ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জটিলতার হোক অবসান

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ২০ আগস্ট ২০১৬

জটিলতার হোক অবসান

হজযাত্রায় কিছুটা অনাকাক্সিক্ষত বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। তবে এটি কেবল দেশীয় এয়ারলাইন্স বিমানের ক্ষেত্রে; সৌদি এয়ারলাইন্সে পুরোদমে শৃঙ্খলা বজায় আছে। যাত্রী স্বল্পতায় ইতোমধ্যে বিমানের দশটি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। হজের সময় যেখানে বিমানের বড় ধরনের লাভ হওয়ার কথা সেখানে লোকসানের মুখোমুখি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। এটি অপ্রত্যাশিত। জরুরী হজ বিজ্ঞপ্তিতে বিমান বলেছে, বাতিলকৃত ফ্লাইটের কারণে বিমানের হজযাত্রী পরিবহনে ৫ হাজার আসনের ক্যাপাসিটি খোয়া গেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য পাল্টাপাল্টি দায়ী করার প্রবণতাও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। হজ এজেন্সিগুলোর সংগঠন হাব সংবাদ সম্মেলন করে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে। মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা সেই অভিযোগ খ-নের চেষ্টার পাশাপাশি হজ এজেন্সির কারসাজির কথা বলছেন। অথচ বিষয়টি পাল্টাপাল্টি অভিযোগের নয়। প্রত্যেক বছরই হজযাত্রায় আমরা কিছু না কিছু সমস্যা ও জটিলতা দেখে থাকি। এবারও সেই একই ধারা বজায় থাকা দুঃখজনক। পারস্পরিক দোষারোপের সংস্কৃতি কোন শুভ ফল বয়ে আনে না। বরং আগেভাগে যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণ ও সম্ভাব্য সঙ্কট মোকাবেলায় করণীয় নির্ধারণ করলেই সব কূল রক্ষা পায়। এবারের হজফ্লাইটের জটিলতার ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো সামনে চলে এসেছে সেগুলো না এড়িয়ে ইতিবাচক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করা দরকার। বিমানের ফ্লাইটে সিট খালি যাচ্ছে, ফ্লাইট বাতিলও হচ্ছে। কিন্তু সৌদি এয়ারলাইন্সের হজফ্লাইটগুলোতে কোন যাত্রীসঙ্কট নেই কেন? বিষয়টি খোলা চোখে বিচার করতে হবে। এর নেপথ্যে বিমানের অদক্ষ ব্যবস্থাপনা দায়ী কিনা সেটাও খতিয়ে দেখতে হবে। হজ এজেন্সিগুলো অর্থ সাশ্রয় এবং সেবার মানÑ এ দুটো ব্যাপারকে গুরুত্ব দেবে সেটা স্বাভাবিক। দেখা যাচ্ছে ডলারের বিনিময় হারে তারতম্য এবং যাত্রীপ্রতি ৫০ ডলার সিটি চেকইন চার্জÑ এ দুটো কারণে সৌদি এয়ারলাইন্সের টিকেটের তুলনায় বিমানের টিকেটের দাম প্রায় আট হাজার টাকা বেশি পড়েছে। তবে বিলম্বে বোধোদয় ঘটেছে বিমান কর্তৃপক্ষের। কমিয়ে আনা হয়েছে বিমানের টিকেটের মূল্য। চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ১ হাজার ৭৫৮ হজযাত্রী হজে যাবেন। এর অর্ধেক বিমান ও অর্ধেক সৌদি এয়ারলাইন্স বহন করার কথা। হজযাত্রীর অনলাইন নিবন্ধন বিলম্বিত হওয়া, তুলনামূলক কমসংখ্যক ভিসা ইস্যু হওয়া, এজেন্সিগুলোর মক্কা ও মদিনায় বাড়ি ভাড়া এখনও পুরোপুরি সম্পন্ন না হওয়া, এজেন্সিগুলো নিজস্ব সিডিউল অনুযায়ী হজযাত্রী পাঠাতে ব্যর্থ হওয়াই বিমানের হজযাত্রী সঙ্কটের কারণ বলে পর্যালোচনায় উঠে এসেছে। এ ছাড়া কিছু হজ এজেন্সি যাত্রীদের সৌদি পাঠাতে গড়িমসি এবং যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায় করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। ধর্ম মন্ত্রণালয় এবং হজ এজেন্সিগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতা থাকলে সঙ্কটের সমাধান বিলম্বিত হবে এটা জানা কথা। পবিত্র হজ পালনের জন্য মানুষ বহু আগে থেকে আর্থিক ও মানসিক প্রস্তুতি গ্রহণ করে থাকে। কোন পক্ষের গাফিলতির কারণে হজযাত্রীদের একটি ক্ষুদ্র অংশও ক্ষতির সম্মুখীন হোকÑ এটা কারও কাম্য হতে পারে না। পারস্পরিক দোষারোপ নয়, আলোচনার মধ্য দিয়ে জটিলতার অবসানের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।
×