ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ভারতে পাচার হওয়া ৪৭ শিশু-কিশোর দেশে ফিরতে পারছে না

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ২০ আগস্ট ২০১৬

ভারতে পাচার হওয়া ৪৭ শিশু-কিশোর দেশে ফিরতে পারছে না

সাজেদুর রহমান শিলু, দিনাজপুর ॥ দুই দেশের আইনী জটিলতার কারণে পাচার হয়ে যাওয়া বাংলাদেশী ৪৭ শিশু-কিশোর ভারত থেকে দেশে ফিরতে পারছে না। পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুঘাট ‘শুভায়ণ অবজারভেশন হোম’-এ দেড় থেকে দুই বছর ধরে আটক রয়েছে তারা। চার দেয়ালের মধ্যে অনেকদিন ধরে আটকে থাকায় মানবেতর জীবনযাপন করছে তারা। এ কারণে মানসিক ও শারীরিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছে এই শিশু-কিশোররা। হিলি সীমান্তসহ আশপাশের সীমান্ত দিয়ে বিভিন্ন সময়ে দালালরা বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে তাদের ভারতে পাচার করে। দিনাজপুরের হিলি সীমান্তের শূন্যরেখায় আলাপ হয়, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কয়েক মানবাধিকার কর্মীর সাথে। তারা জানান, হোমে থাকা শিশু-কিশোররা ২৯ ও ৩০ জুলাই খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে অনশন পালন করে। দেশে দ্রুত ফেরত পাঠানো হবে শুভায়ণ অবজারভেশন হোমের কর্মকর্তা ও এনজিও প্রতিনিধিদের কাছে আশ্বাস পেয়ে তারা অনশনভঙ্গ করে। ১ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ৩৮ জন শিশু-কিশোর একটি লিখিত আবেদন করে। দক্ষিণ দিনাজপুরের এনজিও ‘স্পার’-এর জেলা সঞ্চালক সুরজ দাস বলেন, শুভায়ন হোমে এই মুহূর্তে ৪৭ জন বাংলাদেশী শিশু রয়েছে। যাদের মধ্যে অনেকেই দু’ বছর ধরে এই হোমে আছে। এদের কেউই কোন সাজা ভোগ করছে না। কিন্তু কেবল মাত্র দু’দেশের আইনী জটিলতায় এরা বন্দী জীবনযাপন করছে। এরা বেশির ভাগই কাজের সন্ধানে ভারতে প্রবেশ করে। কেউ বা বেড়ানোর উদ্দেশ্যে কেউ আবার আত্মীয়ের বাড়িতে এসে ধরা পড়ে। দক্ষিণ দিনাজপুরের শুভায়ণ অবজারভেশন হোমের সুপারিনটেনডেন্ট দাওয়াদর্জি শেরপা এনজিও কর্মীদের জানান, বাংলাদেশ থেকে আসা আটক সকলেরই বয়স আঠার বছরের কম। তাই এদের বিরুদ্ধে কোন মামলা করা হয়নি। শুধুমাত্র দু’দেশের আইনী জটিলতার কারণেই এদের দেশে ফেরত পাঠাতে বিলম্ব হচ্ছে। অবজারভেশন হোমে আটক থাকা শিশুরা হলো, দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার সোহেল রানা, মিজানুর রহমান, অমৃত রায়, গৌতম রায়, সুজন আলী, আজিজুল ইসলাম, সদর উপজেলার মোস্তফা, বীরগঞ্জ উপজেলার আরিফুল ইসলাম, হাকিমপুর উপজেলার সুজন, রোহান কবির, ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার অসীম, মুকিদুল, বালিয়াডাঙ্গি উপজেলার বাদশা হক, পঞ্চগড়ের দেবিগঞ্জের স্বপন রায়, খুলনার দৌলতপুরের রাফি শেখ, যশোহরের ইলিয়াস আলী, পাবনার এনামুল হক, চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেনারুল ইসলাম, সোহেল রানা, কক্সবাজারের উখিয়ার ইলিয়াস, চকরিয়ার রবি আলম, বান্দরবান আলীকদমের নুরল ইসলাম, কুমিল্লার বুড়িচংয়ের আলামিন, ঢাকার কেরানীগঞ্জের জুবায়ের আহমেদ, সোহান শেখ, রাজশাহীর গোদাগাড়ীর মমিন, কৃষ্ণ নাথ, কৃষ্ণ টপ্প, কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীর দুলাল আলী, জাহিদ হাসান, রাজু ইসলাম, নাজমুল হক, স্বাধীন আসলাম, নাগেশ্বরীর মুসে আলী, তসলিম আলী, সুজন, পটুয়াখালির কলাপাড়ার রয়েল হোসেন, জয়পুরহাটের কালাইয়ের জুনেত।
×