ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

৮২-তে গুলজার

প্রকাশিত: ০৪:১৪, ১৮ আগস্ট ২০১৬

৮২-তে গুলজার

সঙ্গীত, কবিতা ও চলচ্চিত্র মানুষের চিত্ত বিনোদনের খোরাক জোগায়। এক্ষেত্রে সবগুলোর নিজস্ব মাত্রা আলাদা। অর্থাৎ স্বাতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্য আছে এসব নান্দনিক শিল্পকর্মের। নিজস্বতা সৃজনকর্মে বিশেষ আবেদন তৈরি করে। প্রেমহীন, মায়াহীন ও মানবিক মূল্যবোধহীন জীবনের কাছে হেরে গিয়ে, মানুষকে বার বার ফিরে আসতে হয় চিত্ত বিনোদনের এই অমিয় ধারায় স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে। সঙ্গীত অন্তর আত্মার পবিত্র সুধা, কবিতা বেঁচে থাকার জন্য শক্তির জোগানদাতা। আর চলচ্চিত্র বলা যায় জীবনের প্রতিচ্ছবি। জীবনের নানা রূপের ছবি এর ক্যানভাসে অঙ্কিত হয়। আত্মিক দাবি ছাড়া কেউই এর অভাব পূরণে এগিয়ে আসতে পারে না। অবশ্য খুব কম মানুষই এই অভাব অনুভব করে। কারণ গভীর উদ্বেগ ছাড়া গভীরে প্রবেশ করা যায় না! তেমনি এক অতলস্পর্শী নান্দনিক শিল্পকর্মের স্রষ্টা সাম্পোরান সিং কালরা ওরফে গুলজার। অবশ্য তাঁর অসংখ্য ভক্তবৃন্দ তাকে গুলজারের বাইরে অন্য নামে মানতে নারাজ। * তুজছে নারাজ নেহি জিন্দেগী * আনেওয়ালা পাল জানেওয়ালা হে * তেরে বিনা জিন্দেগী ছে... এ রকম অজস্র মনমুগ্ধকর গানের স্রষ্টা তিনি। লিখেছেন বহু কবিতা ও চলচ্চিত্রের স্ক্রিপ্ট। পরিচালনা করেছেন মানবিক চলচ্চিত্র। কাছে না এসে, পাশে, না বসেও বিচরণ তাঁর কোটি হৃদয়ে। তাঁর কবিতা, গান ও চলচ্চিত্রের মধ্যমে তিনি শিখিয়ে আসছেন, জীবনে চরম প্রতিকূল পরিস্থিতিতে কিভাবে আত্মবিশ্বাস ধরে রাখতে হয়। কিভাবে মজতে হয় মনের অরূপ মাঝে! আধ্যাত্মবাদ বলি আর সুফিবাদ বলি তার সব সৃষ্টিই সিক্ত করে আমদের হৃদয়। একটা ছোট্ট উদাহরণ, সময়টা সত্তর দশকের মাঝামাঝি এক পিতা তার পতিতা কন্যাকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে প্রাণপণ চেষ্টা করছে। সঙ্গে পিতৃত্বের গভীর অনুরাগ। এটা ছিল গুলজারের সর্বাধিক এ্যাওয়ার্ড পাওয়া চলচ্চিত্র মৌসমের গল্প। জীবনের খুব বিশ্রী রূপকে সুন্দর করার অদম্য চেষ্টা মানুষকে আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী করেছিল এ চলচ্চিত্রের গল্পের মধ্যদিয়ে। এ ছাড়াও আন্ধি, কৌশিস, পরিচয়, খুশবুর মত জীবনমুখী গল্প নিয়ে চলচ্চিত্র বানিয়ে স্পর্ষ করেছেন দর্শকদের অনুভূতি । লিখেছেন গ্রিন পোয়েম, সাইলেন্স, পুল্টো, রাত পাশমিকি, রাভিপার সহ অনেক সমৃদ্ধ কবিতার বই। অর্জিত পুরস্কারের কথা উল্লেখ করলে তার তালিক অনেক দীর্ঘ হবে। সংকট যত গাঢ়ই হোক না কেন উত্তরণ অবশ্যই সম্ভব। এ মন্ত্র তিনি দীর্ঘ সময় দিয়ে আসছেন। ১৮ আগস্ট এই মানুষটির বিরাশিতম জন্মদিন।অজস্র গান ও কবিতা লিখে এবং চলচ্চিত্র বানিয়ে গেল শতাব্দী থেকে এখন পর্যন্ত অনুপ্রেয়ণা জুগিয়ে আসছেন এই নন্দিত ব্যক্তিটি। আজও মনে পড়ে সেই অলিক গোধূলি... এ বিকেল সেও তো অলিক- সেদিনও সে ছিল পাশে পাশে আজও আছে নিকটেই তবু দূরগামী রেলগাড়ি হেন ডাক দিয়ে যায় আরেক গোধূলি।... গুলজারের কবিতা আমাদের অনুভূতিকে স্পর্শ করে, ডুবতে সাহায্য করে গহীন স্বপ্নীল অরণ্যে। আরও দীর্ঘ হোক গুলজারের আশীর্বাদের পরশ...
×