স্টাফ রিপোর্টার ॥ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর কেন্দ্রীয় নাটক বিভাগের প্রযোজনায় আজ রবিবার মঞ্চায়ন হবে যুগল অনুনাটক ‘দাফন’ ও ‘হত্যার শিল্পকলা’। শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার হলে সন্ধ্যা ৭টা থেকে পর্যায়ক্রমে নাটক দুটির প্রদর্শনী হবে। মলয় ভৌমিক রচিত ‘হত্যার শিল্পকলা’ নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন আসলাম অরণ্য। নির্দেশক জানান, ‘হত্যার শিল্পকলা’ মূলত তৈরি হয়েছে বর্তমান সময়ে ধর্মের নামে যেভাবে একদল সন্ত্রাসী একের পর এক নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে সেই প্রেক্ষাপটকে ঘিরে। এসব নরপশুর হিংস্র থাবার হাত থেকে রেহাই পায়নি কোমলমতি শিশু থেকে শুরু করে অশীতিপর বৃদ্ধ পর্যন্ত কেউই। তাদের হত্যাকা-ের শিকার হয়েছে দেশী-বিদেশী নাগরিক, শিক্ষক-ছাত্র-ব্লগার-মসজিদের ইমাম, মন্দিরের পুরোহিত, বৌদ্ধ ভিক্ষু, পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী, মুদি দোকানদার থেকে শুরু করে সমাজের প্রায় সব বয়সের সকল শ্রেণীÑপেশার মানুষ। তাদের করাল থাবা ধীরে ধীরে পুরো বাংলাদেশকে গ্রাস করে নেয়ার আস্ফালন দেখাচ্ছে। তারা যে রাজনৈতিক বা মতাদর্শ বিশ্বাস করে তার সঙ্গেই যেন জুড়ে দেয়া আছে হত্যার নীলনক্সা। এসব দিকভ্রান্ত মানুষ অন্ধ বিশ্বাসে নিজেই একের পর এক রচনা করতে থাকে হত্যার চিত্রনাট্য। ধর্ম কিংবা বিপ্লবের নামে এসব মানবঘাতী কর্মকা- বন্ধ করে মানুষকে ভালবাসায় বেঁচে থাকার রসদ খুঁজে নেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে এই নাটকে। ‘দাফন’ নাটকটি রচনা করেছেন হরিপদ দত্ত এবং এর নাট্যরূপ ও নির্দেশনা দিয়েছেন আইনুল ইসলাম অপু। তিনি জানান, ‘দাফন’ নাটকটির গল্প আবর্তিত হয়েছে খরায় পোড়া শস্যভূমির এক নিভৃত ক্লান্ত গ্রামে অনাকাক্সিক্ষত একটি মেয়ের লাশের সংবাদের মাধ্যমে একদল মানুষের ঠুনকো অনুভূতিতে ব্যাকুলতা তৈরি করাকে ঘিরে। মেয়েটির অস্বাভাবিক মৃত্যুকে গ্রামের অতি স্বাভাবিক এবং দোজখ গমনে শঙ্কিত মানুষের কাছে কৌশলে কিংবা ক্ষমতার আচ্ছাদনে তুলে দেয়া হয় পাপপূণ্য পরিমাপক যন্ত্রে। যার ফলে, বাবা, স্নেহময়ী মা, প্রতিবেশীসহ যাদের নিবিড় মায়ার ঘেরাটোপে মেয়েটি কৈশোর পেরিয়ে যৌবনে পা ফেলেছিল, তাদের উপস্থিতিতে মুহূর্তেই সে তার পরিচয় হারিয়ে ফেলতে থাকে। একপর্যায়ে হারিয়ে ফেলে শেষকৃত্য পাওয়ার সম্ভাবনাটুকুও। আর, তাই মেয়ের জানাজায় কিছু মানুষকে শরিক করতে চাওয়ার জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে বৃদ্ধ বাবার করুণ আর্তনাদও বৃথা যায়।
