ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বেজিংয়ের সঙ্গে বন্ধুত্ব পররাষ্ট্র নীতির অন্যতম মূল লক্ষ্য

ঐতিহাসিক চীন সফরে সুচি

প্রকাশিত: ০৬:১০, ১৯ আগস্ট ২০১৬

ঐতিহাসিক চীন সফরে সুচি

হিলারি ক্লিনটন মিয়ানমারের নেত্রী আউং সান সুচিকে তার বান্ধবী বলে গণ্য করেন। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তাকে আগামী মাসে হোয়াইট হাউসে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। কিন্তু দেশের নেতৃত্ব গ্রহণের পর সুচি তার প্রথম সফরে কোন বড় রাজধানী হিসেবে এক ভিন্ন গন্তব্যস্থল বেছে নেন, আর তা হলো বেজিং। বুধবার রাতে বেজিং পৌঁছে সুচি এ গুরুত্বপূর্ণ আভাস দেন যে, তার পরাষ্ট্রনীতি চীনের প্রতি অধিক বন্ধুত্বপূর্ণ হবে। চীনও মিয়ানমারে নিজের অবস্থানকে শক্তিশালী করতে আগ্রহী। মিয়ানমারকে এক সামরিক একনায়কতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রে উত্তরণের কৃতিত্ব নোবেল পুরস্কার বিজয়ী সুচিকে প্রদান করা হয়। কিন্তু তার উদ্যোগ ওয়াশিংটনকে বিচলিত করবে বলে ঝুঁকি রয়েছে, কারণ ওবামা প্রশাসন মিয়ানমারের গণতন্ত্রমুখী পরিবর্তনকে এশিয়াতে এর পররাষ্ট্র নীতির এক বড় বিজয় বলে দেখে থাকে। এ পরিবর্তনের ফলেই সুচি ক্ষমতায় আসেন। বিশ্লেষক থান্ট মিন্ট-উ বলেন, সুচি চীনের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার আগ্রহ দীর্ঘদিন ধরেই ব্যক্ত করে এসেছেন। তিনি যে অন্য কোন বড় রাজধানীর আগে বেজিংকে সফরের জন্য বেছে নিয়েছেন তা তাৎপর্যপূর্ণ। থান্ট ‘হোয়ের চায়না মিটস ইন্ডিয়া : বার্মা এ্যান্ড দি নিউ ক্রসরোডস অব এশিয়া’ গ্রন্থের লেখক। তিনি আরও বলেন, চীন যত সতর্কই থাকুক না কেন, তারা নিশ্চিতভাবেই সম্পর্ক উন্নত করার সম্ভাবনা আঁচ করছেন এবং এ সফরকে সফল করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাবেন। এটি হবে এক ঐতিহাসিক সফর যা আগামী আরেক বছরের জন্য চীন-মিয়ানমার সম্পর্ক ভালভাবেই স্থির করবে। সুচির প্রতি চীনের এবারের লালগালিচা সংবর্ধনার সঙ্গে মিয়ানমারের সরকার বিরোধী নেত্রী থাকার সময় তিনি চীনে কেমন আচরণ পেয়েছিলেন তার পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। গত বছর প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হওয়ার সময় সুচি ২০ মিনিট দেরি করেন। জানা যায়, তখন চীনা প্রেসিডেন্ট সুচিকে বলেন, তিনিই (সুচি) প্রথম ব্যক্তি যিনি শিকে এতক্ষণ অপেক্ষায় বসিয়ে রেখেছিলেন। এখন চীন সেই ভর্ৎসনার জন্য দুঃখই প্রকাশ করছে, কারণ দেশটি মিয়ানমারে নিজেকে সবচেয়ে বড় শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে। চীন দরিদ্র দেশ মিয়ানমারের উপযোগী করে বিনিয়োগ প্রকল্প তৈরি করছে এবং চলতি মাসে প্রতিদ্বন্দ্বী জাতিগত গোষ্ঠী ও সরকারের মধ্যে শান্তি আলোচনায় মধ্যস্থতাকারী হিসেবে এক প্রভাবশালী অবস্থান গ্রহণ করছে। চীন ৩৬০ কোটি ডলার ব্যয় সাপেক্ষ মিতসোম বাঁধ প্রকল্পের কাজ শুরুর আশা করছে। ২০১১ সালে এ কাজ স্থগিত রাখা হয়। এটি দু’দেশের মধ্যকার বিরোধের অন্যতম বড় উৎস। চীন মিয়ানমারকে এক সামরিক সম্পদ হিসেবে দেখে থাকে এবং তা এমনই যে, কোন কোন নীতিনির্ধারক মিয়ানমারের দীর্ঘ সৈকত রেখাকে চীনের পশ্চিম উপকূল বলে মনে করেন। ভারত মহাসাগরের কাছাকাছি হওয়ায় মিয়ানমার মধ্যপ্রাচ্য থেকে চীনের তেল ও গ্যাস আমদানির এক সংক্ষিপ্ত পথ প্রদান করে। -নিউইয়র্ক টাইমস।
×