ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঢাকা-চট্টগ্রাম ২৬৬ কিমি নতুন গ্রিডলাইন হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ১৬ আগস্ট ২০১৬

ঢাকা-চট্টগ্রাম ২৬৬ কিমি নতুন গ্রিডলাইন হচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সঞ্চালন ব্যবস্থার উন্নয়নে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত ২৬৬ কিলোমিটারের নতুন একটি গ্রিড লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি। সরকার এতদিন বিদ্যুত উৎপাদনের দিকে নজর দিয়ে এসেছে। কিন্তু উৎপাদনের সঙ্গে সঞ্চালন এবং বিতরণ ব্যবস্থার আশানুরূপ উন্নয়ন হয়নি। ভোগান্তি দূর করতে সরকার বিতরণ সঞ্চালনে নতুন প্রকল্প হাতে নিয়েছে। বিদ্যুত বিভাগ সূত্র বলছে, দেশে বিদ্যুত উৎপাদনর মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এসব বিদ্যুত কেন্দ্র উৎপাদনে আসলে বর্তমানের গ্রিড লাইন দিয়ে সঞ্চালন সম্ভব হবে না। দেশে বিদ্যুত কেন্দ্রর উৎপাদন ক্ষমতা ১৫ হাজার মেগাওয়াট হলেও একই সময়ে নয় হাজার মেগাওয়াটের বেশি সঞ্চালন করার অবকাঠামো নেই। ভারসাম্যহীন উৎপাদন এবং সঞ্চালন ব্যবস্থায় ভোগান্তি তৈরি হচ্ছে। পিজিসিবি সূত্র জানায়, ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত ৪২৮ সার্কিট কিলোমিটার অর্থাৎ ২৬৬ কিলোমিটার ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। এজন্য ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ চার হাজার ৫৬৭ কোটি টাকা। সঞ্চালন লাইনটি নারায়ণগঞ্জের মেঘনাঘাট থেকে চট্টগ্রামের মাদুনাঘাটকে সংযুক্ত করবে। ডিসেম্বর ২০২০ এর মধ্যে গ্রিড লাইনটি নির্মাণ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। প্রকল্পর সঙ্গে ৪০০ কেভি এর একটি এআইএস এবং একটি জিআইএস সাবস্টেশন নির্মাণ করা হবে। মোট ব্যয়ের মধ্যে এক হাজার ৩৪০ কোটি টাকা দেবে দেশের অন্যতম উন্নয়ন অংশীদার জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা), পিজিসিবি’র নিজস্ব তহবিল থেকে আসবে ২ হাজার ৭৬৭ কোটি টাকা এবং সরকারের তহবিল থেকে ব্যয় হবে ৪৯৫ কোটি টাকা। সরকার মাতারবাড়ি মহেশখালিকে ঘিরে বিশাল উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এখানে ১০ হাজার মেগাওয়াটের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের হাব গড়ে তোলা হবে। একই সঙ্গে নির্মাণ করা হবে একটি কোল টার্মিনাল। এই কয়লা খালাস বন্দরে গভীর সমুদ্রবন্দরের সুবিধা থাকবে। মহেশখালিতে একটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের জন্য সম্প্রতি চুক্তিও করা হয়েছে। এখানে আরও দুটি স্থায়ী এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া মহেশখালিকে একটি আধুনিক নগরী হিসেবে গড়ে তোলা হবে। এজন্য জাইকা শহর নির্মাণের সমীক্ষা করছে। এজন্য জাইকাই ঋণ দেবে সরকারকে। এর বাইরে মাতারবাড়ি কেন্দ্র থেকে বিদ্যুত আনার জন্য পৃথক একটি লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। কক্সবাজারের মাতারবাড়ি থেকে চট্টগ্রামের মাদুনাঘাট পর্যন্ত ৯২ কিলোমিটার বা ১৮৪ সার্কিট কিলোমিটার লাইন নির্মাণ করা হবে। গ্রিড লাইন নির্মাণে মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে এক হাজার ৯০ কোটি ৮০ লাখ টাকা। সরকার, পিজিসিবি এবং জাইকা প্রকল্পে বিনিয়োগ করবে। এখানে জাইকা ৭৮৭ কোটি টাকা, সরকার ২২৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা এবং পিজিসিবি নিজস্ব তহবিল থেকে ৮০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। আগামী বছর জুলাই থেকে প্রকল্পর কাজ শুরু হবে। এই প্রকল্পর ২০২০ এর ডিসেম্বরে। ওই সময়ে মাতারবাড়ি বিদ্যুত কেন্দ্র উৎপাদনে আসার কথা রয়েছে। মাতারবাড়ি কেন্দ্রর বিদ্যুত সঞ্চালনের জন্য কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত নতুন একটি গ্রিড লাইন নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে সরকার। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির-জাইকা অর্থায়নে কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বিদ্যুত কেন্দ্রটি নির্মাণ করছে। দেশের একক মালিকানায় থাকা এক হাজার ২০০ মেগায়োটের কেন্দ্রটি আমদানি করা কয়লায় চলবে। আগামী ২৪ আগস্ট বিদ্যুত কেন্দ্রটির দরপত্র জমা দেয়ার শেষ সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
×