ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার সমাধিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ১৬ আগস্ট ২০১৬

টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার সমাধিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

নিজস্ব সংবাদদাতা, গোপালগঞ্জ, ১৫ আগস্ট ॥ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪১তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসে তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার সকাল ১০টা ১০ মিনিটে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার সমাধিবেদিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মধ্য দিয়ে তিনি এ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় সশস্ত্র বাহিনীর একটি সুসজ্জিত দল প্রধানমন্ত্রীকে অনার গার্ড প্রদর্শন করে এবং জাতির পিতার প্রতি রাষ্ট্রীয় সালাম প্রদর্শন করা হয়। বেজে ওঠে বিউগলের করুণ সুর। এরপর বরাবরের মতোই শেখ হাসিনা কাছে ডেকে নেন ছোট বোন শেখ রেহানাকে, সঙ্গে ছিলেন সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের ছেলে জারিফ। ছোট বোন ও নাতিকে সঙ্গে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ফাতেহা পাঠ করেন এবং বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টে নিহতদের আত্মার শান্তি কামনায় দোয়া ও মোনাজাত করেন। এ সময় অশ্রুসজল প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বেদিমূলে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকেন এবং এরপর দলীয় নেতৃবৃন্দ সঙ্গে নিয়ে দলের পক্ষে তিনি জাতির পিতার সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ করেন। এরপর মন্ত্রিপরিষদের পক্ষ থেকে নেতৃবৃন্দ জাতির পিতার সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এ সময় সেখানে আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কাজী জাফরউল্যাহ, জনপ্রশাসনমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ, বাংলাদেশ রেড-ক্রিসেন্ট সোসাইটির সাবেক চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর চাচা শেখ কবির হোসেন, সাবেক চীফ হুইপ আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ, সাবেক মন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি, শেখ হেলাল উদ্দিন এমপি, পাট ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী মীজা আজম, ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী এ্যাডভোকেট তারানা হালিম, মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আরিফ খান জয়, আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম এমপি, আহম্মদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, দফতর সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক শেখ মোহম্মদ আব্দুল্লাহ, শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল, ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এমপি, আব্দুর রহমান এমপি, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী এমপি, উম্মে রাজিয়া কাজল এমপি, রোকসানা ইয়াসমিন ছুটি এমপি, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা এস এম কামাল, সেকেন্দার আলী মোল্লা, বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাস, সাবেক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর ড. খোন্দকার মোঃ নাছিরউদ্দিন, উত্তরা ইউনিভার্সিটির ভিসি ড. ইয়াসমিন আরা লেখা, কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা মাহাবুবুর রহমান হিরণ, এ্যাডভোকেট বিল্লাল হোসেন, শেখ ফজলে ফাহিম, ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম ও বাবুল আক্তার বাবলা, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা কাজী এনায়েত, আনোয়ার হোসেন আনু, মেহেদী হাসান রনি, রাকিব হোসেন প্রমুখ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও তিন বাহিনীর প্রধানগণসহ পুলিশের আইজিপি একেএম শহিদুল হক ও র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহমেদসহ বহু সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। পরে প্রধানমন্ত্রী বেদিমূল থেকে বঙ্গবন্ধু ভবন অভ্যন্তরে চলে গেলে কেন্দ্রীয় যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ শ্রমিক লীগ, কৃষকলীগ, গোপালগঞ্জ জেলা জজশিপ, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসি ও জেলা আইনজীবী সমিতিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, পেশাজীবী ও সামাজিক সংগঠন, বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে পর্যায়ক্রমে বঙ্গবন্ধুর সমাধিবেদিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানানো হয়। টুঙ্গিপাড়ার বিভিন্ন কর্মসূচীতে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি জেলা পরিষদের প্রশাসক চৌধুরী এমদাদুল হক, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম মুনীর (হিটলার), সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ লুৎফর রহমান বাচ্চু, সদর উপজেলার আওয়ামী লীগ সভাপতি ও গোপালগঞ্জ মেয়র কাজী লিয়াকত আলী লেকু, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মিটু, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ আব্দুল হালিম, সাধারণ সম্পাদক আবুল বশার খায়ের, উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী গোলাম মোস্তফা, সাবেক চেয়ারম্যান সোলায়মান বিশ্বাস, পৌর মেয়র শেখ আহম্মদ হোসেন মীর্জা, কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এ্যাডভোকেট সুভাষ চন্দ্র জয়ধর, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি আক্রামুজ্জামান আকরাম, মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান নাছিমা আক্তার রুবেল, মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী নাসিমা খানম, এ্যাডভোকেট শামসুন্নাহার, জেলা যুবলীগ সভাপতি জি এম সাহাবুদ্দিন আজম, সাধারণ সম্পাদক এম বি সাইফ বি, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মোহসিন উদ্দিন সিকদার, তাসবিরুল হুদা বাবু ও নিতিশ রায়, জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আব্দুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রফিক প্রমুখ। এরপর বেলা সাড়ে ১১টায় বঙ্গবন্ধু মাজার কমপ্লেক্স মসজিদে মন্ত্রিপরিষদ ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় মিলাদ ও দোয়া মাহফিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর মন্ত্রিপরিষদ ও দলীয় নেতৃবৃন্দ নিয়ে মিলাদ-মাহফিলে অংশ নেন। পরে দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়া থেকে হেলিকপ্টারযোগে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। এর আগে সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে তিনি ঢাকা থেকে টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছেন। প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে বঙ্গবন্ধুর মাজার কমপ্লেক্সসহ আশপাশ এলাকায় ছিল নিñিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। রাস্তায় রাস্তায় কালো তোরণ ও সুসজ্জিত কালো পতাকা বেষ্টিত চারদিকে ছিল শোকাবহ পরিবেশ। প্রধানমন্ত্রী চলে যাওয়ার পর বঙ্গবন্ধুর মাজার কমপ্লেক্সে সাধারণ মানুষের ঢল নামে। বিভিন্ন স্থান থেকে ছুটে আসা মুজিবপ্রেমী মানুষগুলো ভিড় করেন বঙ্গবন্ধু মাজারে। ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। এদিকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪১তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এদিন দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে টুঙ্গিপাড়ায় শেখ মুজিবুর রহমান সরকারী ডিগ্রী কলেজ মাঠে আয়োজন করা হয় চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবান। জাতীয় শোক দিবস পালন উপলক্ষে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রার্থনা, মিলাদ, আলোচনা সভা, দোয়া-মাহফিল ও কাঙালি ভোজ অনুষ্ঠিত হয়। দিবসটি পালন উপলক্ষে বিকেল ৩টায় সদর উপজেলা পরিষদের হলরুমে যুব উন্নয়ন অধিদফতরের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা ও যুব ঋণের চেক বিতরণ অনুষ্ঠান। যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আরিফ খান জয় ছিলেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি। ইউএনও মোঃ জালাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ লুৎফর রহমান বাচ্চু, ভাইস চেয়ারম্যান তাসবিরুল হুদা বাবু ও জেলা জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান নাছিমা আক্তার রুবেল। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ সায়াদ উদ্দিন। অনুষ্ঠানে ১৫ জনকে সাড়ে ৯ লাখ টাকার যুব-ঋণের চেক বিতরণ করা হয়। এদিন জেলায় মোট ৫৫ জনকে ৩৮ লাখ টাকার যুব-ঋণের চেক বিতরণ করা হয়।
×