ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধু হত্যার কুশীলবদের বের করতে কমিশন গঠনের চিন্তা

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ২১ আগস্ট ২০১৬

বঙ্গবন্ধু হত্যার কুশীলবদের বের করতে কমিশন গঠনের চিন্তা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার নেপথ্যের ষড়যন্ত্রকারীদের বের করতে একটা কমিশন গঠনের চিন্তাভাবনা চলছে। অন্যদিকে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, গ্রেনেড হামলা চালিয়ে শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে দায়ের মামলার রায় ‘অল্প কিছু দিনের’ মধ্যে হবে। যারা বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সাথে সরাসরি জড়িত ছিল, যারা ষড়যন্ত্রের সাথে সরাসরি জড়িত ছিল, তাদের বিচারের কাঠগড়ায় এনে সাজা দেয়া সম্ভব হয়েছে। কিন্তু যারা এ হত্যাকা-ের সাথে সরাসরি জড়িত নয়, কিন্তু বাইরের ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা গেলে অনেক তথ্য পাওয়া যেত, যা করা সম্ভব হয়নি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪১তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার সকালে বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্টে এ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে আইনজীবীদের রক্তদান কর্মসূচীর উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি। আইনমন্ত্রী মনে করেন, “খুনী মুশতাক যদি বেঁচে থাকত, তার যদি বিচার করা যেত, মাহবুবুল আলম চাষীর বিচার করা যেত, এখন পলাতক রশীদকে যদি বের করা যায় তাহলে এর নেপথ্যে আরও কারা আছে সেটা বের করা যাবে। যারা হত্যায় জড়িত নয়, কিন্তু বাইরের ষড়যন্ত্রে সঙ্গে জড়িত তাদের পেলে আমরা হয়ত অনেক তথ্য পেতাম। সেটা সম্ভব নয়। আমার মনে হয়, এখন কমিশন করে অন্তত জিজ্ঞাসা করে ইতিহাসের জন্য এই জিনিসটা করা উচি।” ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার অগ্রগতির বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, মামলাটি এখন শেষ পর্যায়ে। আশা করা যায়, অল্প কিছু দিনের মধ্যেই মামলাটির রায় হবে। তিনি জানান, এ মামলায় পলাতক আসামিদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আইনমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু ত্যাগ, ভালবাসা, দেশপ্রেম ও জীবনকে উৎসর্গ করার যে দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন সেটাই তাঁর আদর্শ। তিনি বলেন, অসুস্থ মানুষকে সুস্থ করে তোলার লক্ষ্যে রক্তদানও একটি ত্যাগ। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে যে সমস্ত আইনজীবী রক্তদান করে ত্যাগের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন তাঁদের তিনি ধন্যবাদ জানান। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে বঙ্গবন্ধু হত্যায় দায়ী করে আওয়ামী লীগ নেতারা তার মরণোত্তর বিচারের দাবি জানিয়ে আসছেন। এ প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “প্রথম কথা ফৌজদারি আইনে যদি কেউ মারা যায়, তার কিন্তু আর বিচার করা যায় না। সেটা সম্ভব না। তার জড়িত থাকার কথা যদি প্রমাণ হয়, তবে জনগণ তাকে ঘৃণার চোখেই দেখবে। যারা এর নেপথ্যে ছিলেন, ইতিহাসের কারণেই কিন্তু সেটা খুঁজে বের করা দরকার। তাদের খুঁজে বের করার বিষয়ে কমিশন গঠনের চিন্ত-ভাবনা চলছে।” বঙ্গবন্ধু হত্যায় জড়িতদের মধ্যে আপীল বিভাগের চূড়ান্ত রায়ে ১২ জনের মৃত্যুদ- বহাল থাকে। এর মধ্যে পাঁচজনের মৃত্যুদ- কার্যকর হয়েছে। বাকি সাতজনের মধ্যে পলাতক অবস্থায় একজন মারা গেছেন, ছয়জন এখনও পলাতক। এ প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, “আমরা বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের মাধ্যমে যারা সরাসরি জড়িত ছিলেন, যারা ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তাদের কিন্তু বিচারের আওতায় আনতে পেরেছি, সাজা দিতে পেরেছি।” এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ডা. কামরুল হাসান খান বক্তব্য রাখেন।
×