ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চীন-পাকিস্তান করিডরের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের বিচার হবে

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ২০ আগস্ট ২০১৬

চীন-পাকিস্তান করিডরের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের বিচার হবে

পাকিস্তানের পরিকল্পনা সংস্কার ও উন্নয়ন বিষয়কমন্ত্রী আহসান ইকবাল বলেছেন, চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডরের (সিপিইসি) বিরুদ্ধে যারা বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসদমন আইনে অভিযোগ আনা হবে। খবর এএনআই অনলাইনের। গিলগিট বাল্টিস্তান ন্যাশনাল কংগ্রেসের পরিচালক সেনজি হাসনান সেরিং মন্ত্রী আহসান ইকবালের উদ্ধৃতি দিয়ে টুইটে বলেছেন, যারা চীনের নেতৃত্বাধীন সিপিইসির বিরুদ্ধে গিলগিট বাল্টিস্তানে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস দমন আইনে অভিযোগ আনা হবে। পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে (পিওকে) গিলগিট বাল্টিস্তানে বিক্ষোভ আন্দোলন চলছে কয়েক মাস ধরে। আন্দোলন দমনের জন্য পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী সেখানে কঠোর অভিযান চালিয়েছে। গিলগিট বাল্টিস্তানের অধিবাসীরা মনে করছেন, সিপিইসি প্রতিষ্ঠিত হলে সংশ্লিষ্ট এলাকার পানি সম্পদ করিডরের স্বার্থে ব্যবহার করা হবে এবং তাতে কেবলমাত্র পাকিস্তানের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে। স্থানীয় জনগণ এ অঞ্চলে চীনা প্রভাব বৃদ্ধির বিষয়েও উদ্বিগ্ন। গিলগিট বাল্টিস্তানের নেতৃত্ব এ বিতর্কিত করিডরের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে এসেছে কয়েকমাস ধরে। গিলগিট বাল্টিস্তানভিত্তিক আওয়ামী লীগ এ্যাকশন কমিটির (এএসি) উদ্যোগে এর আগে অঞ্চলটিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের অহ্বান জানানো হয়। পাকিস্তান এ অঞ্চল থেকে নিরাপত্তা বাহিনী প্রত্যাহার না করা এবং সিপিইসি কর্মসূচী গুটিয়ে না ফেলা পর্যন্ত তাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। প্রায় ২০টি ধর্মীয় জাতীয়তাবাদী ও রাজনৈতিক গ্রুপ সমন্বয়ে গঠিত জোট এএসি তাদের অঞ্চল থেকে পাকিস্তানী সেনা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহারের জন্য দাবি জানিয়েছে। জোট সিপিইসিতে গিলগিট বাল্টিস্তানের অংশীদারী না থাকারও বিরোধিতা করেছে। সিনেটর তাজ হায়দারের নেতৃত্বে সিনেট কমিটি সিপিইসি প্রকল্প পর্যালোচনার জন্য অঞ্চলটি সফর করার কয়েকদিন পর ওই ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়। কমিটির সদস্যরা তাদের তিন দিনের ঐ অবস্থানের সময় বেশ কয়েকটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হন যে, সিপিইসিতে এ অঞ্চলের কোন অংশিদারী নেই। পাকিস্তানী সেনাবাহিনী গত সপ্তাহে গিলগিট বাল্টিস্তানে ৫শ’র বেশি যুবককে গ্রেফতার করে। তারা সেনাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর জন্য এবং অঞ্চল থেকে তাদের সরে যাবার দাবিতে রাস্তায় নেমে এলে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গিলগিটের শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক কর্মী বাবাজানসহ কয়েকজন লোককে গ্রেফতার করা হয়েছে এ পর্যন্ত। সিপিইসি প্রতিষ্ঠায় বিলম্বের কারণে বেজিং কর্তৃপক্ষ প্রকল্পটি নির্ঝঞ্ঝাটভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে সেনাবাহিনীর সহায়তার জন্য গত মাসে ইসলামাবাদকে পরামর্শ দিয়েছে। প্রকল্পের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেছেন, চীনারা প্রকল্পের সার্বিক ব্যবস্থাপনা বিশেষ করে প্রকল্পে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের জড়িত হওয়ার ব্যাপারে অসন্তুষ্টি এবং অপ্রয়োজনীয় বিলম্ব হচ্ছে এ কারণে। এ বছর এর আগে জানুয়ারিতে পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিসরে সিপিইসির ব্যাপারে ঐক্য না থাকায় চীন প্রকাশ্যভাবেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং প্রকল্পটি সম্পন্ন করার জন্য অনুকূল পরিস্থিতি গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন মতভেদ মিটিয়ে ফেলার জন্য রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইসলামাবাদে চীনা দূতাবাস।
×