ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

যশোর হাসপাতালে ছয় নলকূপ অকেজো

প্রকাশিত: ০৪:৩৭, ১৭ আগস্ট ২০১৬

যশোর হাসপাতালে ছয় নলকূপ অকেজো

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ বিশুদ্ধ পানীয় জলের চরম সঙ্কটে পড়েছেন যশোর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগী ও তাদের দেখভাল করতে আসা স্বজনরা। হাসপাতাল অভ্যন্তরে বসানো ৮টির মধ্যে ৬টি নলকূপই অকেজো হয়ে গেছে। জরুরী বিভাগের সামনে যে নলকূপটি সচল আছে সেটির পানি পানের অনুপযোগী। রান্নাঘরের সামনে স্থাপন করা আরেকটি নলকূপ আছে, তা থেকে পানি সংগ্রহ করা সবার জন্যে উন্মুক্ত নয়। ফলে এখানে ওষুধ সেবন ও তৃষ্ণা মেটাতে বোতলজাত পানিই একমাত্র ভরসা। এক্ষেত্রে ওষুধ কেনার টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে পানি কিনতে। সরেজমিন দেখা গেছে, হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনে দুটি নলকূপ আছে। একটি স্থায়ীভাবে অকেজো হয়ে রয়েছে কয়েক বছর যাবত। অন্যটি সচল থাকলেও এটি থেকে পানি সংগ্রহ করে ডাক্তার, নার্সসহ হাসপাতালের অন্য স্বাস্থ্যসেবীরাও পান করতেন। সপ্তাহখানেক ধরে নলকূপটি অকেজো হলেও মেরামতের ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ রয়েছে উদাসীন। জরুরী বিভাগের সামনে ৩টি নলকূপ রয়েছে। তার মধ্যে স্থায়ীভাবে দুটি অকেজো। যেটি সচল আছে তার পানি পান করা বিপজ্জনক। সবাইকে সতর্ক করা হয় কোন অবস্থাতেই যেন ওই নলকূপের পানি পান না করা হয়। তীব্র দুর্গন্ধযুক্ত পানি বের হয় সেখান থেকে। হাসপাতালের সংক্রামক ওয়ার্ডের পূর্ব পাশে দুটি নলকূপ আছে। একটি অকেজো থাকলেও অপরটির পানি ডায়রিয়া রোগীদের কাপড়-চোপড় ধুয়ার কাজে ব্যবহার হতো। কিন্তু সেটিও নষ্ট। সম্প্রতি রান্নাঘরের দক্ষিণে একটি গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। রোগীদের পানি সংগ্রহের জন্যে সেটি করা হলেও সেখানে প্রবেশের পথ উন্মুক্ত করা হয়নি। ফলে রোগীদের কোন উপকারে আসেনি। মোটকথা, হাসপাতালে বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহের কোন ব্যবস্থাই আপাতত নেই। অনেকে না জেনে জরুরী বিভাগের সামনের নলকূপ থেকে দুর্গন্ধযুক্ত পানি সংগ্রহ করে পান করছেন এবং রোগীদেরও পান করাচ্ছেন। আর যারা জানতে পারছেন তারা ছুটছেন ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে বোতলজাত পানি কেনার জন্যে। যশোর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ২৫০ ও করোনারি কেয়ার ইউনিটের ২৮টি শয্যার বিপরীতে প্রতিদিনই পাঁচ শতাধিক রোগী ভর্তি থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করেন। রোগীদের স্বজন ও স্বাস্থ্যসেবী মিলিয়ে প্রায় দেড় হাজার মানুষ অবস্থান করেন। এছাড়াও হাজার দুয়েক মানুষ বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসেন। এত মানুষের অবস্থান থাকলেও বিশুদ্ধ পানির অভাব নিয়ে সচেতন মহলে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। একদিকে ওষুধ ও পথ্য, অন্যদিকে পানি কিনতে গিয়ে অতিরিক্ত ব্যয়ের বোঝা মাথায় নিতে হচ্ছে বিপদগ্রস্ত মানুষকে। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক শ্যামল সাহা এ প্রসঙ্গে বলেন, নলকূপ নষ্ট ও রোগীরা বিশুদ্ধ পানির অভাবে আছেন এ বিষয়টি জানা ছিল। বিষয়গুলো যাদের দেখভাল করার কথা তারা যথাযথ দায়িত্ব পালন করেননি। ফলে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
×