ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নিষিদ্ধ ৩৪ কোম্পানি

প্রকাশিত: ০৬:৪৫, ১৩ আগস্ট ২০১৬

নিষিদ্ধ ৩৪ কোম্পানি

মানসম্মত ওষুধ উৎপাদনে ব্যর্থ ৩৪ কোম্পানির কিছু ওষুধ নিষিদ্ধ এবং বাজার থেকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। একটি বেসরকারী সংস্থার আবেদনের প্রেক্ষিতে সম্প্রতি এই আদেশ দেয়া হয়। ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিহ্নিত করতে ২০১৪ সালের ২০ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। দেশের ৮৪টি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সরেজমিন পরিদর্শন শেষে এই বিশেষজ্ঞ তদন্ত কমিটি একটি প্রতিবেদন চলতি বছর ১ ফেব্রুয়ারির সংসদীয় কমিটির কাছে জমা দেয়। এতে মানসম্পন্ন ওষুধ উৎপাদনে চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ হওয়া ২০টি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল করার সুপারিশ করা হয়। এছাড়া ১৪টি কোম্পানির সব ধরনের এন্টিবায়োটিক ওষুধ উৎপাদনের অনুমতি বাতিলের সুপারিশ করা হয়। কিন্তু সেই সুপারিশ বাস্তবায়ন না হওয়ায় এ ব্যাপারে হাইকোর্টে সংস্থাটির পক্ষ থেকে রিট আবেদন করা হয়। ওষুধ একটি জরুরী পণ্য। রোগাক্রান্ত মানুষের আরোগ্যের জন্য অতি প্রয়োজনীয় হচ্ছে ওষুধ। মানুষকে সুস্থ করতে পারে মানসম্মত ওষুধ। অন্যদিকে মানসম্মত না হলে সেই ওষুধ মানুষের স্বাস্থ্যহানি এমনকি জীবননাশেরও কারণ হতে পারে। কোন্ ওষুধ মানসম্মত, কোন্টা নয়, সেটা বোঝা সাধারণ মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। সেজন্য বিশেষজ্ঞদের তদারকি দরকার। যে কোম্পানিগুলোর ওষুধ মানসম্মত নয় বলে প্রমাণিত হয়েছে তাদের উৎপাদিত ওষুধ এখনও বাজারে রয়ে গেছে, দেশের নানা স্থানে নানা ফার্মেসিতে। এগুলো যাতে কোনভাবেই মানুষের হাতে না পড়ে অর্থাৎ কেউ যাতে এগুলো বিক্রি করতে না পারে, সেজন্য এখনই উদ্যোগ দরকার। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সে উদ্যোগ নিতে পারে। আমাদের গ্রামগঞ্জে, এমনকি এই রাজধানীতেও বহু মানুষ ওষুধের দোকানে গিয়ে নানা সমস্যার জন্য ওষুধ চান। এদের কেউ কেউ নিজেরাই ওষুধের নাম বলে সেটা কিনতে চান বা নিজের সমস্যার কথা বলে দোকানে বিক্রেতার কাছ থেকে ওষুধ চান। অনেক বিক্রেতাই তাদের চাহিদা মতো ওষুধ বিক্রি করে থাকে। সাধারণ মানুষ নিশ্চিত মনে সে ওষুধ খান। শুধু সাধারণ ওষুধই নয়, অনেকে অনেক ধরনের এন্টিবায়োটিকও এভাবে কিনে খেয়ে থাকেন। এভাবে বহু ওষুধ, ভাল হোক বা ভেজালই হোক ডাক্তারের কথা বা পরামর্শ ছাড়াই বহু লোক খেয়ে থাকেন। সাধারণের সরলতা তথা অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে বহু দোকানে বিক্রি হয় মানহীন ওষুধ, ভেজাল ওষুধ। যে ৩৪টি কোম্পানির কিছু ওষুধ নিষিদ্ধ করা হয়েছে, সে ওষুধ বাজারে থাকলে সেগুলো যাতে কেউ বিক্রি করতে না পারে বা কেউ না কেনে, সে ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টি করা জরুরী। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে সতর্কতামূলক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে পারে। নিষিদ্ধ ওষুধের তালিকা যাতে ফার্মেসিগুলোয় টাঙ্গানো হয় সে ব্যাপারেও উদ্যোগ নিতে পারে। মোটকথা, এসব মানহীন ওষুধ বিক্রি অবিলম্বে বন্ধ এবং ক্রেতাদের সতর্ক করার ব্যবস্থা নিতে হবে। দেশের ওষুধ বিদেশে রফতানি হচ্ছে। এই আনন্দ সংবাদের পাশাপাশি এসব মানহীন ও ভেজাল ওষুধ সমাজে সৃষ্টি করছে দুশ্চিন্তা ও উদ্বেগ। কঠোর হস্তে এসব বন্ধ করা দরকার।
×