ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জন্মদিনে এবার ফুলও নিলেন না খালেদা জিয়া

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ১৬ আগস্ট ২০১৬

জন্মদিনে এবার ফুলও নিলেন না খালেদা জিয়া

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ৭১তম জন্মদিন উপলক্ষে পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার বিকেল পাঁচটায় দলের পক্ষ থেকে এ দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, খালেদা জিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর জন্মদিন পালনের অনুষ্ঠান বাতিল করেছেন। তাই দলের পক্ষ থেকে তাঁর জন্মদিনের কোন কর্মসূচী নেই। দোয়া ও মিলাদ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাঁর দীর্ঘায়ু কামনা করা হয়েছে। প্রতি বছর বেগম জিয়ার জন্মদিন আনুষ্ঠানিকভাবে কেক কেটে পালন করা হলেও এ বছর হঠাৎই তিনি জন্মদিন পালন না করার সিদ্ধান্ত নেন। দলের পক্ষ থেকে আগেই জানানো হয়েছে, দেশের পরিস্থিতি বিবেচনায় বেগম জিয়া এবার জন্মদিন পালন করছেন না। বিএনপির এ সিদ্ধান্তকে ইতোমধ্যে অনেকেই স্বাগত জানিয়েছেন। ১৫ আগস্ট জন্মদিন পালন না করতে দীর্ঘদিন ধরেই বিএনপির ভেতরে এবং বাইরে থেকে চাপ ছিল। একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর শাহাদাতবার্ষিকীর দিনে খালেদা জিয়ার জন্মদিন পালন করায় বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনাও করা হয়। যদিও ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার জন্মদিন নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক রয়েছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে এবারের জন্মদিন পালন না করা হলেও ১৫ আগস্টের প্রথম প্রহরে খালেদা জিয়াকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দলের নেতাকর্মীরা। প্রথম প্রহরে রাত ১২টা ১ মিনিটে খালেদা জিয়াকে শুভেচ্ছা জানাতে গুলশান কার্যালয়ে হাজির হন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু প্রমুখ। এর আগে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের বেশ কিছুসংখ্যক নেতা ফুল নিয়ে গুলশান কার্যালয়ে ঢোকার চেষ্টা করেন। নেতাদের আনা ফুল ফিরিয়ে দেন বেগম খালেদা জিয়া। ফলে ফুল নিয়ে আসা নেতাদের কেউ কেউ কার্যালয়ের বাইরে ফুল রেখে ভেতরে ঢোকার অনুমতি পান। যদিও এবার জন্মদিনে কেক না কাটার বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল হানিফ বলেছেন, মামলার কারণে দলের নেতাকর্মীরা আসতে পারবে না বলে খালেদা জিয়া জন্মদিনের কেক কাটেননি। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া পাকিস্তানের আদেশে ভুয়া জন্মদিন পালন করেন। এর আগে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ১৫ আগস্ট জন্মদিন পালন না করতে একাধিকবার খালেদা জিয়ার প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। এর পরও তিনি গত বছর পর্যন্ত দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে কেক কেটে জন্মদিন পালন করেন। তবে এবার বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দেশের চলমান সঙ্কট, বন্যা পরিস্থিতি ও নেতাকর্মীদের জেল-গুম-খুনসহ সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে দলের চেয়ারপার্সন জন্মদিন পালন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এবারই প্রথম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে কেক কেটে নিজের জন্মদিন পালনে বিরত থাকেন। তবে কেক না কাটলেও তাঁর জন্মদিনে দলের নেতাকর্মীরা মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করেন। পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত মিলাদ মাহফিলে অংশ নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন ইতোমধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে জন্মদিন পালনের অনুষ্ঠান বাতিল করেছেন। খালেদা জিয়া মনে করেন, দেশের চলমান সামাজিক, রাজনৈতিক সঙ্কট ও বন্যা পরিস্থিতিতে জন্মদিনের আনুষ্ঠানিকতা পালন সমীচীন নয়। তাই আমরা দোয়া মাহফিল করে খালেদা জিয়ার দীর্ঘায়ু কামনা করছি। পাশাপাশি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফিরাত ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সুস্থতা কামনা করেছি। ছোট ছেলে কোকোর আত্মার শান্তি কামনা ও নেতাকর্মীদের জন্যও দোয়া করা হয়েছে। খালেদা জিয়ার জন্মদিন উপলক্ষে দোয়া মাহফিল ও মোনাজাত পরিচালনা করেন জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা নেছারুল হক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, মোঃ শাজাহান, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, আমানউল্লাহ আমান, যুগ্ম-মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন প্রমুখ।
×