ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শেখ হাসিনাকে হত্যা করতেই গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছিল ॥ আমু

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ২১ আগস্ট ২০১৬

শেখ হাসিনাকে হত্যা করতেই গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছিল ॥ আমু

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু আওয়ামী লীগ সভানেত্রীসহ দেশ রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ব্যক্তি ও পরিবারের বিরুদ্ধে নয় বরং স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বারবার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। এ হত্যাকা-গুলো কোন ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা পরিবারের বিরুদ্ধে নয়, এসব হত্যাকা- বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে। দেশকে আবারও পাকিস্তান বানানোর জন্যই এ হত্যাকা-। শনিবার রাজধানীর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে যুবলীগ আয়োজিত আলোচনা সভা ও আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। শিল্পকলা একাডেমির ৬ নম্বর গ্যালারিতে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আহত ও নিহতদের স্মরণে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। যুবলীগ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় যুবলীগ নেতা শহীদ সেরনিয়াবাত, মাহবুবুর রহমান হিরণ, ফারুক হোসেন, আবদুস সাত্তার মাসুদ, আতাউর রহমান, সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহমেদ মহি, ফজলুল হক আতিক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। আমির হোসেন আমু বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করতেই ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছিল। ’৭১-এর পরাজিত শক্তি যারা দেশের স্বাধীনতা চায় না, তারাই শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিল। তিনি বলেন, ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করে পাকিস্তানের সঙ্গে একটি কনফেডারেশন তৈরি করা। যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ ও বাঙালীর বিজয় মেনে নিতে পারেনি, তারাই দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রকারীদের সহায়তায় ১৫ আগস্টের নৃশংস হত্যাকা- ঘটিয়েছিল। শিল্পমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে ঘাতকচক্র এ দেশ থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শকে জনগণের মন থেকে মুছে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধু তাঁর কালজয়ী আদর্শ ও নেতৃত্বের জন্য ১৬ কোটি মানুষের হƒদয়ে বেঁচে রয়েছেন। জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে সমগ্র জাতি সোচ্চার উল্লেখ করে আমু বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে গ্রাম-গঞ্জে সাধারণ মানুষের মাঝে জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশে উগ্র সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গীবাদের কোন স্থান হবে না। যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে জঙ্গী-নাশকতার মাস্টারমাইন্ড হলো তারেক রহমান ও খালেদা জিয়া। ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যাকা-ের মাস্টারমাইন্ড যেমন ছিলেন জিয়াউর রহমান, তেমনি হলি আর্টিজান বেকারি, শোলাকিয়ায় হামলাসহ সকল জঙ্গী-নাশকতার পরিকল্পনাকারী হলো তারেক-খালেদা জিয়ারা। জিয়াসহ অন্যদের মরণোত্তর বিচার দাবি হানিফের ॥ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেছেন, জাতির কাছে পরিষ্কার হয়েছে, বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারীদের সঙ্গে মূল হোতা হিসেবে জিয়াউর রহমান দায়িত্ব পালন করেছেন। আমরা সে কারণে দাবি করেছি, এ হত্যাকা-ের পেছনে বাংলাদেশে আর কারা চক্রান্তকারী ছিল, তাদের তদন্ত কমিশনের মাধ্যমে খুঁজে বের করা হোক এবং খুনী জিয়াউর রহমানসহ অন্যদের মরণোত্তর বিচার করা হোক। শনিবার রাজধানীর গুলিস্তানে কাজী বশির মিলনায়তনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ দাবি জানান। বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। তরিকত ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- সংগঠনটির মহাসচিব এমএ আউয়াল এমপি, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা আমিনুল ইসলাম আমিন প্রমুখ। একাত্তরের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা- খাদ্যমন্ত্রী ॥ খাদ্যমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেছেন, বিজয়ের আনন্দ ক্ষণস্থায়ী কিন্তু পরাজয়ের গ্লানি চিরস্থায়ী। একাত্তরের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতেই পরাজিত শক্তিরা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে। শনিবার খাদ্য ভবন প্রাঙ্গণে খাদ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪১তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি আরও বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনায়ককে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু আমাদের জাতির পিতাকে যেভাবে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে তা পৃথিবীর ইতিহাসে আর একটিও নেই।
×