ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ক্রিকেটারের গলায় অলিম্পিক পদক!

প্রকাশিত: ০৭:২৭, ২০ আগস্ট ২০১৬

ক্রিকেটারের গলায় অলিম্পিক পদক!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অলিম্পিক গেমসে ক্রিকেট অন্তর্ভুক্ত হয়নি। তবু রিওতে চলমান অলিম্পিকে পদক জিতে অনন্য নজির স্থাপন করেছেন সাবেক দক্ষিণ আফ্রিকান প্রমীলা ক্রিকেটার সুনেতি ভিলজোয়েন! বৃহস্পতিবার বর্ষা নিক্ষেপে (জেভলিন থ্রো) রৌপ্যপদক গলায় ঝুলিয়েছেন তিনি। ৩৩ বছর বয়সী প্রোটিয়া ফাইনালে পরাস্ত হয়েছেন ক্রোয়েশিয়ার সারা কোলাকের কাছে। বর্ষা নিক্ষেপে ভিলজোয়েনের দূরত্ব ৬৪.৯২ মিটার, স্বর্ণজয়ী কোলাকের ৬৬.১৮ মিটার। ১৪ বছর আগে ক্রিকেটকে বিদায় জানানো স্বর্ণকেশী দক্ষিণ আফ্রিকানের জাতীয়-আন্তর্জাতিক মিলিয়ে এটি নবম পদক। বহুগুণের অধিকারী এক প্রতিভা। ট্রান্সভিলে জন্ম নেয়া ভিলজোয়েনের খেলাধুলায় হাতেখড়ি ক্রিকেট দিয়ে হলেও একজন চৌকস এ্যাথলেট হিসেবে নিজেকে দারুণভাবে মেলে ধরেছেন। প্রতিভার সঙ্গে ইচ্ছা শক্তি যোগ হলে যে সবকিছু সম্ভব এটি তারই জ্বলন্ত উদাহরণ। ২০১২ লন্ডন অলিম্পিকে চতুর্থ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল। চার বছর পর রিওতে ঠিকই আক্ষেপ ঘোচালেন। ২০০০-০২ এ প্রোটিয়া নারী দলের হয়ে ১৭ ওয়ানডেতে ১৯৮ রান ও বল হাতে ৫ উইকেট শিকার করেছেন। পাকিস্তানের ২৫৫ রানের বড় জয়ের রেকর্ড স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জয়ের রেকর্ড গড়ল পাকিস্তান। প্রতিপক্ষ অবশ্য দুর্বল আয়ারল্যান্ড। ডাবলিনে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতে আইরিশদের ২৫৫ রানে হারিয়েছে আজহার আলির দল। ওপেনার শারজিল খানের ৮৬ বলে ১৫২ (১৬ চার, ৯ ছক্কা) ও শোয়েব মালিকের ঝড়ো হাফসেঞ্চুরির (৩৭ বলে ৫৭*) সৌজন্যে ৪৭ ওভারে ৬ উইকেটে ৩৩৭ রানের পাহাড় গড়ে পাকিস্তান। জবাবে উমর গুল (৩/২৩) ও ইমাদ ওয়াসিমের (৫/১৪) দুরন্ত বোলিংয়ের মুখে ২৩.৪ ওভারে ৮২ রানে অলআউট হয় উইলিয়াম পোর্টারফিল্ডের আয়ারল্যান্ড। একই ভেন্যুতে আজ দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচ। ওয়ানডেতে পাকিস্তানের আগের বড় জয়টি ছিল বাংলাদেশের বিপক্ষে, ঢাকা ২০০০ সালের এশিয়া কাপে, ২৩৩ রানের ব্যবধানে। সর্বোপরি রানের হিসেবে ওয়ানডেতে এটি সপ্তম বৃহত্তর জয়। আইরিশদের দুর্ভাগ্য, ওয়ানডে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হারের রেকর্ডটাও তাদেরই দখলে! ২০০৮ সালে তাদের ২৯০ রানে হারিয়ে ইতিহাসের পাতায় জ্বলজ্বলে নিউজিল্যান্ড। টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে বড় জয়টি দক্ষিণ আফ্রিকার, ২৭২ রানে, ২০১০ সালে জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে। কেবল দলীয় নয়, এদিন ব্যক্তিগত নৈপুণ্যেও পাকিস্তানীরা একাধিক অর্জনে নাম লিখিয়েছেন। যেখানে সবার আগে স্পিনার ইমাদ ওয়াসিমের কথা বলতে হবে। ৫.