ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ডাক্তার, প্রকৌশলী নেবে ওমান ॥ এ মাসেই আসছে প্রতিনিধি দল

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ২০ আগস্ট ২০১৬

ডাক্তার, প্রকৌশলী নেবে ওমান ॥ এ মাসেই আসছে প্রতিনিধি দল

ফিরোজ মান্না ॥ এবার মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমান ডাক্তার প্রকৌশলীসহ বিভিন্ন পেশাজীবী নেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। গত বছরের শেষ দিকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী দেশটি সফর করে এসেছেন। এরপর অনেক দিন চলে যাওয়ার পরও ওমান বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের কোন প্রস্তাব দেয়নি। সম্প্রতি সৌদি আরব, জর্দান ও লেবানন বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের ঘোষণা দেয়ার পর ওমানও কর্মী নিয়োগের প্রস্তাব দিল। তবে ওমান বাংলাদেশ থেকে ডাক্তার, প্রকৌশলীসহ পেশাজীবী নিয়োগ দেবে। তারা সাধারণ কর্মী নিয়োগের জন্য কোন প্রস্তাব দেয়নি। এ মাসেই ওমানের একটি প্রতিনিধিদলের ঢাকা সফরে আসার কথা রয়েছে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, সৌদি আরব, জর্দান ও লেবাননে কর্মী নিয়োগের বিষয়ে মন্ত্রণালয় একটি কর্মপরিকল্পনা করছে। একই সঙ্গে ওমানে আগ্রহী ডাক্তার ও প্রকৌশলী নিয়োগের বিষয়েও একটি পরিকল্পনা তৈরি করা হবে। ওমানের প্রতিনিধিদল ঢাকা সফরে এলে আলোচনা সাপেক্ষে কৌশল ঠিক করা হবে। কৌশল নির্ধারণের জন্য একটি ‘টেকনিক্যাল টিম’ গঠন করবে মন্ত্রণালয়। এতে ওমানের প্রতিনিধিদলে টেকনিক্যাল কর্মকর্তারা থাকবেন। দেশটি ৪শ’ থেকে ৫শ’ ডাক্তার ও প্রকৌশলী নেবে। ওমানে বর্তমানে ৫ লাখ ৪৪ হাজার বাংলাদেশী কর্মী কর্মরত রয়েছেন। সূত্র জানিয়েছে, মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সরকারী জনশক্তি রফতানিকারক কোম্পানি বোয়েসেলের মাধ্যমে ডাক্তার ও প্রকৌশলীদের পাঠানো হতে পারে। সরকার থেকে সরকার (জি টু জি) পদ্ধতিতেই কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে। তবে সৌদি আরব, জর্দান ও লেবাননে জনশক্তি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কর্মী পাঠানোর বিষয়ে মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এখানে সরকারের কঠোর নিয়ন্ত্রণ থাকবে। কোন জনশক্তি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান ইচ্ছে করলেই কর্মী পাঠাতে পারবে না। তাদের মন্ত্রণালয় থেকে যথাযথ অনুমোদন নিতে হবে। এদিকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নূরুল ইসলাম বিএসসি বলেন, সৌদি আরবে কর্মী নিয়োগের বিষয়ে সরকার ব্যয় নির্ধারণ করবে। জনশক্তি রফাতানিকারক প্রতিষ্ঠান ইচ্ছেমতো ব্যয় নির্ধারণ করতে পারবে না। নির্ধারিত টাকার বেশি আদায় করলে অভিযুক্ত জনশক্তি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সৌদি আরবে দক্ষ-অদক্ষ কর্মী পাঠাতে কোন প্রকার অনিয়ম মেনে নেয়া হবে না। কর্মী পাঠাতে ন্যূনতম যে টাকা লাগবে সেটাই নির্ধারণ করা হবে। সৌদি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে এই ব্যয় নির্ধারণ করা হবে। মন্ত্রী জর্দান ও লেবাননে ১০ দিনের সফর শেষে দেশে ফিরেই কর্মী নিয়োগের বিষয়ে সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেছেন। মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, দীর্ঘ ছয় বছরেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর চলতি মাসে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে আবারও বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের ঘোষণা দেয় সৌদি আরব। এ মাসের শেষের দিকে কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করতে সৌদি প্রতিনিধিদলের ঢাকা সফরে আসার কথা রয়েছে। একজন কর্মী কত বেতনভাতা পাবেন তা নিয়েও আলোচনা হবে। বেসরকারী জনশক্তি রফতানিকারকরাই শতভাগ লোক পাঠাবেন। তবে এখানে কোন প্রকার মধ্যস্বত্বভোগী থাকতে পারবেন না। রেজিস্ট্রেশনকৃত কর্মীদের তালিকা অনুযায়ী কর্মী নিয়োগ করতে হবে। কোন দালালের মাধ্যমে কর্মী নিয়োগ করা যাবে না। যদি কোন জনশক্তি রফতানিকারকের বিরুদ্ধে সৌদিতে কর্মী পাঠানোর বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে তার লাইসেন্স বাতিলসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞারোপ করেছিল সৌদি আরব। দেশটিতে বর্তমানে সরকারী হিসাব অনুযায়ী ১২ লাখ ৮০ হাজার বাংলাদেশী বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন। বাস্তবে এ সংখ্যা আরও বেশি। এই হিসাবে সৌদি আরবই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার।
×