ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদে প্রথম বিক্ষোভ কিশোরগঞ্জে

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ১৫ আগস্ট ২০১৬

বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদে প্রথম বিক্ষোভ কিশোরগঞ্জে

মাজহার মান্না, কিশোরগঞ্জ ॥ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার আকস্মিকতায় গোটা জাতি কিংকর্তব্যবিমূঢ় হলেও সেদিন নির্মম ও বর্বরতম এ হত্যাকা-ের প্রথম প্রতিবাদ ওঠে মুক্তিযুদ্ধকালীন অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের জন্মস্থান কিশোরগঞ্জে। তৎকালীন কিশোরগঞ্জের প্রগতিশীল কয়েক সাহসী যুবক সেদিন প্রতিবাদে ফেটে পড়ে মুজিব হত্যার বদলা নিতে। তবে তারা কেউ ওই সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ছিলেন না। বেতারে হত্যাকা-ের খবর প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে কিশোরগঞ্জ শহরের প্রগতিশীল সাহসী যুবক-তরুণ শহরের গৌরাঙ্গবাজারে জেলা ছাত্র ইউনিয়ন অফিসে এসে জড়ো হয়। তারা ছাত্র ইউনিয়ন কার্যালয় থেকে প্রতিবাদ মিছিল বের করে। মিছিলের সেøাগান ছিল ‘মুজিব হত্যার পরিণাম-বাংলা হবে ভিয়েতনাম’, ‘মুজিব হত্যার বদলা নেব বাংলাদেশের মাটিতে’, ‘এক মুজিবের রক্ত থেকে লক্ষ মুজিব জন্ম নিবে’, ‘ডালিমের ঘোষণা মানি না-মানব না’। মিছিল সারা শহরকে আন্দোলিত করে। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে ফের ছাত্র ইউনিয়ন কার্যালয়ে এসে শেষ হয়। পরে পুলিশি ধাওয়ায় ছাত্র-জনতা ছত্রভঙ্গ হয়। সেদিন মুজিব হত্যার প্রথম প্রতিবাদ মিছিলে যারা অংশ নিয়েছিলেন, তারা হলেন-প্রয়াত আমিরুল ইসলাম, সাইদুর রহমান মানিক, ভূপেন্দ্র ভৌমিক দোলন, অশোক সরকার, এনামুল হক ইদ্রিস, আলী আসগর স্বপন, হাবিবুর রহমান মুক্ত, গোলাম হায়দার চৌধুরী, পীযুষ কান্তি সরকার, অলক ভৌমিক, অরুণ কুমার রাউত, প্রয়াত নির্মলেন্দু চক্রবর্তী, প্রয়াত সেকান্দর আলী ভূঞা, হালিম দাদ খান রেজওয়ান, প্রয়াত আব্দুল আহাদ, রফিকউদ্দিন পনির, গোপাল দাস, প্রয়াত আকবর হোসেন খান, নূরুল হোসেন সবুজ, প্রয়াত সৈয়দ লিয়াকত আলী বুলবুলসহ অনেকে। ১৫ আগস্ট হত্যাকা-ের পর রাজপথে মিছিল করা ছিল দুঃসাহসের ব্যাপার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা বসে থাকতে পারেননি। রাজপথে মিছিল করে নিজেরা হয়ে গেছেন ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ। গ্রেফতারি পরোয়ানা, হুলিয়া নিয়ে পালিয়ে বেড়িয়েছেন দিনের পর দিন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর কিশোরগঞ্জে প্রতিবাদ মিছিলটি ছিল তাৎক্ষণিক ও স্বতঃস্ফূর্ত। সেই ঐতিহাসিক প্রতিবাদ মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের অনেকেই আজ বেঁচে নেই।
×