৪-০-১৪-৫, পাকিস্তানী বাঁহাতি বোলারদের মধ্যে এটিই সেরা বোলিংয়ের নতুন রেকর্ড। আগে যেটি ছিল গ্রেট ওয়াসিম আকরামের, ৫/১৫Ñ ১৯৯৩ সালে, জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে। এদিন ৮৫ বলে ১৫০ পূর্ণ করেন শারজিলÑ ওয়ানডেতে যা তৃতীয় দ্রুততম দেড় শ’। এক্ষেত্রে রেকর্ডটা এবি ডি ভিলিয়ার্সে (৬৪ বলে ১৫০)! ক্যারিয়ারের ১৩তম ম্যাচ খেলতে নামা পাকিস্তানী ওপেনার সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ৬১ বলে। পাকিস্তানের হয়ে এর চেয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরি আছে তিনটি। ৩৭, ৪৫ ও ৫৩ বলেÑ তিনটিরই মালিক শহীদ আফ্রিদি! দেড় শতাধিক রানের ইনিংস আর মাত্র দুটি, সাঈদ আনোয়ার ১৯৪ ও ইমরান নাজির ১৬০। হার্ডলসে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রথম পদক জেতালেন দালিলাহ স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নতুন ইতিহাস গড়লেন দালিলাহ মুহাম্মদ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অলিম্পিকের ৪০০ মিটার হার্ডলসের প্রথম স্বর্ণ উপহার দিলেন তিনি। এই ইভেন্টে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রথম স্বর্ণ উপহার দিতে দালিলাহ পেছনে ফেলেছেন ডেনমার্কের সারা সেøাট পিটারসেনকে। রিও অলিম্পিকের চতুর্দশ দিনে ৫৩.১৪ সেকেন্ডে ফিনিশিং লাইন স্পর্শ করে প্রথম হয়ে স্বর্ণপদক জিতেন দালিলাহ মুহাম্মদ। ৪০০ মিটার হার্ডলসে ব্রোঞ্জ জিতেছেন তারই স্বদেশী এ্যাশলে স্পেন্সার। ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৫৩.৭২ সেকেন্ডে ফিনিশিং লাইন স্পর্শ করে তৃতীয় স্থানে থেকে প্রতিযোগিতা শেষ করেন তিনি। অথচ দুই বছর আগেও ইনজুরির সঙ্গে লড়াই করেছেন দালিলাহ মুহাম্মদ। হতাশজনক পারফর্মেন্সের কারণে এক পর্যায়ে নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাসও হারিয়ে ফেলছিলেন ২৬ বছরের এই হার্ডলার। কিন্তু তারপরও দমে যাননি জ্যামাইকান বংশোদ্ভূত এই এ্যাথলেট। গত দুই বছরে কঠোর অনুশীলন করে নিজেকে তৈরি করেন তিনি। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে তার কোচকেও পরিবর্তন করেন দালিলাহ। সেই সঙ্গে ফিটনেসের উন্নতির জন্য সব ধরনের চেষ্টাই চালিয়ে যান তিনি। অবশেষে তারই ফল ফেলেন ট্র্যাক এ্যান্ড ফিল্ডের এই প্রতিভাবান তারকা। দেশকে স্বর্ণপদক উপহার দিয়ে দারুণ রোমাঞ্চিত দালিলাহ মুহাম্মদ বলেন, ‘আমার জন্য এটা প্রকৃতপক্ষেই দারুণ রোমাঞ্চকর এক বিষয়।’ প্রথম মহিলা এ্যাথলেট হিসেবে আমেরিকাকে অলিম্পিকের ৪০০ মিটার হার্ডলসের শিরোপা উপহার দিতে পারাটা তো আসলেই অনেক বড় অর্জন। প্রতিযোগিতার শেষে সংবাদ সম্মেলনে সেই কথাটাই বললেন পাঁচ ফুট আট ইঞ্চি উচ্চতার এই এ্যাথলেট। এ প্রসঙ্গে দালিলাহ বলেন, ‘আমার কাছে এর মানেক অনেক কিছু। তবে এর জন্য আমি কঠোর অনুশীলন করেছি। বিশেষ করে এ বছরে এতটাই কঠিন পরিশ্রম করেছি যে যা আমার বাকি জীবনের কখনই করিনি। পরিশ্রমের পাশাপাশি শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবন যাপনও করেছি। গত দুই বছরে আমি আমার সেরা টাইমিং গড়তে পারছিলাম না কিন্তু আমি মনে করি সঠিক সময়েই জ্বলে উঠতে পেরেছি। এতে করে আমি খুবই আনন্দিত।’ ১৯৮৪ সালের লস এ্যাঞ্জেলস গেমসে হার্ডলস শুরুর পর এবারই এই ইভেন্ট থেকে প্রথম স্বর্ণ জিতল তার দেশ। ইতিহাস গড়লেন হেলেন মারোউলিস স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ৫৩ কেজির ওজন শ্রেণীর ফাইনালে জাপানের সাওরি ইউশিদাকে হারানোর পর হেলেন মারোউলিসকে টেনে তুলার চেষ্টা করনে রেফারি। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মারোউলিস তার মুখ ম্যাটের মধ্যে লুকানোর চেষ্টা করেন। গর্বে, বিস্ময়ে! যেন নিজেকে বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না এই রেসলার। তবে সাওরি ইউশিদাকে হারিয়ে সেই অবিশ্বাস্য কাজটাই করলেন তিনি। সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রকে অলিম্পিক ইতিহাসের প্রথম রেসলিংয়ের শিরোপা উপহার দিলেন হেলেন মারোউলিস। বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হেলেন মারোউলিস। অলিম্পিকে এটাই তার প্রথম পদচারণ। অভিষেক অলিম্পিকেই বাজিমাত করেন তিনি। দুর্দান্ত খেলেই ৫৩ কেজির ওজন শ্রেণীর ফাইনালে জায়গা করে নেন তিনি। স্বর্ণপদক জয়ের লড়াইয়ে তার প্রতিপক্ষ হিসেবে বাধা হয়ে দাঁড়ান সাওরি ইউশিদা। টানা তিন অলিম্পিকে স্বর্ণপদক নিজের করে রেখেছেন জাপানের এই এ্যাথলেট। এবার রিও অলিম্পিকে টান চার স্বর্ণপদক জয়ের লক্ষ্যেই মিশন শুরু করেছিলেন জাপানী তারকা। গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরেই রেসলিংয়ে অসাধারণ পারফর্ম করে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন ইউশিদা। তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা তো দূরের কথা ‘ম্যাটে সাক্ষাত করতে পারাটাই অনেক সম্মানের। কিন্তু রিও অলিম্পিকে সেই ইউশিদাকেই হারিয়ে বিস্ময়ের জন্ম দিলেন আমেরিকান রেসলার মারোউলিস। স্বর্ণপদক জয়ের পর হেলেন মারোউলিস নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ‘সাওরির মতো রেসলার হওয়ার স্বপ্ন দেখে এসেছি দীর্ঘদিন ধরেই। তিনিই আমার স্বপ্নের নায়িকা। ক্রীড়াজগতের সবচেয়ে আকর্ষণীয় রেসলার তিনি। তার বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারাটাই আমার জন্য সম্মানের।’ গত ১৪ বছরের ক্যারিয়ারে মাত্র দুইবার বড় মঞ্চে পরাজয় দেখেছেন ইউশিদা। যে কারণে এবারও স্বর্ণপদক ধরে রাখার বিষয়ে দারুণ আত্মবিশ্বাসী ছিলেন তিনি। সেই সঙ্গে দৃষ্টি রেখেছিলেন স্বদেশী সতীর্থ কাওরি ইচোর রেকর্ডে ভাগ বসাতে। যিনি একদিন আগেই ইতিহাসের একমাত্র রেসলার হিসেবে ৫৮ কেজি ওজন শ্রেুনীতে চার স্বর্ণপদক জয়ের রেকর্ড গড়েন। কিন্তু ইউশিদাকে সেই অবিস্মরণীয় কীর্তি গড়তে দিলেন না হেলেন মারোউলিস। ইউশিদার বর্তমান বয়স ৩৩। এবার হারের পর ২০২০ সালেও কী টোকিওতে যাবেন তিনি? সেই প্রশ্নটাই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে সমর্থকদের মনে। তবে এ প্রসঙ্গে ইউশিদা এখনও কান সিদ্ধান্তে পৌঁছাননি বলে জানিয়েছেন বৃহস্পতিবার, ‘সে বিষয়ে এখনও কোন সিদ্ধান্ত নেইনি।’ ৫৩ কেজির ওজন শ্রেণীতে এদিন ব্রোঞ্জ জিতেছেন আজারবাইজানের নাটালিয়া সিনিশিন এবং সুইডেনের সোফিয়া মাগডালেনা ম্যাটসন।
×