক্তারা বলেন, সরকারের ভেতরে একটি মহল পরিবহন সেক্টরে অশান্তি সৃষ্টির পাঁয়াতারা শুরু করেছে। যার ধারাবাহিকতায় প্রায় শতভাগ সিএনজির মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এই প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে একদিকে যেমন পরিবহন ভাড়া বাড়বে অন্যদিকে পণ্য আনা-নেয়ার ভাড়া হবে দিগুণ, যা সাধারণ মানুষের ওপর বর্তাবে। সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি হবে। পাশাপাশি বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়বে। অর্থনীতিতে আসবে বড় রকমের ধাক্কা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত সেপ্টেম্বরে সিএনজির মূল্য ২৬ শতাংশ বাড়ানোয় পরিবহন ভাড়া দেড় গুণ বেড়েছে। এবার বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে ৮৩ শতাংশ। এ প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে পরিবহন ভাড়া আবার বেড়ে দ্বিগুণের বেশি দাঁড়াবে। একইসঙ্গে পণ্য পরিবহন খরচ বেড়ে পণ্যর দামও বাড়বে। গ্যাসের দাম বাড়াতে গত মার্চে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাঠায় গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলো।
×