ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ নিখোঁজের তিন দিন পর ধানক্ষেত থেকে শিশুর ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ২০ আগস্ট ২০১৬

পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ নিখোঁজের তিন দিন  পর ধানক্ষেত থেকে  শিশুর ক্ষত-বিক্ষত  লাশ উদ্ধার

নিজস্ব সংবাদদাতা, হবিগঞ্জ, ১৯ আগস্ট ॥ পুলিশ যথাযথ দায়িত্ব পালন না করায় নিখোঁজ শিশু সুলতানা আক্তারকে (৯) ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় লাশ হয়ে বাড়ি ফিরতে হলো। এমন নির্মম মৃত্যুর ঘটনায় সংশ্লিষ্ট পরিবার ও এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। জেলার বাহুবল উপজেলাধীন উত্তরসুর গ্রামের বাসিন্দা আফজাল মিয়ার শিশুকন্যা ও স্থানীয় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী সুলতানা আক্তার কেরোসিন তেল আনার জন্য গেল ১৬ আগস্ট দুপুরে বাড়ি থেকে হামিদনগর বাজারের উদ্দেশে রওনা হয়ে আর ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্যরা তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। এমনকি এলাকাজুড়ে সুলতানার নিখোঁজ হওয়ার খবরটি মাইকে প্রচার করা হয়। তাতেও ব্যর্থ হয়ে প্রিয় সন্তানকে উদ্ধারে আফজাল মিয়া বাহুবল থানার শরণাপন্ন হন। এ সময় তিনি কর্তব্যরত ডিউটি অফিসার এবং ওসি মোল্লা মনির হোসেনকে নিখোঁজ সন্তান উদ্ধারে অনুনয়-বিনয় করেও সাড়া পাননি। একপর্যায়ে ওসির নির্দেশে ওই রাতেই একটি জিডি করেন আফজাল (জিডি নং-৭৮২, তাং ১৭ আগস্ট ২০১৬)। এদিকে সুলতানা নিখোঁজ হওয়ার ৩ দিনের মাথায় শুক্রবার দুপুরে সংশ্লিষ্ট গ্রামসংলগ্ন হামিদনগরের পার্শ¦বর্তী জনৈক বিল্লাল মিয়ার ধানক্ষেতে একটি শিশুর ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় লোকজন। খবর পেয়ে সুলতানার পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে সন্তানের লাশ শনাক্ত করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে। এ সময় স্থানীয় লোকজন সুলতানাকে উদ্ধার ও জিডির তদন্তে উদাসীনতা দেখানোয় প্রতিবাদ জানিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়ে। অবস্থা বেগতিক দেখে পুলিশ দ্রুত সুলতানার মৃতদেহ উদ্ধার শেষে ময়নাতদন্তের জন্য হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। নিহত সুলতানার পরিবার ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, জিডি করার পরও ওসি সুলতানাকে উদ্ধারে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। তবে এ বিষয়ে ওসি মোল্লা মনির জনকণ্ঠকে জানান, তিনি নিজেই জিডি গ্রহণ করেন। সেই সঙ্গে বিষয়টি তদন্তসাপেক্ষে বিহীত ব্যবস্থা নিতে এসআই জহিরুল ইসলামের ওপর দায়িত্ব ন্যস্ত করেন। তাৎক্ষণিকভাবে এসআই জহিরুল জিডির বাদী আফজাল মিয়ার বাড়িতেও যান। ওসি বলেন, সুলতানাকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু মৃতদেহ পচে যাওয়ায় তাৎক্ষণিক কোন আলামত শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পরই বলা যাবে। এলাকাবাসী এ নির্মম ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং জড়িতদের শাস্তি দাবি করেন। উল্লেখ্য, সুলতানার মৃতদেহ যে ধানক্ষেত থেকে উদ্ধার করা হয়েছে, সেখানকার ধান গাছগুলো হ-য-ব-র-ল অবস্থায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। এতে ধারণা করা যায়, সুলতানাকে দুর্বৃত্তরা হয়ত পাশবিক নির্যাতন চালানোর পরই হত্যা করে।
×