ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সৌদিতে কর্মী পাঠানোর ব্যয় নির্ধারণ করবে সরকার

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ১৮ আগস্ট ২০১৬

সৌদিতে কর্মী পাঠানোর ব্যয় নির্ধারণ করবে সরকার

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ সৌদি আরবে যেতে আগ্রহী বাংলাদেশী কর্মীদের অভিবাসন ব্যয় সরকার নির্ধারণ করবে। কোন রিক্রুটিং এজেন্সি নির্ধারিত অর্থের বেশি আদায় করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বুধবার প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি এসব কথা বলেন। প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি সৌদি আরবে দক্ষ অদক্ষ শ্রমিকের বাজার উন্মুক্ত হয়েছে। সেখানে শ্রমিক পাঠাতে কি পরিমাণ অর্থ ব্যয় হবে, সৌদি দূতাবাসের সঙ্গে কথা বলে তা নির্ধারণ করে দেবে বাংলাদেশ সরকার। সৌদিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে আলোচনা করে স্বল্প অভিবাসন ব্যয় নির্ধারণ করা হবে। তবে সরকার নির্ধারিত অর্থের বেশি কোন রিক্রুটিং এজেন্সি আদায় করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। জর্দান সফরের বিষয়ে নুরুল ইসলাম বিএসসি বলেন, ৬-৯ আগস্ট জর্দানের শ্রমমন্ত্রী আলী আল গাজায়ীর সঙ্গে তার নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে কৃষি ও নির্মাণখাতসহ সব খাতে পুরুষ কর্মী পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সেদেশে কত পুরুষ কর্মী নিয়োগ হবে তার চাহিদার নিরিখে যথাযথ সিদ্ধান্ত নেবে উভয় দেশ। এছাড়া দেশটিতে গৃহকর্মীদের কোন প্রকার শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন রোধ, পরিমিত খাবার ও নিয়মিত বেতন পরিশোধের বিষয় নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জর্দানের শ্রম মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলেও জানান তিনি। লেবানন সফর প্রসঙ্গে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, ১১-১৩ আগস্ট লেবানন সফরকালে সে দেশের শ্রমমন্ত্রী সিজান আজ্জির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়েছে। সে দেশের মন্ত্রী বাংলাদেশ থেকে আরও নারী ও পুরুষ কর্মী নেয়ার পাশাপাশি তাদের বেতন বৃদ্ধির আশ্বাস দিয়েছেন। লেবাননে ডাক্তার, নার্স, নির্মাণখাতসহ সকল খাতে কর্মীর চাহিদা রয়েছে। লেবাননে কর্মী নিয়োগের বিষয়ে অনতিবিলম্বে উভয় দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা সই হবে বলেও জানান প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী। সৌদি আরবের শ্রমবাজার উন্মুক্তের পর বাংলাদেশ থেকে পুরুষ কর্মী নিতে দেশটি থেকে চাহিদাপত্র আসা শুরু হয়েছে বলেও জানান প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে সৌদি আরব থেকে ১০০ থেকে ১৫০ জন করে দুইটি কোম্পানির কাছ থেকে চাহিদাপত্র এসেছে। মালয়েশিয়া জিটুজি প্লাস চুক্তির আওতায় কর্মী পাঠানোর সর্বশেষ অবস্থা জানতে চাইলে নুরুল ইসলাম বিএসসি বলেন, মালয়েশিয়ার ব্যাপারে আমরা এখনও অন্ধকারে। মালয়েশিয়া কি করতে চায় সেটা আমরা জানি না। তবে সেখানে কোন সিন্ডিকেশন করতে দেব না। সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। আমরা সেখানে ৭৩৫টি এজেন্সির তালিকা পাঠিয়ে দিয়েছি। এই ৭৩৫ জনই কর্মী পাঠাতে পারবে বলে আশা করি। মালয়েশিয়ায় কর্মী যাওয়া কবে থেকে শুরু হবেÑ এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, সেটা মালয়েশিয়ার ওপরই নির্ভর করছে। মালয়েশিয়া যখন চাইবে, আমরা কর্মী পাঠাতে তৈরি আছি। তবে আমি বরাবরই বলে আসছি মালয়েশিয়ায় এখনও বাজার খোলা হয়নি। এখনই কাউকে আপনারা কেউ টাকা-পয়সা দেবেন না। মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব বেগম শামসুন নাহার বলেন, আমাদের টেকনিক্যাল টিম কাজ করে যাচ্ছে। সেখানে কর্মী পাঠানোর পুরো প্রক্রিয়া অনলাইনে হবে। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জাবেদ আহমেদ, আযহারুল হক, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) মহাপরিচালক সেলিম রেজা ও ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক গাজী মোহাম্মদ জুলহাস প্রমুখ। উল্লেখ্য, লেবানন ও জর্দান সফর করে সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী। তার এ সফর নিয়েই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
×