ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতির আলোয়...

প্রকাশিত: ০৩:৫৭, ১৮ আগস্ট ২০১৬

সংস্কৃতির আলোয়...

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিকায় নির্মিত ‘মুক্তির গান’ চলচ্চিত্রটি দেখেছি। সেই চলচ্চিত্রে সংস্কৃতিকর্মীদের মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে জনমত গঠনে নানা চিত্র রূপ আমরা দেখেছি। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সময় রাজপথে সংস্কৃতিকর্মীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও আমরা দেখেছি। যে জাতি শিক্ষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে যতবেশি সমৃদ্ধশালী সে জাতি ততবেশি উন্নত। বাংলাদেশেও সংস্কৃতি চর্চার একটি স্বর্ণ যুগ ছিল। মানুষ নাটক ও থিয়েটারে যেত, গ্রামে-গ্রামে যাত্রাপালা অনুষ্ঠান আমাদের চিরন্তন ঐতিহ্য। এক সময় পাড়ায়-পাড়ায় তরুণদের ক্লাব থাকত। আমরা ক্লাব গড়ে তুলেছি। ক্লাবের সাহিত্য আড্ডা, নাটক চর্চা, খেলাধুলাসহ নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকা- আমরা দেখেছি। কোন কোন ক্লাবের লাইব্রেরিও ছিল। তখনকার নানা সাংস্কৃতিক কর্মকা- তরুণদের ভাল কাজে উৎসাহিত করত। কিন্তু এখন আমরা কি দেখছি? আমাদের সংস্কৃতির চেতনা শিশু মন থেকে গড়ে তোলা উচিত। জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে শিশুদের মধ্যে প্রথম সংস্কৃতির বীজ বপন হয়ে থাকে। খোঁজ নিলে দেখা যাবে বাংলাদেশের বহু প্রাইমারি, হাইস্কুল ও কেজি স্কুলে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হয় না। এমনকি জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় না। মনে রাখতে হবে আমাদের সংস্কৃতির মূল চেতনা হচ্ছে জাতীয় সঙ্গীত। যে শিক্ষালয়ে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হয় না ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় না সেখানে কেমন করে শিক্ষার্থীদের সংস্কৃতিবান ও দেশপ্রেমী করে তুলবেন? একসময় স্কুলগুলোতে নবাব সিরাজদ্দৌলা, রূপবান, শাহাজাহান, কাবুলীওয়ালাসহ সচেতনতামূলক বহু নাটক মঞ্চস্থ হতো। এখন কি সেসব আছে? এখন স্কুলে শিক্ষার্থীরা ফেসবুকে মগ্ন থাকে। তরুণরা ইন্টারনেটের অসৎসঙ্গের পাল্লায় পড়েছে। বিদেশে বসে বাংলাদেশী জঙ্গীরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে এই দেশের তরুণদের মগজধোলাই করছে। কিন্তু এই অবস্থার পরিবর্তন হওয়া প্রয়োজন। ভাল শিক্ষা মানে শুধু ভাল লেখাপড়া নয়, সুস্থ সংস্কৃতির চর্চাও একটি ভাল শিক্ষা। তাই আমাদের তরুণদের সংস্কৃতির বিপ্লবের দিকে টেনে আনতে হবে। একেবারে শিশু মন থেকে শিশুদের সংস্কৃতির ভা-ার ও ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচয় ঘটাতে হবে। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের হাজার বছরের সংস্কৃতির ঐতিহ্যকে লালনপালন করতে হবে। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধের গান, নাটকসহ নানা দেশীয় সাংস্কৃতিক কর্মকা-কে ছড়িয়ে দিতে হবে। সংস্কৃতির সুস্থ চর্চা তরুণদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করে। আর জঙ্গীবাদের মতো অশুভ শক্তিকে প্রতিরোধে দেশপ্রেম একটি রক্ষা কবচ। দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর, চট্টগ্রাম থেকে
×