ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

সেলিম নাট্যমঞ্জুরি ‘পুতুল তোমার জনম কীরূপ’

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ২১ আগস্ট ২০১৬

সেলিম নাট্যমঞ্জুরি ‘পুতুল তোমার জনম কীরূপ’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সবগুলো চরিত্রের স্রষ্টা বাংলার শেকড়সন্ধানী নাট্যকার সেলিম আল দীন। সেই চরিত্রগুলোকেই কোলাজ করে চিত্রায়ন করলেন মঞ্চকুসুম শিমূল ইউসুফ। তাঁর অনবদ্য অভিনয়ে উপস্থাপিত হলো সেলিম আল দীনের বিভিন্ন নাট্যচরিত্র। আর এই চরিত্রগুলোর সম্মিলনে সাজানো হয় ‘পুতুল তোমার জনম কীরূপ’ শীর্ষক প্রযোজনাটি। অভিনয়ের পাশাপাশি এটি পরিচালনাও করেছেন শিমূল ইউসুফ। শনিবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হয় ঢাকা থিয়েটারের সেলিম নাট্যমঞ্জুরি শীর্ষক পরিবেশনাটি। ‘তোমার সম্মুখে অনন্ত মুক্তির অনিমেষ ছায়াপথ’ সেøাগানে অনুষ্ঠিত তিন দিনের সেলিম আল দীন উৎসবের সমাপ্তি ঘটল নাট্য আয়োজনটির মাধ্যমে। যৌথভাবে উৎসবের আয়োজন করে ঢাকা থিয়েটার, বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার, সেলিম আল দীন ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। পরিবেশনাটির চরিত্রাঙ্কন প্রসঙ্গে শিমূল ইউসুফ বলেন, আজ যেখানে দাঁড়িয়ে আমি পেছনে ঘাড় ঘোরালেই দেখতে পাই আমার সমৃদ্ধ অতীত আর ভবিষ্যতের দিকে তাকালে দেখি শুধু হু হু অন্ধকার। মঞ্চনাটকে যাঁর হাত দিয়ে একেকটি কালজয়ী চরিত্র লিপিবদ্ধ হয়েছে এবং এসব চরিত্রগুলোর জন্মদাতা, তিনি নাট্যাচার্য সেলিম আল দীন। আমার মঞ্চনাটকের চরিত্রের পিতা সেলিম আল দীন; যাঁর হাতে আমার আলোকলতার সুতো তিনি যেভাবে আমাকে নাচান সেমি সেভাবেই নাচি। একের পর এক চরিত্র নির্মাণ করেছেন তিনি। আমরা তাঁর মঞ্চপুতুল। আমাদের পুতুলজীবনের জনক যিনি তিনিই জানেন আমাদের জনম কীরূপ। তাই তাঁর ৬৭তম জন্মতিথিতে তাঁরই সৃষ্টি চরিত্রগুলো রূপায়নের মাধ্যমে জানালাম শ্রদ্ধাঞ্জলি। এছাড়া একই দিনে শেষ হলো স্বপ্নদল আয়োজিত ‘নাট্যাচার্য সেলিম আল দীন জন্মোৎসবÑ২০১৬’। ‘ঔপনিবেশিকতার শৃঙ্খল ভেঙ্গে বাংলা নাট্যের স্বর্ণালী দিন, প্রেরণা মোদের রবীন্দ্রনাথ সঙ্গী সেলিম আল দীন’ সেøাগানে অনুষ্ঠিত উৎসবের সমাপনী দিনে শনিবার বিকেলে শিল্পকলা একাডেমির ১ নম্বর মহড়া কক্ষে ‘সেলিম আল দীনের নাট্যদর্শন তথা বাংলা নাট্যরীতি প্রসারে প্রতিবন্ধকতা এবং উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক একক বক্তৃতা অনুষ্ঠিত হয়। একক বক্তৃতা করেন মঞ্চসারথি আতাউর রহমান। নাট্যজন রামেন্দু মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন থাকবেন সেলিম আল দীনের সহধর্মিণী বেগমজাদী মেহেনরুন্নেসা, নাট্য নির্দেশক সুদীপ চক্রবর্তী প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন উৎসব আহ্বায়ক ও স্বপ্নদলের প্রধান সম্পাদক জাহিদ রিপন। কল্পরেখার প্রতিষ্ঠাবর্ষিকীতে শিশ-উৎসব ॥ সময়ের স্রোতধারায় প্রতিষ্ঠার ষষ্ঠ বছর অতিক্রম করল শিশু-কিশোরদের সাংস্কৃতিক সংগঠন কল্পরেখা। এ উপলক্ষে শনিবার অনুষ্ঠিত হলো শিশু-উৎসব। সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত, আবৃত্তি ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে এ উদ্্যাপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সনদপত্র প্রদানের পাশাপাশি শিশু-কিশোরদের কবিতা আবৃত্তি ও গল্প বলার সমন্বিত আয়োজনে সাজানো হয় অনুষ্ঠান। কল্পরেখার শিক্ষার্থীরা পরিবেশন করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিবেদিত ‘মুজিব বাড়ি’ শীর্ষক কাব্য-গল্পমালা। এছাড়াও প্রদর্শিত হয় শিল্পকলা একাডেমি প্রযোজিত ও সুমনা সিদ্দিকী পরিচালিত স্বল্পদৈর্ঘ্য শিশুতোষ চলচ্চিত্র মাধো। অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ ও আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আহ্্কাম উল্লাহ্। সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মীর বরকত। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কল্পরেখার সাধারণ সম্পাদক তামান্না তিথি। প্রথম পর্বের আলোচনা শেষে দ্বিতীয় পর্বে ছিল সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। শিশুদের আবৃত্তির সঙ্গে গল্প বলার এ পর্বটি ছিল দারুণ উপভোগ্য। বর্ণমালার গল্প শীর্ষক আবৃত্তি প্রযোজনায় অংশ নেয় পদ্ম, নম্রতা, জারা, আনুভা, লাবিবসহ একঝাঁক শিশু শিল্পী। এছাড়াও উপস্থাপিত হয় রানী যাবেন বাপের বাড়ি, ধান সুপারি পান সুপারি শীর্ষক তিনটি আবৃত্তি প্রযোজনা। গল্প বলার আয়োজনে পরিবেশিত হয় ষড়যন্ত্র, পড়শি, বাঘের সাজা, ফলের ছড়া ও মুজিব বাড়ি শিরোনামের পাঁচটি প্রযোজনা। শিল্পকলা একাডেমির কর্মপরিকল্পনা বিষয়ক আলোচনা ॥ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে জেলা ও উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির কার্যক্রম পরিচালনা এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির কর্মপরিকল্পনা বিষয়ে জেলা শিল্পকলা একাডেমির কর্মকর্তা ও শিল্পকলা একাডেমি ঢাকার কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে শুক্র ও শনিবার শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে দিনব্যাপী সভা অনুষ্ঠিত হয়। একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, সংস্কৃতি বিষয়ক সচিব আক্তারী মমতাজ, একাডেমির সচিব জাহাঙ্গীর হোসেন চৌধুরী, চারুকলা বিভাগের পরিচালক জনাব উৎপল কুমার দাস, সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের পরিচালক সোহরাব উদ্দিন প্রমুখ। সভার আলোচ্য বিষয় ছিল সার্বিক পরিকল্পনা ও বার্ষিক কর্ম সম্পাদন, প্রশিক্ষণ কর্মসূচী, শিল্পীদল গঠন ও পরিচালনা, জেলা শিল্পকলা একাডেমি সম্মাননা, সকল কার্যক্রমের তথ্য প্রেরণ ও সংরক্ষণ, জাতীয় সংগীত ও ৬টি সাধারণ সঙ্গীত প্রশিক্ষণ কর্মসূচী, ৮টি বিভাগীয় ও জেলা শিল্পকলা একাডেমি নির্মাণ, ১৫টি জেলা শিল্পকলা একাডেমি নির্মাণ ও সংস্কার, ১১টি উপজেলা শিল্পকলা একাডেমি নির্মাণ, ৩টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী একাডেমি নির্মাণ, বছরব্যাপী অনুষ্ঠান আয়োজন, জেলা ও উপজেলা কমিটি গঠন ও গঠনতন্ত্র সংশোধন, মুক্ত আলোচনা, জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে অটিস্টিক শিশুদের অংশগ্রহণে কর্মশালা, মূল্যবোধের নাটক মঞ্চায়ন, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সেল ও ফোকলোর সেল গঠন এবং পরিচালনাসহ নানা বিষয়।
×