ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

গ্রেডের সঙ্গে নম্বরও

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ১৯ আগস্ট ২০১৬

গ্রেডের সঙ্গে নম্বরও

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দীর্ঘ ১৪ বছর পর পাবলিক পরীক্ষার ফলে জিপিএ’র সঙ্গে প্রাপ্ত নম্বরও পাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলের মধ্য দিয়ে বৃহস্পতিবার থেকেই শিক্ষার্থীরা প্রত্যেক বিষয়ের জিপিএ’র সঙ্গে স্ব স্ব বিষয়ে প্রাপ্ত নম্বর দেখারও সুযোগ পাচ্ছে। আদালতের রায় মেনে সকল শিক্ষা বোর্ড এবারই প্রথম গ্রেড পয়েন্টের সঙ্গে যুক্ত করল বিষয়ভিত্তিক নম্বর। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এইচএসসির ফল প্রকাশের সংবাদ সম্মেলনে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি ও ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমাদের ওয়েবসাইটে আজ থেকেই রচনামূলক, এমসিকিউ ও ব্যবহারিকের মার্কস (নম্বর) দেখা যাবে। শিক্ষার্থীরা অনলাইনে দেখতে পাবে। তারা ডাউনলোডও করতে পারবে। যার যারটা সে সে দেখবে, একজন আরেক জনেরটা দেখতে পাবে না।’ পরবর্তী সময়ে দেয়া ট্রান্সক্রিপ্টে প্রত্যেক বিষয়ে জিপিএ’র সঙ্গে মোট নম্বর দেয়া থাকবে। স্থানের অভাবে সেখানে কোন বিষয়ের রচনামূলক, এমসিকিউ ও ব্যবহারিকের নম্বর ও একই বিষয়ে দুটি পত্রের আলাদা নম্বর দেয়া থাকবে না। তবে আগামীতে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলে জিপিএ’র সঙ্গে নম্বর দেয়া হবে বলেও জানান আন্তঃবোর্ড চেয়ারম্যান। ২০০১ সাল থেকে জিপিএ পদ্ধতিতে এসএসসি ও ২০০৩ সাল থেকে এইচএসসির ফল প্রকাশ হয়ে আসছে। এর আগে এ দুটি পরীক্ষার ফলে নম্বরের ভিত্তিতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগ পেত শিক্ষার্থী। এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘পরীক্ষার্থীর নম্বরও আমরা দিয়ে দেব। সে তা তার ফলের সঙ্গে পাবে। তবে আমরা রচনামূলক, এমসিকিউ, ব্যবহারিক- এ তিন ভাগে নম্বর দেই। কেউ ৫১ দেখে ভাবল আমি ফেল করলাম কেন। প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে আলাদা করে পাস করতে হবে। একটা ফেল করলে ফেল ধরতে হবে। এটা (নম্বর দেয়া) নতুন, তাই বিষয়টি স্পষ্ট করে দিলাম।’ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড থেকে প্রাপ্ত নম্বরকে লেটার গ্রেডে রূপান্তরের পদ্ধতি প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, ৮০ থেকে ১০০ নম্বর পেলে সেটি এ প্লাস হিসেবে বিবেচিত হবে। এক্ষেত্রে গ্রেড পয়েন্ট ৫। এ গ্রেডের নম্বর সীমা ৭০ থেকে ৭৯ পর্যন্ত, এক্ষেত্রে গ্রেড পয়েন্ট ৪। কোন বিষয়ে ৬০ থেকে ৬৯ নম্বর পেলে সেটি এ মাইনাস হিসেবে বিবেচিত হবে, এক্ষেত্রে ৩ দশমিক ৫ গ্রেড পয়েন্টে গণনা হবে। লেটার গ্রেড বি এর জন্য গ্রেড পয়েন্ট ৩, এক্ষেত্রে নম্বর সীমা ৫০ থেকে ৫৯। সি গ্রেডে শিক্ষার্থীদের ৪০ থেকে ৪৯ নম্বর তুলতে হবে। এক্ষেত্রে গ্রেড পয়েন্ট ২। কৃতকার্য হয়ে ন্যূনতম ডি গ্রেড পেলে তার গ্রেড পয়েন্ট ১। আর এ গ্রেডের নম্বর সীমা ৩৩ থেকে ৩৯। ৩৩ এর কম নম্বর পেলেই এফ গ্রেড হিসেবে বিবেচিত হবে। ০ থেকে ৩২ নম্বর পেলে অকৃতকার্য হিসেবে বিবেচিত হবে, যার কোন গ্রেড পয়েন্ট নেই। এর আগেই মন্ত্রণালয় ও বোর্ডসূত্র ফল প্রকাশের পদ্ধতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। জানানো হয়, শীঘ্রই শিক্ষার্থীদের ট্রান্সক্রিপ্টে জিপিএ’র সঙ্গে প্রাপ্ত নম্বরও জানিয়ে দেয়া হবে। এক পরীক্ষার্থীর রিট আবেদনে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের প্রেক্ষাপটে প্রাপ্ত নম্বর প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। জানা গেছে, এমন একটি দাবি ছিল বহুদিন ধরেই। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বলে আসছিল, যে একটি বিষয়ে ৮০ নম্বর পায় তার গ্রেডও বলা হয় এ প্লাস আবার যে ৯৯ পায় তার গ্রেডও একই। কিন্তু শিক্ষার্থীরা জানতে পারে না সে আসলে কত পেল। স্কুল ও কলেজে ভর্তির সময়েও অনেক শিক্ষার্থীর জিপিএ সমান হলে প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের মধ্য থেকে সেরাদের নির্বাচন করতে পারে না। আসনের তুলনায় শিক্ষার্থী বেশি হলে সেক্ষেত্রে মেধা যাচাই করতে ব্যর্থ হয় প্রতিষ্ঠানগুলো। এমন নানা জটিলতা নিরসনে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর ট্রান্সক্রিপ্টে প্রতিটি বিষয়ের জিপিএ’র সঙ্গে প্রাপ্ত নম্বর দেখার সুযোগ দিল শিক্ষা বোর্ড।
×