ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অতিরিক্ত ৬ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ;###;খুশির ঝিলিক কৃষকের মুখে

মাদারীপুরে পাটের বাম্পার ফলন

প্রকাশিত: ০৪:০৬, ১৮ আগস্ট ২০১৬

মাদারীপুরে পাটের বাম্পার ফলন

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর ॥ মাদারীপুরের মাটি পাট চাষের উপযোগী হওয়া সত্ত্বেও এক দশক ধরে উৎপাদন খরচ বেশি হওয়া এবং ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় কৃষকরা পাট চাষে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। কিন্তু গত বছর থেকে বাজারে পাটের চাহিদা বৃদ্ধি ও দাম ভাল পাওয়ায় কৃষকরা পাট চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। এবার নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অতিরিক্ত ৬ হাজার হেক্টর জমিতে পাটের চাষ হয়েছে। কৃষকদের প্রশিক্ষণ, উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজ, সুষম সার প্রয়োগ, সেচ ব্যবস্থাপনা ও পোকা মাকড় দমনের কারণে এ বছর পাটের ফলন বৃদ্ধি পেয়েছে। কৃষকরা এখন পাট কাটা, জাগ দেয়া, আঁশ ছাড়ানোর এবং শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। পাটের দাম ভাল ও বাজারে চাহিদা থাকায় তাদের চোখে-মুখে এখন খুশির ঝিলিক। মাদারীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর মাদারীপুরে পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। জেলায় এ বছর পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২৮ হাজার ১শ’ হেক্টর জমিতে। কিন্তু চাষ করা হয়েছে ৩৪ হাজার ২৮০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অতিরিক্ত ৬ হাজার ১৮০ হেক্টর জমিতে পাটের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৭ হাজার ৮২৫ হেক্টর, রাজৈরে ৬ হাজার ১৫ হেক্টর, কালকিনিতে ৫ হাজার ৪৫০ হেক্টর এবং শিবচর উপজেলায় ১২ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে। গত বছর জেলায় পাট চাষ করা হয়েছিল ৩০ হাজার ২৮০ হেক্টর জমিতে। পাট চাষের উপযোগী মাটি, অনুকূল আবহাওয়া এবং পাটের বীজ বপনের সময় উপর্যুপরি বৃষ্টি হওয়ার কারণে পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। এখন কৃষকরা পাট কাটা, জাগ দেয়া, আঁশ ছাড়ানো, ধোয়া ও শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। পুরুষের পাশাপাশি পাটের আশ ছাড়ানোর কাজে পরিবারের মহিলারাও সহযোগিতা করছেন। হাট-বাজারে পাট মণ প্রতি ১ হাজার ৯০০ থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পাটের ফলন এবং ভাল দাম পেয়ে কৃষকরা খুবই খুশি। কৃষকরা এ বছরের চেয়ে আগামী বছর থেকে দ্বিগুণ জমিতে পাট চাষ করবেন এমন আশা জেলা কৃষি কর্মকর্তাদের। রাজৈর উপজেলার বাজিতপুর গ্রামের পাট চাষী সিরাজ খান বলেন, আমি এবার ২ একর জমিতে পাট চাষ করেছি। পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে পাটের ভাল দাম পাচ্ছি এবং চাহিদাও ভাল। আগামী বছর আমি আরও বেশি জমিতে পাটের আবাদ করব আশা করি। মাদারীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আঃ রাজ্জাক বলেন, কৃষকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজ, সুষম সার প্রয়োগ, সেচ ব্যবস্থাপনা ও পোকা মাকড় দমনে সার্বক্ষণিক প্রশিক্ষণ প্রদান করায় পাটের ফলন বৃদ্ধি পেয়েছে। দাম ভাল পেয়ে আর্থিকভাবে লাভবানও হয়েছেন। পাটের ফলন ভাল হওয়ায় হেক্টর প্রতি ১০ বেল অর্থাৎ ৫০ মণ পাট উৎপন্ন হবে আশা করি। এ বছর মাদারীপুরে ৩৪ হাজার ২৮০ হেক্টর জমিতে ৩ লাখ ২২ হাজার ৮০০ বেল অর্থাৎ ১৬ লাখ ১৪ হাজার মণ পাট উৎপন্ন হবে।
×