ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বয়সকে বৃদ্ধাঙ্গুলি এ্যাথলেটদের

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ১৮ আগস্ট ২০১৬

বয়সকে বৃদ্ধাঙ্গুলি এ্যাথলেটদের

মানুষ বাঁচে তার কর্মে, বয়সে নয়! পুরনো প্রবাদ কিন্তু অক্ষরে অক্ষরেই সত্য। এবার রিও অলিম্পিকে সেটাই প্রমাণ করেছেন ক্রিস্টিন আর্মস্ট্রং। মহিলা সাইক্লিংয়ের রোড রেসে কম বয়সী প্রতিযোগীদের হারিয়ে তিনিই জিতেছেন স্বর্ণপদক। টাইম ট্রায়ালে তিনি ৪৪ মিনিট ২৬.৪২ সেকেন্ড সময় নিয়ে শেষ করেন সবার আগে। আর পরদিনই তিনি ৪৩ বছরে পা দেন। এর মধ্যে দিয়ে আরেকটি বিষয় প্রমাণ হয়ে গেছে যে বয়সের কারণে কারও গতি ধীর হয় না। এবার রিও অলিম্পিকে বেশ কয়েকজন বয়সী তারকা ক্রীড়াবিদ এ বিষয়টি প্রমাণ করেছেন। ব্যক্তিগত সাঁতার ইভেন্টে সবচেয়ে বেশি বয়সে স্বর্ণ জিতে ইতিহাস গড়েন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৫ বছর বয়সী সাঁতারু এ্যান্থনি আরভিন। আর কুয়েতের মার্কসম্যান ফিহেদ আল দিহানি ৪৯ বছর বয়সে জিতেছেন পুরুষদের ডাবল ট্র্যাপ ইভেন্টে স্বর্ণপদক। আর জিমন্যাস্টিকস সবসময় কিশোরীদের ইভেন্ট হিসেবে গণ্য হলেও এবার তাক লাগিয়েছেন উজবেকিস্তানের ওকসানা জুসোভিতিনা। ৪১ বছর বয়সী এ মহিলা জিমন্যাস্ট যাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন তারা অধিকাংশই ছিলেন তার ছেলের চেয়ে কম বয়সী। অথচ তিনি তাক লাগিয়েছেন দুর্দান্ত ও সুনিপুণ নৈপুণ্য প্রদর্শন করে। যখন প্রথম অলিম্পিকে অংশ নেন ওকসানা সে সময় বর্তমান প্রতিযোগীদের অনেকেই জন্মগ্রহণ করেছেন। এবার অলিম্পিক এছাড়াও দেখেছে বিশ্ব মাতানো জীবন্ত কিংবদন্তিদের বেশি বয়সে শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখা। ২৯ বছর বয়সী বিশ্বরেকর্ডধারী জ্যামাইকান স্প্রিন্টার উসাইন বোল্ট এবারও দ্রুততম মানব হয়েছেন। ৩১ বছর বয়সী কিংবদন্তি সাঁতারু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মাইকেল ফেলপস এবারও ৫ স্বর্ণপদক জিতে তাক লাগিয়েছেন। তবে এসবকে ছাপিয়ে গেলেন ক্রিস্টিন। যেদিন টাইম ট্রায়ালে ক্রিস্টিন জিতলেন পরদিনই ছিল তার ৪৩তম জন্মদিন। এ ধরনের ইভেন্টে গতিটাই আসল। আর গতি নির্ভর করে শক্তিমত্তা, সামর্থ্য ও তারুণ্যের ওপর। কিন্তু ক্রিস্টিন সেসব ব্যাখ্যাকে ভুল প্রমাণ করে নিজেকে সবচেয়ে গতিময় সাইক্লিস্ট হিসেবে উপস্থাপন করলেন। জিতেছেন স্বর্ণপদক। যখন তিনি রেসটা শেষ করছিলেন তখন পরিশ্রম এবং শরীরের ওপর শক্তির চাপ প্রয়োগে নাক দিয়ে রক্ত ঝরছিল ক্রিস্টিনের। তার ৫ বছরের পুত্র সন্তান সেটি দেখে দৌড়ে চলে আসে ক্রিস্টিনের কাছে। অনেকেই তাকে দেখে বিস্মিত হন এবং অবাক হয়ে প্রশ্ন করেন, ‘এই বয়সেও তুমি কেন সাইক্লিংয়ের মতো কষ্টকর প্রতিযোগিতা ছেড়ে দিচ্ছ না। তুমি তো বেশ কয়েকবার হিপ সার্জারিও করিয়েছো!’ এর উত্তরে শুধু একটা কথাই বলেন ক্রিস্টিন- ‘কারণ আমি এটা খুব ভাল পারি!’ কতটা ভাল যে পারেন সেটা স্বর্ণপদক জিতেই দেখিয়ে দিয়েছেন। বয়স তাকে বাধা দিতে পারেনি। এ বিষয়ে ক্রিস্টিন বলেন, ‘অনেকে মনে করে যারা ৫০ বছর পেরিয়েছে তারা কঠিন কাজগুলো করতে গিয়ে নাজুক অবস্থায় পড়েন। বিভিন্ন গবেষণাও সেটাই বলে। এখন আমার সেটাকে অত বেশি সত্য মনে হচ্ছে না। আমার বিষয়ে আপনারা কি বলবেন?’
×