ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের গাফিলতি দায়ী!

হজ ফ্লাইটে সিট খালি যাচ্ছে বিমানের

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ১৮ আগস্ট ২০১৬

হজ ফ্লাইটে সিট খালি যাচ্ছে বিমানের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের গাফিলতি ও দায়িত্বহীনতার কারণে প্রতিটি হজ ফ্লাইটে সিট খালি যাচ্ছে বিমানের। সরকারী ৪ হাজার ৮০০ কোটা বরাদ্দ, রিপ্লেসমেন্ট ও মাহরাম সমস্যা সমাধানেও কালক্ষেপণ করা হচ্ছে। এ কারণে বিমানের ১০টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। দ্রুত এসব সমস্যা দূর করাসহ ৮ দফা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে হজ এজেন্সিস এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)। তবে ধর্ম মন্ত্রণালয় অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, হজের নামে মানবপাচার ঠেকাতে আবেদন যাচাই-বাছাই করতে হচ্ছে। এর সঙ্গে ফ্লাইটের সিট খালি যাওয়ার কোন সম্পর্ক নেই বরং কিছু এজেন্সি ইচ্ছা করেই হজযাত্রীদের জিম্মি করে অনৈতিক দাবি পূরণের চেষ্টা করছে। বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করে হাব। সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ ইব্রাহিম বাহার লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন হাব মহাসচিব শেখ আবদুল্লাহ ও সহসভাপতি ফরিদ আহমেদ মজুমদার। উপস্থিত ছিলেন হাবের যুগ্মমহাসচিব মোজাম্মেল হোসেন কামাল, অর্থ সচিব ফজলুল ওয়াহাব মামুন, সাংস্কৃতিক সচিব হাফেজ নুর মোহাম্মদ ও জনসংযোগ সচিব সায়েম মোহাম্মদ হাসান। উল্লেযোগ্য দাবি হলো- সৌদি সরকারের বিশেষ বিবেচনায় অনুমোদিত বাংলাদেশের কোটার অতিরিক্ত ১১ হাজার হজযাত্রীর যাওয়ার ব্যবস্থা করা ও ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সিটি চেক-ইনের নামে এজেন্সির এ্যাকাউন্ট হতে টাকা স্থানান্তরের আদেশ স্থগিত করা। পাশাপাশি মোনাজ্জেম, মাহরাম, হজযাত্রী প্রতিস্থাপন ও স্থানান্তরের প্রক্রিয়া দ্রুত করা। এছাড়া ৩ মোয়াল্লেমের যাত্রী পরিবহনের বাধ্যবাধকতা প্রত্যাহার এবং ধর্ম মন্ত্রণালয়, আশকোনা, মক্কা-মদিনার হজ অফিসের সমন্বয়হীনতা দূর করা। হাব সভাপতি ইব্রাহিম বাহার বলেন, হজযাত্রীদের মাহরাম ও প্রতিস্থাপন যোগ্যদের বিষয়ে পরিচালক হজ যথাযথ কার্যক্রম পরিচালনা না করায় হজ ব্যবস্থাপনায় বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। ধর্ম সচিব মনগড়াভাবে সিটি চেক-ইনের নামে হজযাত্রী প্রতি ৫০ ডলার আদায় করছেন। এটি সম্পূর্ণ ন্যায়ের পরিপন্থী। এসব বন্ধ না করা হলে হজযাত্রী ও হজ এজেন্সিদের নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচী ঘোষণারও হুঁশিয়ারি দেন হাব সভাপতি। সরাসরি ধর্ম মন্ত্রণালয়কে দায়ী করে হাব মহাসচিব শেখ আবদুল্লাহ বলেন, ধর্ম সচিবের নির্দেশে হজ পরিচালক প্রতিস্থাপন হজযাত্রীদের ডিও (আধা সরকারীপত্র) ইস্যু করছেন না। সময়ক্ষেপণ করছেন অথচ টাকা দিলে কাজ করছেন তিনি। এতে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হচ্ছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ধর্মসচিব মোঃ আবদুল জলিল বলেন, মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হজ নীতিমালা মেনেই সব কিছু করা হচ্ছে। মানবপাচার রোধে প্রতিস্থাপনযোগ্য আবেদনগুলো কঠোরভাবে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। মৃত্যুজনিত ও অসুস্থতার কারণে একটি এজেন্সির ২/৪ জন প্রতিস্থাপন হতেই পারে। কিন্তু দেড় শ’ হজযাত্রীর মধ্যে ৩০/৪০ জনের প্রতিস্থাপন হতে পারে না, তা অস্বাভাবিক। নীতিমালা ভঙ্গ করে তো আমরা প্রতিস্থাপন করতে পারি না। তবে আজকালের মধ্যে সব সমস্যার সমাধান হবে বলেও জানান সচিব। টাকা নিয়ে কাজ করার অভিযোগ প্রসঙ্গে হজ পরিচালক ড. আবু সালেহ মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল বলেন, অসুস্থ ব্যক্তির মেডিক্যাল সনদ দিয়েছেন একজন অধ্যাপক। তার মোবাইল নম্বরে ফোন করে দেখা গেছে এটি চালের আড়তের নম্বর। এটি না দেয়ার সংশ্লিষ্ট এজেন্সি পদত্যাগ দাবি করেছে। নানা অপবাদ দিচ্ছে। অনৈতিক দাবি না মানলেই তারা পদত্যাগ দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করার হুমকি দিচ্ছেন। এজেন্সির প্রতি বিমানের আহ্বান ॥ এদিকে যাত্রী স্বল্পতায় ১২ দিনে ১০টি হজ ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় জটিলতায় পড়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। এই পরিস্থিতিতে বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে হজ এজেন্টদের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে যাত্রীর আসন ও টিকেট নিশ্চিত করতে অনুরোধ করেছে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠানটি। বিমানের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘বাতিলকৃত ফ্লাইটের কারণে বিমানের হজযাত্রী পরিবহনে ৫ হাজার আসনের ক্যাপাসিটি খোয়া গিয়েছে। গত ৪ অগাস্ট শুরু হওয়া হজ ফ্লাইট পরিচালন কার্যক্রমের আওতায় এ পর্যন্ত বাতিলকৃত ফ্লাইটের কারণে আর্থিক ও মারাত্মক যাত্রী সঙ্কটের মুখোমুখি হয়েছে বিমান।
×