ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিএনপির জন্মই জামায়াতের গর্ভ থেকে ॥ আওয়ামী লীগ

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ১৮ আগস্ট ২০১৬

বিএনপির জন্মই জামায়াতের গর্ভ থেকে ॥ আওয়ামী লীগ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ বিএনপির সঙ্গে আলোচনার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা বলেছেন, বিএনপির জন্মই হচ্ছে জামায়াতের গর্ভ থেকে। একাত্তরের ঘাতক ও স্বাধীনতাবিরোধীরা সবাই তাদের (বিএনপি) সঙ্গে একীভূত হয়ে গেছে। সব রাজাকার, আলবদররা এখন এই দলটির ছাতার তলে রয়েছে। তাই বিএনপির সঙ্গে কিসের আলোচনা? কিসের সমঝোতা? মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির সঙ্গে একাত্তরের ঘাতক শক্তির কোনদিন সমঝোতা হতে পারে না, হবেও না। বুধবার রাজধানীতে জাতীয় শোক দিবস এবং ২১ আগস্ট ভয়াল গ্রেনেড হামলা উপলক্ষে পৃথক পৃথক সমাবেশে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা এসব কথা বলেন। জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বিবি ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘জাতির লক্ষ্য পূরণের রাজনীতি ও বর্তমান বাস্তবতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় খাদ্যমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, একাত্তরের প্রতিশোধ নিতেই স্বাধীনতাবিরোধী চক্র আইএসের মতো বিভিন্ন রূপে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। আর এ ষড়যন্ত্রে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তাই দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র রুখতে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। তিনি আরও বলেন, পাকিস্তানের প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য এ দেশে বিএনপির জš§ হয়েছিল। এ জন্য বিএনপি জামায়াতকে ছাড়তে পারে না। বিএনপি রাজনৈতিক সুবিধা পেতে যদি জামায়াত ছাড়ে, তারপরও মানুষ হত্যাকারীদের সঙ্গে আলোচনা হবে না। কারণ একাত্তরের ঘাতকরা সবাই তাদের (বিএনপি) সঙ্গে একীভূত হয়ে গিয়েছে। অনেকে তাদের সঙ্গে সমঝোতা ও আলোচনার কথা বলেন। জামায়াত ছাড়লে বিএনপির সঙ্গে আলোচনার কথা বলেন। কেন আলোচনা করা হবে? বিএনপির জš§ই হয়েছে জামায়াতের গর্ভ থেকে, তাহলে কেন তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে? তাদের সঙ্গে আলোচনার প্রশ্নই উঠে না। যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে, ২০০৪ সালে শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চেয়েছে, যারা আগুন সন্ত্রাসী তাদের সঙ্গে কিসের আলোচনা? খাদ্যমন্ত্রী বলেন, একাত্তরের পরাজিত শক্তিরা প্রতিশোধস্পৃহা থেকেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল। আর জিয়াউর রহমান ছিলেন তার নেপথ্যের নায়ক। অন্যদিকে পেছনের শক্তি হিসেবে কাজ করছিল পাকিস্তান ও আমেরিকা। কারণ ওই দিন পাকিস্তানী দূতাবাস এবং আমেরিকান দূতাবাস সারারাত খোলা ছিল। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি বাহাদুর ব্যাপারীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এমপি, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা ফারুক হোসেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক মারুফা আক্তার পপি, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আরিফা রহমান রুমা প্রমুখ। উন্নয়ন রুখতেই জঙ্গীথাবা- নানক ॥ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি বলেছেন, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এক অবিচ্ছেদ্য নাম। খুনীচক্র জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করলেও তাঁর স্বপ্ন ও দর্শনকে ধ্বংস করতে পারেনি। বুধবার আদাবরে ৩০ ও ১০০ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভা ও দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। নানক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের চলমান উন্নয়ন, অগ্রগতি ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারাকে বাধাগ্রস্ত করতে দেশ-বিদেশের ষড়যন্ত্রকারীরা জঙ্গী ও সন্ত্রাসবাদের কালোথাবা বিস্তারের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। জাতির ট্র্যাজেডি ১৫ ও ২১ আগস্টের মাস্টারমাইন্ডদের ব্যাপারে সদা সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কর্ম ও দর্শনের আলোকে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে গেছে। তিনি দলীয় নেতাকর্মীসহ দেশপ্রেমিক জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করে ১৫ আগস্টের ষড়যন্ত্রের বদলা নেয়ার আহ্বান জানান। স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ইয়াছিন মোল্লার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন আদাবর থানা আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল মান্নান, কাদের পাটোয়ারী, শাহ আলম রানা, যুবলীগ নেতা আরিফুর রহমান তুহিন, আবদুল লতিফ প্রমুখ। জন্মদিনের তারিখ জালিয়াতের দায়ে খালেদা জিয়া অভিযুক্ত- ড. হাছান ॥ আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ভুয়া জন্মদিনের তারিখ জালিয়াতের দায়ে অভিযুক্ত। হাওয়া ভবনের অর্থায়ন এবং তারেক রহমানের প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছিল। বিএনপি সরকারের আমলে দেশ সন্ত্রাসের স্বর্গরাজ্য ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার তা প্রতিহত করেছে। জঙ্গী দমনে সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের চেয়েও সফল। বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত ‘১৭ আগস্ট সারাদেশে সিরিজ বোমা হামলা ও খালেদা জিয়ার জš§দিন নিয়ে ভাওতাবাজি’ শীর্ষক এক মানববন্ধনে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, খালেদা জিয়া জঙ্গী পোষেন, দুধ-কলা দিয়ে তাদের লালন-পালন করেন। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে দেশে জঙ্গী হামলা, বাংলা ভাইয়ের উত্থান, সারাদেশে সিরিজ বোমা হামলাসহ ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা- সবই সংঘটিত হয়েছে হাওয়া ভবনের তত্ত্বাবধানে। বিএনপি-জামায়াতের পৃষ্ঠপোষকতায় সম্প্রতি জঙ্গীরা সারাদেশে তা-ব চালাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, জাতীয় শোক দিবসে জন্মদিনের কেক না কাটার সিদ্ধান্তের সঠিক কারণ জাতির কাছের স্পষ্ট না করায় খালেদা জিয়া জাতির সঙ্গে আরেকটি প্রতারণা করেছেন। আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানার সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, স্বাধীনতা পরিষদের ঢাকা মহানগরের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন টয়েল প্রমুখ।
×